যে কোনও ব্যবসার বৃদ্ধি ও অর্থকড়ি আয় বৃদ্ধি। ধর্মাচরণে মনযোগ বৃদ্ধি। বন্ধুর শত্রুতায় ক্ষতি। ... বিশদ
মাধ্যমিকে শম্পা পেয়েছিলেন ৬০২ নম্বর। এবার উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৮১ নম্বর পেয়ে স্কুলের মধ্যে প্রথম হয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। তবে ছয় নম্বরের জন্য মেধাতালিকায় স্থান না পাওয়ার আক্ষেপ রয়েছে তাঁর। তাঁর বিষয় ভিত্তিক ফলাফল হল, বাংলা ও ইতিহাসে ৯৫ করে, ইংরেজি ও এডুকেশনে ৯৬ করে, ফিলোজফিতে ৯৯। তিনি বলেন, আর পাঁচজন পড়ুয়ার মতো তাঁর কোনও গৃহশিক্ষক ছিলেন না। স্কুলে স্বেচ্ছায় শ্রম দেওয়া ইংরেজির শিক্ষিকা বর্ষা মণ্ডল ও সুলতানপুর হাইস্কুলের শিক্ষিকা স্মৃতিকণা মহারাজ বইপত্র, খাতা, পাঠদান দিয়ে খুবই সহযোগিতা করেছেন। এছাড়াও স্কুলের সমস্ত শিক্ষিক শিক্ষিকা তাঁকে সাহায্য করেছেন। এবার ফের তাঁর নিজেকে প্রমাণ করার নতুন লড়াই। বিশ্বভারতী থেকে পড়ে ডব্লুবিসিএস অফিসার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। কিন্তু ভর্তির ফিজ বেশি হওয়ায় আবেদন করতে পারেননি। তাঁর কথায়, বাবা-মা দিনমজুরের কাজ করে আমার পড়াশোনা চালিয়ে এসেছেন। নিজেকে প্রমাণ করতে চাই। কিন্তু পড়াশোনার খরচ কীভাবে বাবা জোটাব, সেটাই চিন্তার। আর্থিক সহায়তা পেলে প্রতিষ্ঠিত হয়ে মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।
বাবা সমীর কোনাই বলেন, নিজেদের জমিও নেই। একচিলতে মাটির ঘরে কোনওমতে দিনযাপন। যদিও বছর চারেক আগে সরকারি বাড়ি পেয়েছি। ও যা কিছু করেছে নিজের চেষ্টায়। মেয়ের স্বপ্ন অনেক বড়। অভাব আমাকে হতাশাগ্রস্ত করে তুলেছে। মেয়ের স্বপ্নপূরণ হবে কি না জানি না।
ছাত্রীর মা জবা কোনাই বলেন, সবদিন কাজ জোটে না। বড় ছেলে কলেজে ভর্তি হয়েছিল। কিন্তু টাকার অভাবে মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছে। মেয়ে ছোট থেকেই পড়াশোনায় ভালো। এত অভাবের মধ্যে পড়ার প্রতি তার জেদ আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। কিন্তু কেউ অর্থ সাহায্য না করলে মেয়েকে পড়াতে পারব না।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক আশিসকুমার মণ্ডল বলেন, স্কুলে ২৯ জন শিক্ষকের জায়গায় এখন রয়েছেন মাত্র ১৩ জন। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ইংরেজি ও বাংলার শিক্ষক নেই। তার মধ্যে পাঁচজন শিক্ষকের চাকরি সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে রয়েছে। শিক্ষক অপ্রতুলতার মধ্যেও আমরা সর্বোচ্চ মানের পাঠদান দিয়ে এসেছি। শিক্ষক এবং ওই ছাত্রী তাঁর নিরলস চেষ্টায় এই সাফল্য পেয়েছে। স্কুল খোলার পর সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা মিলে বসে শম্পার পাশে কীভাবে দাঁড়ানো যায়, সেব্যাপারে আলোচনা করে ঠিক করব। তবে আর্থিক সহায়তা ও সঠিক গ্রাইডেন্স পেলে শম্পা নিজের স্বপ্নপূরণ করতে পারবে। নিজস্ব চিত্র