মেয়াদি সঞ্চয় বা পৈতৃক সম্পত্তি সূত্রে ধনাগম যোগ দেখা যায়। কাজকর্মের ক্ষেত্রে ও আর্থিক দিক ... বিশদ
‘ভয়েজার টু’-এর গোল্ডেন ডিস্কের জন্য যে কমিটি গঠন করা হয়েছিল, তারা সফলভাবে ১১৬টি ছবি এবং বিভিন্ন ধরনের শব্দগুলিকে রেকর্ডের মধ্যে সংরক্ষিত করেন। এই রেকর্ডটি পাঠিয়েছেন আমেরিকার নাসার বিজ্ঞানীরা। রেকর্ডটির নাম ‘গোল্ডেন ডিস্ক’। কারণ এই রেকর্ডটি গোল্ড প্লেটেড কপার দিয়ে বানানো। আর এর কভার বানানো হয়েছে অ্যালুমিনিয়াম ও ইউরেনিয়াম-২৩৮ আইসোটোপ দিয়ে। বিভিন্ন ধরনের শব্দ ও ছবিগুলি যদি ভিনগ্রহবাসী অর্থাৎ কোনও এলিয়ানের কাছে যায়, তবে তারা বুঝতে পারবে পৃথিবী বলে কোনও একটি নীলগ্রহ আছে। সেখানে মানুষ নামের এক উন্নত প্রাণী বাস করে। অবশ্যই সেক্ষেত্রে ওই ভিনগ্রহবাসীকেও মানুষের মতো অথবা তার থেকেও বেশি উন্নত ভাব-চিন্তার হতে হবে।
এই রেকর্ডটিকে বিজ্ঞানীরা বলেন, পৃথিবীর তরফে পাঠানো ভিনগ্রহীদের জন্য একটি উপহারস্বরূপ। এই রেকর্ডটি বানানোর জন্য বিজ্ঞানীদের চিন্তা ও চেষ্টার কোনও ত্রুটি ছিল না। অ্যান ড্রুয়ান নামের এক লেখকের মস্তিষ্ক তরঙ্গ অর্থাৎ চিন্তাতরঙ্গকে এক ঘণ্টা ধরে রেকর্ড করা হয়েছে। এই চিন্তাতরঙ্গের মধ্যে ছিল পৃথিবীর সমস্যা সম্পর্কে ভাবনা, পৃথিবীর ইতিহাস, ভালোবাসার অনুভূতি ইত্যাদি। পৃথিবীর ৫৫টি ভাষায় মৌখিক সম্ভাষণ রেকর্ড করা আছে। এই ভাষার মধ্যে রয়েছে আমাদের মাতৃভাষা বাংলাও। এছাড়াও রয়েছে ইংরেজি, ফরাসি উর্দু, হিন্দি, আরবি, হিব্রু, কোরিয়ান, চাইনিজ, জাপানিজ ও প্রাচীন গ্রিক ভাষা। রেকর্ডে যখন সম্ভাষণ শুরু হবে তার ঠিক এক মিনিট ৮ সেকেন্ডের মাথায় শোনা যাবে বাংলা ভাষা। ‘ভয়েজার টু’-এর গোল্ডেন ডিস্ক বলে উঠবে— ‘নমস্কার, বিশ্বের শান্তি হোক।’
এই রেকর্ডে যে ছবি, তথ্য, শব্দ ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়েছিল, তা নিয়ে ১৯৭৮ সালে প্রকাশিত হয় বিখ্যাত বই ‘মার্মার্স অব আর্থ: দ্য ভয়েজার ইন্টারস্টেলার রেকর্ড’। অনেক পরে, ২০১৫ সালে নাসা ওই রেকর্ডের অডিও অংশটা সাউন্ড ক্লাউডে দিয়েছে। এছাড়াও হলিউডে এই অভিযানের উপর দু’টি ছবি তৈরি হয়েছে। ১৯৮৪ সালে ‘স্টারম্যান’ ও ২০০০ সালে ‘ব্যাটল ফিল্ড’। অবশ্য ছবি দু’টিতে কল্পকাহিনি ব্যবহার করা হয়েছে। দেখানো হয়েছে ওই গোল্ডেন রেকর্ডটি ভিনগ্রহীরা পেয়েছে এবং পৃথিবীর সম্বন্ধে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। গল্প কাহিনির পরিবর্তে এটাই যদি সত্য হয় তাহলে কেমন হবে ছোট্ট বন্ধুরা? হয়তো ভিনগ্রহবাসীরা পৃথিবীতে চলে আসবে। তারা আমাদের বন্ধু হবে না শত্রু? সেটাও কিন্তু চিন্তার বিষয়।