পড়শির ঈর্ষায় অযথা হয়রানি। সন্তানের বিদ্যা নিয়ে চিন্তা। মামলা-মোকদ্দমা এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেমে বাধা।প্রতিকার: একটি ... বিশদ
যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের মালদহ জেলা কার্যকরী সভাধিপতি দুলাল সরকার (বাবলা) বলেন, তৃণমূলের কোনও গোষ্ঠী নেই। উত্তর মালদহে দল খুবই সংগঠিত। সেখানকার ব্লকগুলিতেও কোনও কোন্দল নেই। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা বা ভুল বোঝাবুঝির ঘটেছে। সেগুলি দলের মধ্যে আলোচনা করে মিটিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং হবে। হরিশ্চন্দ্রপুরের হুমকিকে কেন্দ্র করে ডামাডোলও একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। দল বিষয়টি দেখছে। এসব লোকসভায় কোনও প্রভাব পড়বে না। হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের জেলা পরিষদ সদস্যাকে সাম্প্রতিক খুনের হুমকি দেওয়ার ঘটনাতেও মূলত ব্লক সভাপতি তাজমুল হোসেন ও আত্মীয়দের নাম উঠে এসেছে। ব্লকের বিভিন্ন অংশ থেকে ওই গোষ্ঠীকে কেন্দ্র করেই অধিকাংশ বিবাদ লেগে থাকে বলে জানা গিয়েছে। তাজমুল হোসেন বলেন, আমার কোনও গোষ্ঠী নেই। ব্লকেও কোনও গোষ্ঠীবিবাদ নেই। সাম্প্রতিক খুনের হুমকি’র সঙ্গে আমি, আমার আত্মীয়দের কেউ জড়িত নয়। একটি সুগভীর চক্রান্ত চলছে। যাঁকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে সেই জেলা পরিষদ সদস্য মমতাজ বেগম বলেন, মমতাজ বেগম বলেন, দলের ভালোর জন্য শুভেন্দুবাবুর কাছে কিছু অভিযোগ করেছিলাম। তার পরিণতি এটা হবে ভাবিনি। শুক্রবার দুপুরে কয়েকজন যুবক আমাকে কাজু, কিশমিস সহ কিছু ফল ও স্বাস্থ্যকর পানীয় দিয়ে যায়। সঙ্গে একটি চিঠি দিয়ে জানায় এই খাবারগুলিই আমার শেষ খাওয়া। থানায় অভিযোগ করেছি। ওই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তারা সামিউদ্দিন রহমান নামে তাজমুলগোষ্ঠীর এক দাপুটে নেতার ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ। সামিউদ্দিনসাহেব অবশ্য বলেন, ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে।
গত কয়েকবছর ধরেই মালদহের উত্তর মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে গাজোল হয়ে হবিবপুর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় তৃণমূলের অন্দরে দ্বন্দ্বপ্রবল হয়ে উঠেছে। উত্তর মালদহ লোকসভার এই এলাকার মধ্যে সবচেয়ে সংকটময় এলাকায় হরিশ্চন্দ্রপুর-১। যেখানে দু’বছর আগে এক কর্মী এই কোন্দলের জেরে খুন হয়ে গিয়েছিলেন। এরপরেই সেখানে গোষ্ঠীবিবাদ থামেনি তো বটেই উলটে বেড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। সম্প্রতি মমতাজ বেগম নামে এক জেলা পরিষদ সদস্যা ও তাঁর স্বামী তথা এক শ্রমিক নেতাকে খুনের হুমকি দেওয়ার পর ওই ব্লকের বিবাদ নিয়ে জেলা নেতৃত্ব পর্যন্ত নড়েচড়ে বসেছে। ইতিমধ্যে পুলিস ওই জেলা পরিষদ সদস্যার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে। হরিশ্চন্দ্রপুরের সংগঠনের অন্দরমহল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার দলের পঞ্চায়েত সদস্যদের নিয়ে শুভেন্দু অধিকারির বৈঠকে হরিশ্চন্দ্রপুরের জেলা পরিষদ সদস্যা মমতাজ বেগম স্থানীয় কয়েকজন নেতার নামে অভিযোগ করেন। তারই জেরে শুক্রবার দুপুরে তাঁর বাড়িতে দলেরই কয়েকজন ছাত্র-যুব কর্মী কাজু, কিশমিস, একটি স্বাস্থ্যকর পানীয়ের শিশি, ফলমূল দিয়ে আসে। ওই নেত্রী কি কারণে এটা করা হচ্ছে জানতে চাইলে সরবরাহকারীরা বলে, যে শেষবার খেয়ে নেওয়ার জন্যে এসব দেওয়া হচ্ছে। তারপরেই একটি হুমকি চিঠি তাঁর স্বামী তথা শ্রমিক নেতা আমিনুল হকের জন্যে ধরান হয়। এই ঘটনায় দলের অন্দরে তো বটেই হুমকি’র পদ্ধতি নিয়ে এলাকাতেও হৈচৈ পড়ে গিয়েছে। খুনোখুনি বাদ দিলে গোষ্ঠীকোন্দলের এধরনের ঘটনা অবশ্য ওই ব্লকেও শুধু নয়, সম্প্রতি চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুর-২, হবিবপুরেও দেখা গিয়েছে। ফলত, লোকসভার আগে উত্তর মালদহের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৃণমূলের অন্দরে উদ্বেগ তৈরি করেছে।