কর্মলাভের যোগ আছে। ব্যবসায় যুক্ত হওয়া যেতে পারে। কর্মক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। বুদ্ধিমত্তার জন্য প্রশংসা জুটবে। ... বিশদ
মায়ের প্রায় নীরব বিদ্রোহ মানে সেকালে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে পরিচারিকা ও সন্তানদের নিয়ে গৃহত্যাগ, দ্বিতীয় বিয়ে ভেঙে দেওয়া, লিভ-ইন করা এবং এই সব অনুষঙ্গকে গুরুত্ব না দিয়ে, পূর্ণ মনোযোগে লেখা চালিয়ে যাওয়া – মেয়ের চোখে গৌণ রয়ে গেল। এমনকী সে নিজে যখন কুমারী অবস্থায় গর্ভবতী হল – তার আশ্রয়ের ব্যবস্থা, প্রয়োজনীয় সাহায্য - সবকিছুই মায়ের তত্ত্বাবধানে হয়। তাতেও অনুর সেই বোধ জাগেনি, যে মা-ই আসলে তার প্রকৃত বান্ধব। সেই অবিবেচনা, রাগ, অন্ধ আবেগ – তাকে মায়ের জীবিতাবস্থায় তাড়া করেছে এমনভাবে যে, সে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার কোনও দরকার অনুভব করেনি। যে অন্ধের বশে সে নিজের জীবনের যাবতীয় বিপর্যয়ের জন্য মাকে দায়ী করে, সেই একই আবেগ তাকে পরিবেশ-পরিস্থিতি ভুলিয়ে দিয়ে যাকে যা খুশি বলে ফেলতে প্ররোচনা দিয়েছে। তাই রেহাই পাননি সাংবাদিক, মায়ের জীবনী-লেখক, নার্স, চিকিৎসক – কেউই।
অনুর সঙ্গে বড় হয়ে ওঠা ভাই, আবার বেছে নিয়েছে পুরোপুরি বিপরীত এক জীবনচর্চা। ঈশ্বর-বিশ্বাস তাকে সংসার থেকে নিয়ে গিয়ে ফেলেছে আধ্যাত্মিকতায়। মা-দিদিমা-মামার প্রভাব একেবারে অন্যভাবে পড়েছে অনুর কন্যা মাসার উপরে। সেও ‘সিঙ্গল’ মায়ের সন্তান। কিন্তু মায়ের অবাধ জীবনযাপনের জন্য, তাকে একেবারে ছোট থেকে নানা খারাপ কথার মুখোমুখি হতে হয়েছে। মাসাকে এইসব কটূক্তি এমন প্রভাবিত করে, যে সে বুঝে নেয়, গৃহ ও পারিবারিক বাতাবরণই তার কাঙ্ক্ষিত। নয়ন ও অনুর উল্টো রাস্তায় সে নিজেকে বসিয়ে ফেলে। এবং এতটাই প্রভাবিত হয়ে যায়, গর্ভাবস্থায় শ্বশুরবাড়ির নাতি পাওয়ার ইচ্ছেকে ও ভ্রূণের
লিঙ্গ নির্ণয় করাকেও সে খুব সাধারণ ও ভালোবাসার প্রকাশ হিসেবে দেখে। এই জায়গায় এসে আশাহত লাগে নয়ন ও অনুর মতোই।
‘ত্রিভঙ্গ’ ছবি দিয়ে পরিচালনায় এসেই রেণুকা সাহানে সৎ ও বলিষ্ট পদক্ষেপ রেখেছেন। কাজলের স্ক্রিন-প্রেজেন্স নাটকীয়, জীবন্ত এবং দৃঢ়। যেটুকু মেলোড্রামা তিনি অভিনয়ে এনেছেন তা ‘অনু’ চরিত্রটি ডিমান্ড করে। গোঁয়ার, রাগী, জেদি, প্রতিভাময়ী, স্বনির্ভর অনুকে পর্দায় ফুটিয়ে তোলার জন্য এই ‘অতিনাটকীয়তা’ দরকার ছিল। একইরকম ভাবে, লেখিকা নয়নের পরিশীলিত বাচন-ভঙ্গি, সীমিত উচ্ছ্বাস, তীব্র পার্সোনালিটিকে চমৎকার তুলে ধরেছেন তনভি আজমি। সামান্য কিছু ত্রুটিও আছে ছবিতে। যেমন অনুর কাজের কোনও দৃশ্যই ছবিতে দেখা গেল না। দেখা গেল না নয়নের প্রথম-বিবাহ পরবর্তী ব্যক্তিগত টানা-পোড়েনের বিষয়টিও। তবে রেণুকা সাহানের কাছে প্রত্যাশা নিঃসন্দেহে বাড়ল এই ছবির পর।