গুরুজনের চিকিৎসায় বহু ব্যয়। ক্রোধ দমন করা উচিত। নানাভাবে অর্থ পাওয়ার সুযোগ। সহকর্মীদের সঙ্গে ঝগড়ায় ... বিশদ
শনিবার রাতে নিজের বাড়ির কাছে সরস্বতীর পুজোর অনুষ্ঠান চলাকালীন খুন হন কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক তথা জেলা যুব সভাপতি সত্যজিৎ বিশ্বাস। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে ওয়ান শটার দিয়ে তাঁকে খুন করা হয়। ঘটনার পর প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিজিৎ পুণ্ডারিকে পালাতে দেখেন। বিধায়কের মৃত্যুর খবর চাউর হতেই তার বাড়িতে চড়াও হয়ে তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা ভাঙচুর চালায়। একাংশে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
অভিজিৎ বগুলা কলেজের প্রাক্তন টিএমসিপি নেতা। কৃষ্ণনগরে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে ২০১৭ সালে সফ্টঅয়্যার অ্যাপ্লিকেশন কোর্স করে সে। গানবাজনার সঙ্গেও যুক্ত ছিল। ভালো গিটার বাজাত। গিটার শেখার স্বরলিপিগুলি তার ঘরের দেওয়ালে টাঙানো। বাইরে সে সঙ্গীতানুষ্ঠানও করেছে।
বগুলা কলেজে ছাত্রনেতা থাকাকালীন ভর্তিতে টাকা তোলা নিয়ে বিধায়কের সঙ্গে অভিজিতের দ্বন্দ্ব বাধে। একাধিকবার বিধায়ক প্রকাশ্যে অভিজিৎকে চড় থাপ্পড় মেরেছেন। ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের কাউন্টিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছে সে। সে কাগজও তার বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে। পরে কৃষ্ণনগর হাঁসখালি নতুন নির্মীয়মাণ রাস্তার মাটি বিক্রি নিয়ে বিধায়কের সঙ্গে তার ঝামেলা বাধে।
জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালের গোড়ার দিকে সল্টলেকে ডেরা বেঁধেছিল সে। তিন মাস ছিল সেখানে। বাড়িতে সে জানিয়েছিল, একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি পেয়েছে। মাইনে ১৩ হাজার টাকা। তবে তিন মাস পর সে বাড়িতে চলে আসে। বাড়িতে এসে কোনও কাজ করত না। কলকাতায় ফিরেও যায়নি। প্রতিবেশীদের সঙ্গেও খুব একটা মিশত না। অভিজিতের ভাই প্রসেনজিৎ পুণ্ডারি বলেন, আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা থাকি। দাদার সঙ্গে থাকতাম না। দাদা তিন মাস সল্টলেকে থেকেছে। সেখানে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করত বলেছিল। তারপর বাড়িতে চলে আসে। আর কলকাতায় যায়নি। প্রসেনজিতের দাবি, দাদা আর কোনও দলের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। বিধায়কের সঙ্গেই ঘোরাফেরা করত। বিধায়কও আমাদের বাড়িতে আসতেন।
ফুলবাড়ির মজিদপুর পাড়ায় বাড়ি অভিজিৎ পুণ্ডারির। তার ডাক নাম ‘কালো জিরে’। গায়ের রঙ কালো হওয়ায় তার এই ডাক নাম। কালো জিরে যে এমন ঘটনা ঘটাতে পারে, হতবাক পাড়া প্রতিবেশীরা। মজিদপুর পাড়ার বাসিন্দারা বলেন, বাড়ি থেকে খুব একটা বের হতো না কালো জিরে। বের হলেও নিজে থেকে কারও সঙ্গে কথাবার্তা বলত না। কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে উত্তর দিত। ওর এমন কাণ্ডে আমাদের পাড়ার মুখ পুড়ল।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেন, সত্যজিতের খুনের ঘটনায় বিজেপি জড়িত। তা আরও দিন দিন স্পষ্ট হয়ে উঠছে। আর এই ষড়যন্ত্রে রয়েছে বিজেপি নেতা মুকুল রায়। অভিজিৎ বিজেপি করত। যদিও বিজেপির নদীয়া(দক্ষিণ) জেলা সভাপতি জগন্নাথ সরকার বলেন, অভিজিৎ পুণ্ডারি কোনও দিন আমাদের দলে যোগ দেয়নি। দলীয় দ্বন্দ্ব চাপা দিতে তৃণমূল মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।