Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

কেউ দেখেনি
প্রদীপ আচার্য

নিরাপদর নিরাপদে থাকার সুখ উবে গেল। গ্রামের নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশে থাকার একটা আলাদা সুখ আছে। সেই সুখের মুখে আজ ঝামা ঘষে দিল একটা জানোয়ার। সবাই সাপের ভয় দেখিয়েছে। বলেছে, বর্ষায় জলকাদার হ্যাপা, সাপের উপদ্রব হবে। কিন্তু, গ্রামে যে এইসব এলিমেন্টদের বাস, সেকথা তো কেউ বলেনি! নিরাপদ ভাবেন, আশ্চর্য! সবাই বর্ষার জলকাদা, সাপখোপ নিয়ে হ্যাজালো। আরে বাবা, গ্রামে বর্ষার জলকাদা, সাপের ভয় কি নতুন কথা কিছু? কিন্তু, বর্ষায় গ্রামে যখন সন্ধে নামে, তখন নাগাড়ে ব্যাঙের গ্যাঁ গোঁ আর ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক, টিনের চালে অবিরাম বৃষ্টির ঝমঝম শব্দ। জানলার বাইরে ঘুরঘুট্টি অন্ধকার। ঝড়বৃষ্টিতে লোডশেডিং অনিবার্য। তখন ঘরে হ্যারিকেনের টিমটিমে আলো। সব মিলিয়ে একটা তোফা ভুতো ভুতো সন্ধেরাত। সেই রোমাঞ্চ কি কম?
মধ্যমগ্রাম থেকেই মালতীপুরের স্কুলে যাওয়া আসা করছিলেন নিরাপদ। রিটায়ার করে গ্রামে থাকার ইচ্ছের কথা বলেছেন সরখেলবাবুকে। গ্রামের মানুষ সরখেলবাবু। তিনিই খোলাপোতার জমিটার খোঁজ দিয়েছেন। জমিটা লোভনীয় বলে রিটায়ার করা পর্যন্ত আর অপেক্ষা করলেন না নিরাপদ। জমি আর স্কুল দুই-ই যখন হাসনাবাদ লাইনেই পড়ছে, তখন শুভস্য শীঘ্রম। মধ্যমগ্রামের বাপেরকেলে জমিবাড়ি সব বেচে দিলেন। তিনি একা ওয়ারিশ। তাই প্রোমোটারের দেওয়া মোটা রকমের পুঁজি তাঁর হাতে। পাঁচিলঘেরা জমি। পেল্লায় লোহার গেট। হয়তো কোনও ছোটখাট কারখানা করার স্কিম ছিল। নিরাপদর মতে, এর চেয়ে ভালো জায়গাজমি এত সস্তায় হয় না। পুজোর ছুটিতে রাজমিস্ত্রি লাগিয়ে দিলেন। স্থানীয় বাসিন্দা রহমত আলির তদারকিতে দেখতে দেখতে বাড়ি একেবারে রেডি। একেবারে হোম সুইট হোম ।
সেই সুইট হোম আজ নিমের চেয়েও তেতো হয়ে গিয়েছে। একটা আস্ত জানোয়ার নিরাপদর মন ভেঙেচুরে দিয়েছে। সব সুখ একেবারে চৌপাট করে দিয়েছে। শহরে মারপিট, খুনখারাপি, তোলাবাজি, চাঁদার জুলুম লেগেই আছে। সেসব থেকে দূরে সরে এসেও রেহাই পেলেন কই? এখানে তো আরও সাংঘাতিক। রীতিমতো ফিজিক্যালি অ্যাসল্ট! উফ! হরিবল!
