কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। যোগাযোগ রক্ষা করে চললে কর্মলাভের সম্ভাবনা। ব্যবসা শুরু করলে ভালোই হবে। উচ্চতর ... বিশদ
এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত আছেন আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারির প্রধান ডাঃ রূপনারায়ণ ভট্টাচার্য, সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ গৌরবরঞ্জন চৌধুরী, বেলগাছিয়ার প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারির প্রধান ডাঃ সমিত নন্দী, সেখানকার অধ্যাপিকা ডাঃ দেবপি ঘোষ এবং আইআইটি গুয়াহাটির সহযোগী অধ্যাপক ডঃ বিমান মণ্ডল।
গবেষকদল জানিয়েছে, কমবেশি আড়াই বছর আগে শুরু হয়েছে এই গবেষণা। রেশম বা সিল্ক দিয়ে বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে এই বায়ো অবজারভেবল আর্টারি। যেহেতু রেশম প্রোটিন দিয়ে তৈরি, তাই মনুষ্যশরীরে ব্যবহারের জন্য রেশম ব্যবহার করা হয়েছে। গবেষকরা লক্ষ করেছেন, প্রাণীদেহে এই কৃত্রিম ধমনি ব্যবহার করার পর দেখা গিয়েছে, ছিন্ন অংশ থেকে কোষগুলি স্বাভাবিকভাবে কৃত্রিম ধমনির চারপাশে বাড়তে থাকছে। কয়েক মাস পর কৃত্রিম ধমনি শরীরে মিলিয়ে গিয়েছে এবং স্বাভাবিক ধমনির ছিন্ন অংশটি বেড়ে আগের অবস্থায় চলে এসেছে।
গবেষকদল সূত্রের খবর, খরগোশের শরীরে ইতিমধ্যে এই ধমনির ব্যবহার করা হয়েছে। তাদের ক্যারোটিড আর্টারি এবং জুগুলার ভেন দু’টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিরা-ধমনি ছিন্ন করে সেই জায়গায় এই কৃত্রিম ধমনি ব্যবহার করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত তাতে অসম্ভব সাফল্যও মিলেছে। দু’মাস পর ডপলার স্টাডি এবং অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, খরগোশের রক্ত সংবহন স্বাভাবিক। তারা বেশ সুস্থ-স্বাভাবিকও রয়েছে।
এ বিষয়ে আরজিকরের প্লাস্টিক সার্জারির প্রধান রূপনারায়ণবাবু বলেন, বাইপাস সার্জারি ছাড়াও পথ দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্তদের চিকিৎসায়, বিভিন্ন ধরনের মাইক্রোভাসকুলার সার্জারি এবং ক্যান্সার সার্জারিতেও এর ব্যবহার হতে পারে। প্রাণীদের উপর গবেষণায় যথেষ্ট সাফল্য মিলছে। খরগোশে কৃত্রিম ধমনি ব্যবহারের সময় প্রাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক ছাড়াও আমাদের ডাঃ চৌধুরীও উপস্থিত থাকছেন। অনুমতি পেলে আরজিকরে এরপর হিউম্যান ট্রায়াল হবে। তাতেও সাফল্য পেলে চিকিৎসাশাস্ত্রের নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে। আইআইটি গুয়াহাটির ডঃ মণ্ডল বলেন, বাইরের কোনও জিনিস মানবশরীরে প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল রিজেকশন বা বর্জন। শরীর তা নিতে চায় না। রেশম প্রোটিন দিয়ে তৈরি বলে গ্রহণ করায় সুবিধা রয়েছে। এখনও পর্যন্ত সাফল্য মিলেছে। ভবিষ্যতের জন্যও আমরা আশাবাদী। প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারির প্রধান ডাঃ সমিত নন্দী বলেন, উপাচার্য ডাঃ পূর্ণেন্দু বিশ্বাসের সহযোগিতা ছাড়া এই গবেষণা সম্ভব হতো না। আমরা আরও বেশি সংখ্যক খরগোশে এই পরীক্ষা চালাব। এখনও পর্যন্ত ফলাফল অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক।
গবেষকদলের দাবি সম্পর্কে বিশিষ্ট কার্ডিয়াক সার্জেন সত্যজিৎ বসু বলেন, নিঃসন্দেহে খুবই উল্লেখযোগ্য গবেষণা। আমার যাবতীয় শুভেচ্ছাও রইল গবেষকদলের প্রতি। কিন্তু, কতগুলি বিষয়ে না বললেই নয়। এক, বাইপাস সার্জারির জন্য পায়ের স্যাফিনাস ভেন বাদ দিলেও শরীরে ধমনির অভাব নেই। যেমন ইন্টারনাল মেমারি আর্টারি, রেডিয়াল আর্টারি, গ্যাসট্রো এপিপ্লয়িক আর্টারি ইত্যাদি। অনেকের ক্ষেত্রে দ্বিতীয়বার বাইপাসে এই গ্রাফ্টগুলি পেতে সমস্যা হতে পারে। তবে নিঃসন্দেহে বলব, চিকিৎসাশাস্ত্রের অগ্রগতির জন্য গবেষণা চলুক।