গুরুজনের চিকিৎসায় বহু ব্যয়। ক্রোধ দমন করা উচিত। নানাভাবে অর্থ পাওয়ার সুযোগ। সহকর্মীদের সঙ্গে ঝগড়ায় ... বিশদ
শনিবার রাতে নিজের বাড়ির কাছে সরস্বতী পুজোর অনুষ্ঠান চলাকালীন খুন হন কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক তথা জেলা যুব সভাপতি সত্যজিৎ বিশ্বাস। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে ওয়ান শটার দিয়ে তাঁকে খুন করা হয়। ঘটনার পর প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিজিৎ পুণ্ডারীকে পালাতে দেখেন। বিধায়কের মৃত্যুর খবর চাউর হতেই তার বাড়িতে চড়াও হয়ে তৃণমূল কর্মী ও সমর্থকরা ভাঙচুর চালায়। একাংশে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। রাতেই পুলিস ফুলবাড়ির মজিদপুর পাড়ার সুজিত মণ্ডল ও কার্তিক মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন হাঁসখালি থানায় এফআইআর করেন বিধায়কের ছায়াসঙ্গী মিলন সাহা। অভিযোগপত্রে ধৃত দুই যুবক ছাড়াও অভিজিৎ পুণ্ডারী, কালীপদ মণ্ডল ও বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের নাম রয়েছে। ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে সিআইডি।
বিধায়ক খুনের ঘটনায় তদন্তে নেমে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর পাচ্ছেন না তদন্তকারীরা। প্রথমত, বিধায়কের দেহরক্ষী ছুটিতে, সে খবর কে পৌঁছে দিয়েছিল আততায়ীদের? দ্বিতীয়ত, সরস্বতী পুজোর অনুষ্ঠানে বিধায়ক থাকবেন, তা কে জানিয়েছিল? তৃতীয়ত, বিধায়কের ডান চোখের নীচে ওয়ান শটার দিয়ে গুলি করা হয়। এই ঘটনা কেউ দেখল না? বিধায়কের আশপাশে অনেকেই চেয়ারে বসে ছিলেন। কেউ আবার দাঁড়িয়ে ছিলেন। চতুর্থত, অভিজিৎ পুণ্ডারীকে প্রত্যক্ষদর্শীরা পালাতে দেখেন। কয়েকজন তাকে তাড়া করেন। যাঁরা তাড়া করেছিলেন, তাঁদের দাবি, রাস্তায় একটি লরি আসায় পালিয়ে যায় অভিজিৎ। একটি লরি পার হতে সময় লাগবে খুব বেশি হলে ১৫সেকেন্ড। তারপরে কীভাবে পালিয়ে গেল মূল অভিযুক্ত? পঞ্চমত, অভিজিৎ পুণ্ডারীর সঙ্গে বিধায়কের বিবাদ বেধেছিল। ঘটনার দিন অনুষ্ঠানস্থলে গিয়েছিল অভিজিৎ। তবুও বিধায়ককে কেউ সতর্ক করল না কেন?
এসব প্রশ্নের উত্তর পাচ্ছেন না তদন্তকারীরা। অনুষ্ঠান চলাকালীন ১০থেকে ১২বার লোডশেডিং হয়। তাহলে কি ওই দিন বিধায়ককে ১০-১২বার টার্গেট করা হয়েছিল? ঘনঘন লোডশেডিং হওয়ার পরেও সতর্ক করা হল না? নাকি বিধায়কেরই ঘনিষ্ঠ কেউ জড়িত থাকতে পারে? বিধায়ককে খুন করা হয় ওয়ান শটার দিয়ে। পুলিসের এক কর্তা বলেন, ওয়ান শটার চালাতে প্রশিক্ষণ লাগে। দক্ষ না হলে তা চালানো যায় না। বিধায়ক খুনে কি তাহলে পাকা খুনি কেউ ছিল? তদন্তকারীরা বলছেন, এ সকল প্রশ্নের উত্তর মিলবে মূল অভিযুক্ত অভিজিৎ পুণ্ডারী গ্রেপ্তার হওয়ার পর। তাকে নাগাল পেতে মরিয়া সিআইডি। বাড়িতে মোবাইল রেখে ফেরার সে। গত বছরের গোড়ার দিকে অভিজিৎ কলকাতায় তিন মাস ডেরা বেঁধেছিল। কলকাতায় থাকাকালীন বিধায়ককে খুনের ছক কষেছিল বলে তদন্তকারীরা সন্দেহ করছেন।