ছেলেবেলা মহা আনন্দে কেটেছে জলপাইগুড়ির গ্রামে। তারপর আধা গ্রাম মধ্যমগ্রামে এসে বাবা বাড়ি করলেন। সেই মধ্যমগ্রাম এখন শপিংমলে-মলে ঝলমল করছে। সবাই বাপদাদার বসতবাড়ি, ভিটেমাটি বেচে দিয়ে ফ্ল্যাটে উঠে যাচ্ছে। বড় ঘিঞ্জি। একটু ফাঁকা নেই যে প্রাণভরে নিঃশ্বাস নেবেন। আর এখানে নিরাপদর এই পনেরো কাঠা জমি তাঁর জীবনের সব শখ মিটিয়ে দিয়েছে। একটা ছোট্ট ফুলের বাগান, একটু শাকসব্জির চাষ করার শখ, সে কি আজকের? ছোটখাট দালানকোঠা। ছাদে কাঠের মিস্তিরি ডেকে এনে পাকাপোক্ত পায়রার খোপ বানিয়েছেন। চোত, বোশেখের অলস দুপুরে পায়রার একটানা গুড়গুড় বকম বকম ডাক। নাগাড়ে সেই শব্দ শুনতে শুনতে দিবানিদ্রার সুখ যে কী, তা সবাই বুঝবে না। বাড়ির পিছনদিকে এককোণে পাঁচিল ঘেঁষে পাকাপোক্ত মুরগির ঘর করে দিয়েছেন। চারজোড়া পায়রা আর তিনটে মুরগি, একটা মোরগ এনে দিয়েছে রহমতই। নিরাপদর জমির সীমানায় একটা নিমগাছ একটা জামরুল গাছ আর একটা ল্যাংড়া আমগাছ পড়েছে। তিনটে গাছে পাখপাখালির কলকাকলি লেগেই আছে। পাখিদের কলতান আর মোরগের ডাকে ঘুমভাঙা সকাল। আহা এই হল কোটি টাকার গুড মর্নিং। দু’জন মানুষের দু’খানা ঘর। একটা ছোট্ট ডাইনিং স্পেস। অ্যাটাচড বাথ। মাথার ওপর পাকা ছাদ হলেও বারান্দায় টিনের চাল রাখলেন শখ করেই। ওটা নস্টালজিয়া। বর্ষাকালে বৃষ্টির ঝমঝম শব্দ নিরাপদকে ছেলেবেলায় টেনে নিয়ে যায়। ছেলেবেলা কেটেছে জলপাইগুড়ির মোহিতনগরে। সেখানে তখন সব বাড়ির ছাদই ছিল টিনের চালের। বৃষ্টিও হতো জম্মের বৃষ্টি। দু’দিন-তিনদিন ধরে। আর সেই বৃষ্টির ঝমঝম ঝমঝম শব্দ বাজত টিনের চালে। শুনতে শুনতে কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমের দেশে পাড়ি দেওয়া, আহা! ছেলেবেলার সেই সুখ আবার এত বছর বাদে ফিরে পাওয়া যাবে। বাড়িতে বিশাল একটা উঠোন। বরাতজোরে নিমগাছটা পড়েছে উঠোনের মাঝখানে। নিরাপদর খুশি আর ধরে না। বাড়ির উঠোনে নিমগাছ মানে, নো স্নেক। কোনও বিষধর সাপ এই বাড়ির ত্রিসীমানায় ঘেঁষবে না। বনবিহারীবাবু শুনে বললেন, ‘এর সায়েন্সটা কী?’ নিরপদ বলেন, ‘সায়েন্স মানে... আমার মাকে বলতে শুনেছি।’
—‘অ। তবে পলিউশন ফ্রি গ্রামে থাকার সুখ সবই বুঝলাম। কিন্তু বর্ষাকালে যখন সাপের উপদ্রব হবে, আর রাতে যখন বাড়ির উঠোনে শেয়াল এসে কম্মোটি করে দিয়ে যাবে, তখন টেরটি পাবেন।’
