উচ্চবিদ্যায় ভালো ফল হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে সুযোগ আসবে। কোনও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। ব্যবসায় যুক্ত ... বিশদ
ফলে বুঝতেই পারছেন, কত ধানে কত চাল হলে, ডেস্টিনেশন বিয়ে হতে পারে। হালের দীপিকা পাড়ুকোন ও রণবীর সিংহের কথাই ধরা যাক! বলিউড ইন্ডাস্ট্রির এই দুই চর্চিত তারকা, পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন ইউরোপে। ইতালির লেক কোমোতে তাঁরা বিয়ে সেরে দেশে ফিরে বেশ কয়েকটি রিসেপশন-পার্টি দেন। এর আগে অবশ্য ক্রিকেট তারকা বিরাট কোহলি এবং হিন্দি ছবির নায়িকা অনুষ্কা শর্মাও ইতালির তাস্কানিতে ডেস্টিনেশন ওয়েডিং সেরে শোরগোল ফেলে দেন। দক্ষিণ ইতালির এক ঐতিহাসিক গ্রামে বিয়ে করার কারণ হিসেবে অনুষ্কা জানিয়েছিলেন, তিনি বিয়ে নামের ব্যাপারটিকে ব্যক্তিগতভাবেই রাখতে চান। তাই তাঁদের বিয়েতে মাত্র ৪২জন অতিথি গিয়েছিলেন ইতালি। সে দিক দিয়ে দেখতে গেলে, সেলিব্রিটিদের ডেস্টিনেশন ম্যারেজের এও এক জোরালো কারণ। গোপনীয়তা রক্ষা এবং সংবাদমাধ্যমের থেকে দূরে পারিবারিক উপায়ে বিয়ের আয়োজন করতে গেলে বিদেশ চলে যাওয়াই শ্রেয়। এমনিতেই তারকাদের প্রেম ও বিয়ে নিয়ে আম-আদমির কৌতূহল তুঙ্গে থাকে। তাই বিয়ে-জাতীয় কেসে যে তারা হামলে পড়বে, সেটাই স্বাভাবিক। তবে শুধু তারকারা নন– এখন অনেক কোটিপতিই বিয়েকে অন্যরকম করে তুলতে দেশের নানা নামকরা জায়গায় বা বিদেশে চলে যাচ্ছেন। এতে প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়াতেও বাহবা মিলছে।
ভুলেও ভাববেন না যে আমাদের দেশে ডেস্টিনেশন ম্যারেজ হয় না! ভারতে এই মুহূর্তে অন্তত দুশোটি জায়গা আছে, যেখানে ডেস্টিনেশন ওয়েডিং করছেন মানুষজন। এ দেশে যে সমস্ত জায়গাকে ধনীরা বেছে নিচ্ছেন সেগুলোর মধ্যে গোয়া, জয়পুর, উদয়পুরের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। কেরালাতেও অনেকে যাচ্ছেন। যাচ্ছেন সিমলাতেও। এমনকী আমাদের রাজ্যেও ডেস্টিনেশন ওয়েডিং চালু হয়েছে। তবে ট্রেন্ড ফলো করলে দেখা যাবে, দেশের বাইরে তাঁরাই বেশি বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে যান, যাঁদের প্রাচুর্যের পরিমাণ অধিক। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে, বিদেশের বেশ কিছু নামী-দামি জুটি ভারতকেও নির্বাচন করেছেন তাঁদের বিয়ে করার জায়গা হিসেবে। এ ব্যাপারে রাজস্থানের চাহিদা সবার উপরে। এই রাজস্থানেরই যোধপুরের রয়্যাল উমেদ ভবন প্যালেসে ভারতের জনপ্রিয় নায়িকা প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও নিক জোনাস হিন্দু ও খ্রিস্টান মতে বিয়ে করেন। কেবল স্বদেশ নয়, রাজস্থানের নানা প্যালেসে প্রায়শই বিদেশ থেকে নক্ষত্রসকল উড়ে আসেন শুভ পরিণয় সুসম্পন্ন করতে। ব্রিটিশ নায়িকা এলিজাবেথ হার্লে এবং ভারতীয় ব্যবসায়ী অরুণ নায়ারের রূপকথার মতো বিয়ে হয়েছিল মরু রাজ্যের যোধপুরে। সেই ২০০৭ সালেই বেশ কয়েক কোটি টাকা ব্যয় হয় তাঁদের বিয়েতে। পুরনো আমলের দুর্গ এবং অট্টালিকাগুলিকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এই ডেস্টিনেশন বিয়ের ভূমিকা বেশ সদর্থক। এইকাজে প্রাপ্ত অর্থ থেকে ফোর্টগুলোকে সংরক্ষণ করা সহজ হয়েছে এবং রাজ-পরিবারগুলির উপার্জনের সুরাহা হয়েছে। কারণ, আজকাল ডেস্টিনেশন ওয়েডিং কিন্তু স্টেট্যাস সিম্বল হিসেবে যথেষ্ট উচ্চস্থানে। পিছিয়ে নেই আমাদের ঘরের পাশের টলিউডও। বাংলা ছবির নায়িকা তথা এমপি নুসরত জাহান গত বছরের ১৯ জুন তুরস্কে তাঁর দীর্ঘদিনের প্রেমিক নিখিল জৈনের সঙ্গে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। সেখানে হাতে গোনা কয়েকজন আত্মীয় ও বন্ধুদের তাঁরা নিয়ে গিয়েছিলেন। পরে কলকাতায় ফিরে জমকালো রিসেপসন পার্টি দেন। এও ডেস্টিনেশন ম্যারেজের এক অত্যাবশ্যক দস্তুর। বিয়ে যেখানেই হোক, দেশে ফিরে নিজের শহরে একখান জবরদস্ত পার্টি দেওয়া মাস্ট। সেলিব্রিটিরা আবার দু-তিন খান পার্টিও দিয়ে থাকেন। সেক্ষেত্রে আবার কেবল নিজের শহরেই নয়, দেশের প্রধান শহরগুলিতেও জাঁকালো গেট-টুগেদারের আয়োজন করেন।
এতখানি পড়ে, উড়ে যেতে ইচ্ছে করছে তো বাঁধা পড়ার আগে? যেতেই পারেন। রেস্ত নিয়েও চিন্তা নেই। স্রেফ ইন্টারনেটে জেনে নিন খরচের বহর। তারপর পকেট অনুযায়ী বাজেট তৈরি করে ফেলে নেমে পড়ুন মাঠে। ইতালি, ফ্রান্স, মালয়েশিয়া যদি নাও হয় দিঘার সৈকত বা মন্দারমণির শান্ত তটভূমি তো রইলই! প্রয়োজন ইচ্ছে এবং মস্তিষ্কের অনুধাবণ ক্ষমতা।