পড়শির ঈর্ষায় অযথা হয়রানি। সন্তানের বিদ্যা নিয়ে চিন্তা। মামলা-মোকদ্দমা এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেমে বাধা।প্রতিকার: একটি ... বিশদ
মৃত টোটো চালকের নাম বাপ্পা মণ্ডল(৩২)। তাঁর বাড়ি কৃষ্ণনগর শহর সংলগ্ন দুর্গাপুরে। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকাল ৯টা নাগাদ রেলের গোডাউন থেকে মাল বোঝাই একটি লরি শহরের রাস্তা ধরে আসছিল। নেদেরপাড়া মোড়ের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা টোটোকে ধাক্কা মারে লরিটি। এরপর লরির ড্রাইভারকে ধরতে টোটো চালক দৌড়তে থাকে। স্টেট ব্যাংকের কাছে টোটো চালক লরির ড্রাইভারের জানলায় উঠে পাকড়াও করতে যায়। সেই সময় অসাবধানতাবশত টোটো চালক পড়ে যান রাস্তায়। তারপরই লরির পিছনের চাকায় পিষ্ট হন তিনি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, টোটো চালক দৌড়তে দৌড়তে চলন্ত লরিতে ওঠেন। চালককে মারতে যান। এরপরেই পড়ে যান। তখনই তাঁর মাথার উপর দিয়ে লরির চাকা চলে যায়।
দুর্ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। তবে দ্রুত কোতোয়ালি থানার পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছানোয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। অবরোধে যায়নি অন্যান্য টোটো চালকরা। পুলিস মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে পাঠায়। ঘাতক লরিটি আটক করে পুলিস থানায় নিয়ে আসে। তবে ঘাতক লরির চালক ও খালাসি ততক্ষণে পলাতক। এরপর অন্যান্য টোটো চালকরা থানার সামনে অবস্থান করেন। তাঁদের দাবি, লরির চালক ও খালাসিকে গ্রেপ্তার করতে হবে। মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। পুলিসের আশ্বাসে অবস্থান তুলে নেন টোটো চালকরা। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, লরি ইউনিয়নের তরফে মৃতের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে বলে ইউনিয়নের নেতারা জানিয়েছেন।
টোটো ইউনিয়নের নেতাদের অভিযোগ, এই শহরে লরি বেপরোয়াভাবে চলে। রেলের গোডাউন থেকে মালবোঝাই লরিগুলি খালাসিরা চালায়। এর জেরে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটে। লরি বেপরোয়া চলার পাশাপাশি টোটোরও দৌরাত্ম্য রয়েছে শহরে। লরি মালিকদের অভিযোগ, এই শহরের প্রচুর সংখ্যক টোটো চলে। শহরের বাইরে গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে প্রতিদিন শয়ে শয়ে টোটো আসে। হাজার হাজার টোটো চলার ফলে শহরে তীব্র যানজট তৈরি হয়। টোটো চালকরা শহরের রাস্তাকে নিজেদের জমিদারি মনে করেন। কোনও ট্রাফিক আইন মানেন না। যত্রতত্র টোটো দাঁড় করিয়ে রাখে। কোথাও কোনও সামান্য ঘটনা ঘটলে টোটো চালকরা দাদাগিরি দেখায় বলেও অভিযোগ। এদিন দাদাগিরি দেখাতে গিয়েই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
তৃণমূল প্রভাবিত কৃষ্ণনগর টোটো ড্রাইভার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক তপন কুণ্ডু বলেন, লরির ধাক্কায় টোটোটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তাই লরির চালককে ধরতে গিয়েছিল টোটো চালক। তারপরই দুর্ঘটনাটি ঘটে। মৃতের স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও ঘাতক লরির চালককে গ্রেপ্তারের দাবিতে আমরা অবস্থান করেছি থানার সামনে। পুলিসের মধ্যস্থতায় মৃতের পরিবার ক্ষতিপূরণ ২৫ হাজার টাকা ও ইন্সিওরেন্স বাবদ টাকা পাবে। আমরা ওই পরিবারের পাশে আছি। তপনবাবু বলেন, আগামী ২৮ জানুয়ারি পুলিসের ট্রাফিক ওসিকে আমরা একাধিক দাবিতে একটি ডেপুটেশন দেব। দাবিগুলির মধ্যে অন্যতম, পঞ্চায়েত এলাকার টোটো শহরে ঢোকা বন্ধ করতে হবে। এর জেরে শহরে যানজট হচ্ছে। টোটো চালকরা যাতে ট্রাফিক নিয়ম মেনে চালায়, তার একটা প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে সংগঠনের তরফে।