কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। যোগাযোগ রক্ষা করে চললে কর্মলাভের সম্ভাবনা। ব্যবসা শুরু করলে ভালোই হবে। উচ্চতর ... বিশদ
আদালত সূত্রে জানা যাচ্ছে, চলতি মাসের ১ তারিখ অঞ্জনা গুপ্তা নামে আলিপুরের বেলভেডিয়ার রোডের এক মহিলা সিআইডির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন, তাঁর ডেবিট কার্ডের তথ্য হাতিয়ে ১ লক্ষ ২২ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। অভিযোগপত্রে ‘কেয়ার অব’ হিসেবে লেখা রয়েছে বীরেন্দ্রর নাম। ঘটনাচক্রে তিনি রাজ্য পুলিসের ডিজি। তাঁর উপরেই ন্যস্ত রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা থেকে শুরু করে অপরাধ দমনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। অঞ্জনাদেবী অভিযোগে বলেছেন, মে মাসের ৩১ তারিখ তাঁর মোবাইলে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন আসে। ব্যাঙ্ককর্মী বলে পরিচয় দেয় প্রতারকরা। জানায়, তাঁর ডেবিট কার্ড ব্লক হয়ে যাবে। তা যাতে না হয় সেজন্য এই কার্ডের তথ্য প্রয়োজন। তিনি তাঁদের তা দিয়েও বসেন। সমস্ত তথ্য জোগাড় করে তারা ফোন কেটে দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যে তাঁর মোবাইলে একটি এসএমএস আসে। দেখা যায়, যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট রয়েছে অঞ্জনাদেবীর, সেখান থেকে পাঁচ হাজার টাকা উঠে গিয়েছে। তার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ৩৯,৮৯৮ টাকা তোলা হয়। তিনি বুঝতে পারেন, এটিএম প্রতারকদের গ্যাংই এই কাজ করেছে। অল্প সময়ের ব্যবধানে তারা আরও তিনবার টাকা তোলে। এই দফায় তোলা হয় মোট ৭৮,০৯৯ টাকা। সব মিলিয়ে তোলা হয় ১ লক্ষ ২২ হাজার টাকা। তার ভিত্তিতে সিআইডি প্রতারণা, ষড়যন্ত্র ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ধারায় ১ জুন কেস রুজু করে (কেস নম্বর ০১/১৯)।
যে নম্বর থেকে ফোন এসেছিল, তা খতিয়ে দেখে সিআইডি জানতে পারে, ফোনটি এসেছিল আসানসোল-ঝাড়খণ্ড সীমান্ত লাগোয়া এলাকা থেকে। তখনই তারা বুঝতে পারে, এর পিছনে রয়েছে ঝাড়খণ্ডের এটিএম প্রতারণার গ্যাং। মোবাইলের সূত্র ধরেই তাদের লোকেশন চিহ্নিত করা হয়। তার ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় মহম্মদ ইসমাইল, চন্দন সিং, উমা সরকার, প্রণব গুপ্তা সহ মোট ছয়জনকে। এরা আসানসোল, গিরিডি ও ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। অনেকদিন ধরেই এই গ্যাংটি অপারেশন চালাচ্ছে বাংলায়। তদন্তে উঠে আসছে, গ্রাহকদের তথ্য হাতানোর জন্য তারা ব্যাঙ্কের ভিতরকার কর্মীদের একাংশকে হাত করেছে। সেখান থেকে মোবাইল নম্বর জোগাড় করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে ফোন করছে। অনুমান করা হচ্ছে, ডিজির স্ত্রীর মোবাইল নম্বরও এভাবেই তারা জোগাড় করে। কীভাবে এই নম্বর প্রতারকদের হাতে গেল, তা নিয়ে আলাদা তদন্ত করা হচ্ছে। এটিএম কার্ডের নম্বর কাউকে না দেওয়ার জন্য পুলিসের তরফ থেকেই বারবার প্রচার করা হচ্ছে। তারপরেও পুলিসকর্তার স্ত্রী এভাবে প্রতারণার শিকার হওয়ায় এই প্রচার আদৌ কতটা কার্যকর হচ্ছে, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।