কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। যোগাযোগ রক্ষা করে চললে কর্মলাভের সম্ভাবনা। ব্যবসা শুরু করলে ভালোই হবে। উচ্চতর ... বিশদ
অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে সামরিক-বৌদ্ধতন্ত্রের প্রচারে রাখাইনে ছড়ানো হয়েছে রোহিঙ্গা-বিদ্বেষ। ২০১৭ সালের আগস্টে অভিযান জোরদার করার আগের কয়েক মাসের সেনাপ্রচারে সেই বিদ্বেষ জোরালো হয়। এরপর শুরু হয় সেনা-নিধনযজ্ঞ। হত্যা-ধর্ষণ ও ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়ার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের মাধ্যমে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য করা হয় প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গাকে। রোহিঙ্গা নিপীড়নের প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিভাবে নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে মায়ানমার। দেশটির বেশ কয়েকজন সামরিক কর্তার বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে এসব নিষেধাজ্ঞার পরও অস্ত্র কিনতে মায়ানমারের সেনাবাহিনীকে বেগ পেতে হচ্ছে না। তারা অস্ত্র কেনা অব্যাহত রেখেছে।
অর্থনৈতিক অবরোধ শিথিল করলেও মায়ানমারের কাছে এখনও অস্ত্র বিক্রি করছে না আমেরিকা। তবে চীন অস্ত্র বিক্রি অব্যাহত রেখেছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে রাষ্ট্রসঙ্ঘ মায়ানমারকে সমর্থন করে আসছে বেজিং। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই) এর তথ্য অনুযায়ী, চীন এখন মায়ানমারের অস্ত্রের প্রধান উৎস। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ২০১৩ থেকে ২০১৭ সালে মায়ানমারের ৬৮ শতাংশ অস্ত্রের আমদানি হয়েছে শুধু চীন থেকেই। এসআইপিআরআই-এর এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের গবেষক সিমন উইজেম্যান জানান, সাঁজোয়া যান, ভূমি থেকে আকাশের ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের প্রযুক্তি, রাডার ও মানববিহীন ড্রোনসহ বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম ছিল এর মধ্যে।
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মায়ানমারের অন্যতম উদ্যমী বন্ধু রাশিয়া। রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শুইগু ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে মায়ানমার সফর করেন এবং ৬টি এসইউ-৩০ বিমান বিক্রি নিয়ে একটি চুক্তিতে সই করেন। এই চুক্তিটি ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বলে অনুমান করা হয়। ওই চুক্তির পর মার্কিন বিদেশ দপ্তর বলেছিল, এই চুক্তি রোহিঙ্গা সঙ্কটকে তীব্রতর করবে। তবে এই অভিযোগে তাদের কিছু যায় আসে না বলে মন্তব্য করেছিলেন রাশিয়ার একজন মুখপাত্র। আঞ্চলিক শক্তি হিসাবে চীনের বিপরীতে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে প্রতিবেশী মায়ানমারের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক বাড়ায় ভারতও। মায়ানমারের সঙ্গে ইজরায়েলের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ২০১৮ সালে রোহিঙ্গা সঙ্কটের মধ্যেও মায়ানমার সরকারকে জল বিশুদ্ধকরণ সিস্টেম প্রদান করে ইজরায়েল। এর আগে ২০১৫ সালে ইজরায়েল সফর করেন জেনারেল মিং অং হ্লায়াং। সেই সময় হলোকস্ট জাদুঘরের পাশাপাশি প্রতিরক্ষা সরবরাহ ব্যবস্থাও পরিদর্শন করেন তিনি। ২০১৭ সালের এপ্রিলে মায়ানমারের নৌবাহিনী তাদের ফেসবুক পেজে ইজরায়েল নির্মিত ‘সুপার ডিভোরা এমকে-৩’ পেট্রোল বোটের বেশ কিছু ছবি পোস্ট করেছিল। একটি ছবির ক্যাপশনে লেখা ছিল: ‘মায়ানমারের জলসীমায় সে ৪৫ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলছে। মায়ানমারের নৌবাহিনীতে স্বাগতম!’ তবে মায়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ইজরায়েলের অভ্যন্তরেই নানা ধরনের বিতর্ক রয়েছে। তাই ২০১৭ সালে একবার অস্ত্র বিক্রি বন্ধও হয়ে গিয়েছিল।