রাষ্ট্রসঙ্ঘ, ১৭ আগস্ট (পিটিআই): সৌজন্যের অনন্য নজির গড়লেন রাষ্ট্রসঙ্ঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি সৈয়দ আকবরউদ্দিন। সাংবাদিক সম্মেলনে এসে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে করমর্দন তো করলেনই, তাঁদের যাবতীয় প্রশ্নের উত্তরও দিলেন হাসিমুখে। উল্টোদিকে, রাষ্ট্রসঙ্ঘে নিযুক্ত পাকিস্তান এবং চীনের দুই রাষ্ট্রদূত সেসবের ধারই ধারলেন না। নিজেদের বক্তব্যটুকু জানিয়ে তড়িঘড়ি সাংবাদিক সম্মেলন ছেড়ে বেরিয়ে যান তাঁরা। শুক্রবার চীনের অনুরোধে কাশ্মীর নিয়ে আলোচনার জন্য রাজি হয়েছিল রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ। কিন্তু, মাত্র একঘণ্টার ওই আলোচনার শেষে রাষ্ট্রসঙ্ঘ সাফ জানিয়ে দেয়, এটা পুরোপুরি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তাই এতে নাক গলাবে না রাষ্ট্রসঙ্ঘ। এরপরই এক এক করে সাংবাদিকদের সামনে উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল সংশ্লিষ্ট দেশগুলির প্রতিনিধিদের। সেই মতো চীনের প্রতিনিধি ঝাং জুন এবং পাকিস্তানের প্রতিনিধি মালিহা লোধি সাংবাদিকদের সামনে এসে নিজেদের বক্তব্যটুকু জানিয়েই চলে যান। সাংবাদিকদের কোনও প্রশ্নেরই জবাব তাঁরা দেননি। এরপর পালা আসে ভারতের রাষ্ট্রদূত সৈয়দ আকবরউদ্দিনের। কাশ্মীর এবং ৩৭০ ধারা নিয়ে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করার দায়িত্ব ছিল তাঁর উপর। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সেই কাজ ভালোই করেন আকবরউদ্দিন। তবে, চীন এবং পাকিস্তানের প্রতিনিধিদের রাস্তায় না হেঁটে, সেখানে আরও কিছুক্ষণ দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের কারও যদি কোনও কিছু জিজ্ঞাস্য থাকে, আমি তার উত্তর দিতে তৈরি।’ তিনি মোট পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর দেবেন বলেও জানান আকবরুদ্দিন। এরপরই মজার ছলে তিনি বলেন, ‘আমার আগের দুই বক্তার থেকে পাঁচগুণ বেশি প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি।’
পাঁচটি প্রশ্নের প্রথম তিনটি প্রশ্নই করেছিলেন পাক সাংবাদিকরা। এক বর্ষীয়ান পাক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ভারত কবে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনায় বসবে। উত্তরে ভারতের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আলোচনা চালানোর একটি সুস্থ কূটনৈতিক প্রক্রিয়া রয়েছে। সন্ত্রাস চালিয়ে কাউকে আলোচনায় বাধ্য করা যায় না। কোনও গণতান্ত্রিক দেশই এটা মেনে নেবে না।’ এরপর আরও এক পাক সাংবাদিক একই প্রশ্ন করলে আকবরউদ্দিন বলেন, ‘আসুন তাহলে আমি এখনই আপনাদের তিনজনের কাছে গিয়ে করমর্দন করছি।’ কথা শেষ করেই তিনি নেমে গিয়ে তিন পাক সাংবাদিকের সঙ্গে হাসতে হাসতে করমর্দন করেন। গোটা ঘটনাটিকে হাততালি দিয়ে স্বাগত জানান উপস্থিত সাংবাদিকরা। শেষে আকবরউদ্দিন বলেন, ‘সিমলা চুক্তির প্রতি দায়বদ্ধতা প্রকাশ করে আমরা আগেই বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। এবার পাকিস্তানের তরফ থেকে জবাবের অপেক্ষা করতে হবে আমাদের।’