কর্মে ও ব্যবসায় বাধা থাকলেও অগ্রগতি হবে। আর্থিক যোগ শুভ। ব্যয় বাড়বে। সম্পত্তি নিয়ে শরিকি ... বিশদ
লালবাগ মহকুমার নবগ্রাম ব্লক কৃষিপ্রধান এলাকা। এই ব্লকের মধ্য দিয়ে বয়ে গিয়েছে বিল বসিয়া। নবগ্রাম, পাঁচগ্রাম, পলশন্ডা, শিবপুর, অমৃতকুণ্ড, অনন্তপুর, মহরুল, সিঙ্গার, বৈদ্যবাটি, জয়চন্দ্রপুর, রসুলপুর, বাঘরাপাড়া সহ ব্লকের প্রায় সমস্ত কৃষিজমি এই বিলের পলি দ্বারা গঠিত হওয়ায় এখানকার চাষের জমি উর্বর। সম্প্রতি ব্লকের কয়েকটি এলাকার চাষিরা সব্জি চাষ শুরু করলেও এখনও প্রধান ফসল ধান। বেশিরভাগ চাষিই বোরো এবং আমন ধানের চাষ করেন। এবার বোরো ধানের ফলন ভালো হলেও করোনা মহামারীর জেরে বিক্রি করতে পারেননি এলাকার চাষিরা। এই পরিস্থিতিতে ছোট এবং প্রান্তিক চাষিরা চরম সমস্যার সম্মুখীন হন। চাষের জন্য চড়া সুদে নেওয়া ঋণ পরিশোধ করতে গরিব চাষিরা সরকারি ন্যায্য মূল্যের থেকে অনেক কম দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হন। সিঙ্গার গ্রামের বাসিন্দা ডালিম ঘোষ ২০ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছিলেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কিছু ধান বিক্রি করলেও এখনও ঘরে প্রায় ২৫কুইন্টাল ধান পড়ে রয়েছে। তিনি বলেন, ধানের সরকারি ন্যায্যমূল্য ১৮৬৮ টাকা কুইন্টাল। লকডাউনের সুযোগ নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা প্রতি কুইন্টাল ধান ১৪৫০-১৫০০টাকায় কিনেছেন। যে সকল চাষি ঋণ করে বা পরিবারের মেয়েদের গয়না বন্ধক রেখে চাষ করেছিলেন তাঁরা লোকসানেই ধান বিক্রি করেছেন।
পাঁচগ্রামের চাষি বিশ্বনাথ মণ্ডলের ঘরে ১০ কুইন্টাল ধান আছে। তিনি বলেন, এপ্রিল-মে মাসে বোরো ধান ওঠে। চলতি বছরে লকডাউনের মধ্যেই ধান উঠেছিল। সম্পূর্ণ লকডাউনে সমস্ত যানবাহন বন্ধ থাকায় ধান কাটা এবং বাড়িতে নিয়ে আসার খরচ অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল। সমস্ত বোরো ধান বাড়িতেই রয়ে গিয়েছে। কিছুই বিক্রি করতে পারিনি। তবুও পাঁচ বিঘা জমিতে আমন ধানের চাষ করেছি। ভালো ফলন হয়েছে। ধান বিক্রির জন্য সরকারিভাবে নাম লিখিয়েছি। দেখি কতটা ধান বিক্রি করতে পারি। নবগ্রাম ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা বরুণ খাঁ বলেন, লকডাউনের জন্য অন্যান্য বছরের মতো সরকারিভাবে ধান কেনা হয়নি। চাষিরা স্থানীয়ভাবে কিছু ধান বিক্রি করলেও বেশিরভাগ চাষির ঘরে বোরো ধান জমা রয়েছে। তাছাড়া ধান কাটা এবং ঝাড়াইয়ের সময় বৃষ্টি হওয়ায় ধানের গুণগত মানের খামতি হওয়ায় কিছু সংখ্যক চাষি ধান বিক্রি করতে পারেননি। আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে ১০ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়ে গিয়েছে। ধান কেনার জন্য চাষিদের নাম নথিভুক্ত হয়েছে। আমন ধানের পাশাপাশি বোরো ধানও কেনা শুরু হয়েছে।