উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য। ব্যবসায় গোলযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যে অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
সেই কবে কিশোরবয়সে পরিচয় হয়েছিল আলিবাবা, মর্জিনা, আবদাল্লা প্রভৃতি চরিত্রগুলোর সঙ্গে। গল্পের সঙ্গে সঙ্গে নিপুণ রেখায় আঁকা ছবিগুলো ছোট্ট মনকে টেনে নিয়ে যেত পারস্য নগরীর অলিগলিতে—সিরাজি, সাকি আর সুন্দরীদের টানে মন চলে যেত কোন অচিন দেশে। কিন্তু উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের এ কোন মর্জিনাকে দেখাচ্ছেন! পারস্য কোথায়! এ তো আমার আপনার শহর কলকাতা!অষ্টাদশ শতকের কলকাতা। যেখানে বিলাসী বাবুদের নতুন আমোদের নাম নাটক। সে সময়ে যখন পুরুষরাই মহিলা চরিত্রে অভিনয় করত, এ নাটকের বাবু ঠিক করলেন মহিলা চরিত্রে মহিলারাই অভিনয় করবে। অভিনেত্রী এল নিষিদ্ধ পল্লি থেকে—পাঁচী, ভামিনী, চাঁপা, আতররা। এঁদের মধ্যে পাঁচীই সেরা। সেই করবে মর্জিনা। কিন্তু পাঁচী প্রতিমুহূর্তেই পালটে দেয় নাটকের চলন। বদলে দেয় গল্পের ধারা। মূল কাহিনীতে যেখানে কাসিমরা বরাবর আলিবাবাদের দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করে, সেখানে পাঁচীর ইচ্ছায় আলিবাবার স্ত্রী হত্যা করে কাসিমের স্ত্রীকে। নাটকে সত্যি সত্যি এক হত্যা হয়।
দ্বিতীয়ার্ধে নাটক চলে যায় আধুনিক যুগে যেখানে এক কর্পোরেট মালিক ওয়েব সিরিজ বানানোর জন্য বেছে নেয় মর্জিনা-আবদাল্লার গল্পকে। কিন্তু দর্শকের কাছে ওয়েব সিরিজের আকর্ষণ বাড়ানোর জন্য ঠিক করে সত্যি সত্যিই হত্যা করা হবে সিরিজের কোনও এক অভিনেতাকে। লোকে রিয়েলিটি শো-এর মতো দেখবে হত্যা। এক জনের পর আর একজন, তারপর আরও একজন, তারপর আরও এক। কিন্তু এর শেষ কোথায়? কর্পোরেট বস বলে কেউ না থাকলে আমিই বলি হব! পণ্যসভ্যতার হাতে বলি হয় শিল্প।
মর্জিনার আড়ালে এক অদ্ভুত গল্প বুনেছেন উজ্জ্বল—শিল্পকে পণ্য করে তোলার গল্প।
পাঁচীর ভূমিকায় অভিনয় করছেন সঞ্জিতা। তিনি বললেন, উজ্জ্বলদা এ নাটক ভাঙতে ভাঙতে এগিয়েছেন। মহড়া চলতে চলতে স্ক্রিপ্ট বদলেছেন মূহর্মূহ। আমরাও তাল মিলিয়ে চলেছি। সঞ্জিতা ছাড়াও এ নাটকে অভিনয় করছেন সুমিত দত্ত, রাজীব বর্ধন, দেবস্মিতা ঘোষ, পৌলমী বন্দ্যোপাধ্যায়, মিঠু চক্রবর্তী, তুহিনা বসু সেন ও আরও অনেকে। আবহ দিশারীর, আলো সুদীপ স্যান্যালের। নাটককার ও নাট্যকার উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। মুখ্য উপদেষ্টা ব্রাত্য বসু। নাটকটি প্রযোজনা করেছে বালাজি রঙ্গালয়, প্রয়োগ উদ্যোগে বালাজি দেব। আগামী ৩১ জানুয়ারি তপন থিয়েটারে নাটকটির প্রথম মঞ্চায়ন।