বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহযোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন হতে ... বিশদ
এতে খুশি হয়েছে সরকার ও বিরোধীপক্ষ উভয়েই। একটি প্রস্তাব যে দরকার, তা আলোচনার সময় উল্লেখ করেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। বিরোধী দলনেতা একটাই প্রস্তাবই গ্রহণ করার পক্ষে সওয়াল করে বলেন, নিজেদের মধ্যে বিভেদ হলে ধর্মান্ধ শক্তি উৎসাহিত হবে। আব্দুল মান্নান বিধানসভার লবিতেও সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের সঙ্গে মতপার্থক্য আছে অনেক ব্যাপারে। সেটা থাকবে। তবে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে মূল ভাবনা সবারই এক। সুজনবাবুও বিধানসভায় বলেন, একটি প্রস্তাবই হওয়া উচিত। পার্থবাবু বলেন, সবাই মিলে একটি প্রস্তাব এলেই ভালো হত। আপনাদের প্রস্তাবের লেখা কিছুটা বেশি ছিল- এই তো পার্থক্য।
কংগ্রেস ও বাম যৌথভাবে যে প্রস্তাবটি আনে, তাতে লোকসভা ভোটের পর সাম্প্রদায়িকতার সঙ্গে প্রাদেশিকতার বিষ ছড়ানোর উল্লেখ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যে আরএসএস-এর শাখা বৃদ্ধি পেয়েছে ও সাম্প্রদায়িক শক্তি প্রশয় পাচ্ছে বলে উল্লেখ থাকায় তাও সরকার পক্ষের আপত্তির কারণ ছিল। এখন যুক্ত প্রস্তাবে এগুলি থাকবে কি না, সেটা এদিন চূড়ান্ত হয়নি। সুজনবাবু প্রস্তাবের উপর সংশোধনী এনে রাজ্য সরকারও এর জন্য দায়ী, এটা যুক্ত করতে চাইলেও তা গ্রহণ করা হয়নি।
প্রস্তাবের উপর আলোচনায় শাসকদল তৃণমূল ও বিরোধী বাম ও কংগ্রেসের বক্তরা একযোগে কেন্দ্রের শাসকদলের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির কড়া সমালোচনা করেন। জয় শ্রীরামকে রাজনৈতিক স্লোগান হিসেবে ব্যবহার করার তীব্র নিন্দা করেন শাসক ও বিরোধী দলের বিধায়করা। তবে আলোচনার সময় কিছুটা চাপানউতোর হয়েছে। বক্তার তালিকায় পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ছিলেন না। কিন্তু আলোচনার মাঝে উঠে দাঁড়িয়ে তিনি মন্তব্য করলে, বাম বিধায়করা হইচই করেন। সুব্রতবাবু যে লোকসভা ভোটে হেরে গিয়েছেন, সেটাও বলেন তাঁরা। পরে বক্তব্য রাখতে উঠে এর জবাব দেন পরিষদীয় মন্ত্রী। তিনি বামেদের উদ্দেশে বলেন, সুব্রতবাবু হেরেছেন। কিন্তু আপনারা ৩৯টি আসনে কেন জামানত হারালেন, সেটা বিশ্লেষণ করেছেন কি?
প্রস্তাবের উপর পার্থবাবু ছাড়াও পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, কারিগরি প্রশিক্ষণ মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু বক্তব্য রাখেন। তিন পক্ষের তীব্র আক্রমণের পাল্টা জবাব দেওয়ার জন্য ছিলেন বিজেপির পরিষদীয় দলনেতা মনোজ টিগ্গা। তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্যে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করেছে তৃণমূল সরকার। তাদের বিভিন্ন সিদ্ধান্তর জন্য সাম্প্রদায়িকতা ছড়াচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সবার উন্নয়নের কথা বলছেন। তিনি বলছেন, ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’। কয়েকটি রাজ্যে গণপিটুনির তীব্র নিন্দাও করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, বিজেপি রাজ্যের যে ১৮টি আসন জিতেছে, সেখানে সাম্প্রদায়িকতার বিষ বেশি ছড়াচ্ছে। ফিরহাদ হাকিম বলেন, কে হিন্দু কে মুসলিম, মানুষের মধ্যে ভাগাভাগি আমাদের ঐতিহ্য নয়। মৌলবাদীরা দেশ ভাঙার চক্রান্ত করছে। তিনি নিজে যে কালীপুজো, দুর্গাপুজোর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত, সেটাও উল্লেখ করেন মন্ত্রী। জয় শ্রীরাম বা আল্লা হো আকবর বলা অন্যায় নয়। তবে তা ধর্মীয় স্থানে বলা উচিত। কাউকে অপমান করার জন্য বলা উচিত নয়। পূর্ণেন্দুবাবু বলেন, জয় শ্রীরাম বলা যে বাংলার সংস্কৃতি নয়, সেটা একদম ঠিক বলেছেন অমর্ত্য সেন। আমাদের সংস্কৃতি বহুত্ববাদী। সুজনবাবু বলেন, জয় শ্রীরাম জয় বাংলা স্লোগান শপথ গ্রহণের সময় বলে সংসদকে কলুষিত করা হচ্ছে। আব্দুল মান্নান বলেন, ধর্মীয় স্লোগান অন্য সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করার জন্য বলা হচ্ছে।