উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য। ব্যবসায় গোলযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যে অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
মাল ব্লকের একটি চা বাগানে দুই বোন এবং এক ভাইয়ের সংসার। তাদের মা আগেই মারা গিয়েছেন। বাবা তাদের ছেড়ে কেরলে চলে গিয়েছেন। সে প্রায় ৮ বছর আগের ঘটনা। এখন তাদের বাবা ছেলেমেয়েদের আর খোঁজখবর নেন না। আর এই সুযোগকেই কাজে লাগিয়ে সিকিমের লাচুংয়ের এক বাসিন্দা তাদের নিয়ে গিয়ে পড়াশুনা করিয়ে শিক্ষিত করার কথা বলে। কিন্তু তাদের সে নিজেদের আত্মীয়দের বাড়িতে কাজে লাগায়। তাদেরকে জোর করে বাড়ির সমস্ত কাজকর্ম করানো হয়। না করলে তাদের মারধর সহ না খাইয়ে রাখা হতো। এমনকী মেয়েগুলিকে নিজেদের পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হতো না। এর মাঝেই বড় বোন মুক্তি পেতে এক চালকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। সেই চালকও তাঁকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিনের পর দিন সহবাস করে। এর জেরে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এই অবস্থায় ছোট বোন সবকিছু জানতে পেরে পালিয়ে যায়। এদিকে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা করার পর তাদের ঘটনা জানতে পেরে জলপাইগুড়ি জেলা চাইল্ড লাইনের সঙ্গে যোগাযোগ করে। জলপাইগুড়ি চাইল্ড লাইন সিকিমের চাইল্ড লাইনের সঙ্গে কথা বলে। সিকিমের চাইল্ড লাইন সেই দুই বোন এক ভাইকে খুঁজে বের করে উদ্ধার করে পরিবারের হাতে তুলে দেয়। সেই চালক বড় বোনটিকে বিয়ে না করায় শিশু কোলে নিয়ে বাড়ি ফেরে। একই ভাবে আরেকটি মেয়ে সিকিমে পাচার হয়ে গিয়েছিল। তাকেও সিকিমের চাইল্ড লাইন উদ্ধার করে পরিবারের হাতে তুলে দেয়।
বানারহাটের এক পরিবেশ প্রেমী সংস্থার কর্ণধার ভিক্টর বসু বলেন, গোটা ডুয়ার্সের চা বলয়ে একই অবস্থা। আর্থিক দূরবস্থার সুযোগে তাদের বেশি অর্থ উপার্জনের লোভ দেখিয়ে বিভিন্ন রাজ্যে এমনকী বিদেশেও পাচার করে দেওয়া হচ্ছে। যারা ফিরে আসতে পেরেছে তাদের কাছ থেকে মর্মান্তিক ঘটনা শোনা যায়। অনেকের তো বছরের পর বছর খোঁজই নেই। আমরা এনিয়ে চা বাগানে সচেতনতা মূলক শিবির করেছি। কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হয়নি। আরেকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমরা চা বাগানগুলিতে বারবার করে বলছি, আপনারা বাইরে কাজ করতে যেতে চান যান। কিন্তু পার্শ্ববর্তী থানাকে সমস্ত তথ্য দিয়ে এবং যেখানে যাবেন সেখানকার তথ্য জেনে তারপর যান। তাহলে কেউ বিপদে পড়বেন না।