কাজকর্মের ক্ষেত্রে দিনটি বিশেষ শুভ। নতুন যোগাযোগ ও উপার্জন বৃদ্ধির ক্ষেত্র প্রস্তুত হতে পারে। বিদ্যায় ... বিশদ
প্রথমেই জানতে হবে গাউট কী। গাউট হল বাত বা যন্ত্রণাদায়ক আর্থ্রাইটিসের একটি ধরন। কখন এমন সমস্যা হয়? আমাদের শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কোনও কারণে খুব বেড়ে গেলে, সেই ইউরিক অ্যাসিড শরীরের নানা জয়েন্টে কেলাস বা ক্রিস্টাল আকারে জমা হয়। অত্যন্ত সূক্ষ্ম এবং সুচালো হওয়ায় এই ক্রিস্টালগুলি শরীরের ছোটখাট জয়েন্ট যেমন কব্জি, গোড়ালি, কনুই, আঙুল, বুড়ো আঙুল এমন নানা জায়গার জয়েন্টে জমা হয় ও প্রদাহ তৈরি করে। শুরু হয় ব্যথা। একসময় রোগীর পক্ষে হাঁটাচলা করাও মুশকিল হয়ে পড়ে।
কীভাবে সামলাবেন
বেশ কিছু খাদ্যে থাকে পিউরিন নামের উপাদান। পিউরিন ভেঙে তৈরি হয় ইউরিক অ্যাসিড। সাধারণত আমাদের কিডনিই ইউরিনের মাধ্যমে ইউরিক অ্যাসিডকে শরীর থেকে বের করে দেয়। তবে শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়তে থাকলে একসময় গাউট দেখা দেয়।
অতএব খাদ্যাভ্যাস বদলিয়ে এবং জীবনযাত্রার খানিক পরিবর্তন করে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। দেখা যাক কী কী করা যায়—
• অ্যালকোহল হল প্রচুর পরিমাণে পিউরিনের উত্স। ফলে যাঁরা ইউরিক অ্যাসিডের আধিক্যজনিত সমস্যায় ভুগছেন তাঁদের একেবারেই অ্যালকোহল গ্রহণ করা উচিত নয়।
• লাল মাংস বা বড় প্রাণীর মাংস এবং লিভার, কিডনি, ব্রেনের মতো অর্গ্যান মিটেও থাকে প্রচুর পিউরিন। এই ধরনের খাদ্য খাওয়া বর্জন করুন।
• শক্ত খোলা যুক্ত সামুদ্রিক মাছ, বিশেষ করে কাঁকড়া, ঝিনুক, লবস্টারের মতো খাদ্য এড়িয়ে চলাই ভালো।
• কৃত্রিম উপায়ে সংরক্ষিত বা প্রিজারভেটিভ দেওয়া আছে এমন খাদ্য খাওয়া চলবে না।
• খাওয়া যাবে না মিট স্যস।
• এড়িয়ে চলুন ঈস্ট মেশানো খাদ্য।
• কিছু কিছু শাকসব্জিও রয়েছে যেগুলিতে সামান্য মাত্রাতে হলেও পিউরিন থাকে। উদাহরণ হিসেবে মাশরুম, শতমূলী, পালং, ফুলকপির মতো সব্জির কথা বলা যায়। তবে মাঝেমধ্যে অল্প মাত্রায় খাওয়া যায় সব্জিগুলি।
• এড়িয়ে চলতে হবে খুব বেশি সুগার আছে এমন খাদ্য যেমন কেক, পেস্ট্রি, ক্যান্ডি, যে কোনওরকম ফ্রুট জ্যুস, কর্ন সিরাপ ইত্যাদি।
• অড়হর, রাজমা, কাবলি ছানা এই ধরনের জিনিসগুলোকে কম পরিমাণে খেতে হবে।
• ফ্রুক্টোজ বেশি আছে এমন পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। বিশেষ করে সোডা, কোল্ড ড্রিংকস জাতীয় পানীয় ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
খুব জরুরি
• ইউরিনের মাধ্যমে ইউরিক অ্যাসিড শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। তাই প্রতিদিন ১৬ গ্লাস জল পান করার চেষ্টা করুন। না হলে কম পক্ষে ৮ গ্লাস জল পান করতেই হবে।
• ইউরিক অ্যাসিড কমাতে চেরি, বেরিজাতীয় ফল, পেঁপে, আনারস খাওয়ার উপর জোর দিতে পারেন।
• ডালের মধ্যে মুগ ডাল বাছতে পারলে ভালো।
• ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে ভিটামিন সি সাপ্লিমেন্ট খাওয়া যায়। শরীর থেকে পিউরিন দূর করার ক্ষেত্রে ভিটামিন সি খুব সাহায্য করে।
মনে রাখবেন
• ইউরিক অ্যাসিডের আধিক্য থেকে কিডনিতে পিউরিন স্টোন হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
• ওজন নিয়ন্ত্রণ করা একটা বড় বিষয়। কারণ জয়েন্টের ক্ষয় হলে ও তার উপর মাত্রাতিরিক্ত ওজন চাপলে জটিলতা আরও বাড়বে বই কমবে না।
শেষ কথা
ওষুধ খাওয়ার দরকার হলে অবশ্যই ওষুধ খান। সঙ্গে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন করুন। প্রতিদিন ৩০ মিনিট এক্সারসাইজ করুন। ঘুমের ঘাটতি থাকা চলবে না। স্ট্রেস থাকলে তা কমাতে ধ্যান করতে পারেন। তাতেই মিলবে কাঙ্ক্ষিত ফল।