উঁচু পাঁচিলে ঘেরা জমি। জুতসই লোহার গেট। তেমন বুঝলে একটা ডাকাবুকো কুকুরও পুষবেন তিনি। নিঃসন্তান নিরাপদর সাধের তালিকায় একটা কুকুর তো আছেই। আর আছে দুটো গাইগোরু। পিছনে পাঁচিল ঘেঁষে একটা পাকাপোক্ত গোয়ালঘর বানাবেন। রহমতকে ধরে দুটো গোরুও কিনবেন তিনি। কিন্তু ভয় ওই শেয়াল নিয়ে।
শেয়ালের ভয়টা নিরাপদর মনে ঢুকিয়ে দিয়েছেন কাজিসাহেব। খোলাপোতারই আদি বাসিন্দা। কাজিসাহেব আবার একপ্রস্ত মনসামঙ্গলও গেয়ে রেখেছেন। বলেছেন, ‘বর্ষায় সাপের গত্তেও পানি ঢুকে পড়ে। সেই পানির তাড়নায় তখন মা মনসার বাহিনী গত্তের তে বেইরে এইসে এর গোয়ালঘরে, তার রান্নাঘরে সিঁধোয়ে যায়।’ নিরাপদবাবু বললেন, ‘আচ্ছা বাড়ির উঠোনে নিমগাছ থাকলে কোনও বিষধর সেই বাড়ির মুখো হয় না নাকি?’ কাজিসাহেব হেসে বলেন, ‘আম্মো শুনিছি। তা সি বিষয় পস্ট জ্ঞিয়ান আমার নেইকো। তবে আবনারে এট্টা বিষয় সাবধান কইরে দিতিই হবে। তা হল গে শ্যাল।’
‘শেয়াল?’
‘হ্যাঁ, শ্যাল। কুনোদিন টেরেনে রাত হলি আর বাড়ি ফেরার তাল করবেন না। চাঁপাপুকুর টিশানে নেইমে খোলাপোতা আসতি ওই কাটিয়ার বাগ গেরাম, কাঁটাপুকুর গেরাম আর চাঁপাপুকুর গেরাম পার হই তো আসতি হয়। রাস্তার দুধারে ধু ধু মাঠ। সেই দূরে দূরান্তে দু’-একখান বাড়ি। দুধারে শিরিশ গাছ, আকাশমণি গাছ, কৃষ্ণচূড়া গাছ রইয়েছে। দিনির বেলা দেখতি ভালোই লাগে। কিন্তু রেইতির বেলা আন্ধারে বেপদ। রাস্তার দু’ধারের ধানখেতে কাচের সবুজ গুলির পারা শ্যালের টলটলে চোখ জ্বলজ্বল করে। চারপাশ শুনশান। রাত্তিরি ওই পথে পা রাখলি পিছে ফেউ লেগে যাবে।’
‘ফেউ মানে শিয়াল?’
‘হ্যাঁ, ওরা থাকে পালে পালে। দলে বিশ, পঁচিশ, তিরিশটা। নিঃশব্দে পিছু নেবে। তারির পরে তাল বুঝে পায়ের পিছন দিকে গোড়ালির ওপরি আটারির রগটা এক্কেবারে কামড়ে ছিঁড়ে নেবে। তখন ফিনকি দে রক্ত বেরতি থাকবে। যে যত বড় পালোয়ানই হোক সে মাটিতে লুটোয় পড়বেই। তখন গলার কাছে কামড়ে কণ্ঠনালী ছিঁড়ে দেবে, যাতি মানুষ চিৎকার করতি না পারে। সেবার এট্টা নিকুটি মেই মরল শ্যালের কামড়ে। তখন খবরির কাগজিও বেইরেছেলো। একবার মুই নিজিও আন্ধারে ধানখেতে কাঁচের সবুজ সবুজ গুলি দেখিছি। ভয় পে ছুট্টে গে এট্টা বাড়িতে ঢুইকে পড়িছি। সেই বাড়িতি তখন দুই প্রতিবেশীর চিলচিৎকারে তুমুল বিতণ্ডা হচ্ছিল। মানষির সেই গলা ফাটানো চিৎকার শুনে বাছাধনেরা আর আমার পিছু নেয়ার সাহস করেনিকো। ওই গেরস্তের বাড়ি ঢুইকে মুই পার পেই গিয়েস।’
কাজিসাহেবের মুখে শেয়ালের বৃত্তান্ত শুনে শিউরে উঠেছেন নিরাপদ। ভাবলেন, খোলাপোতায় সাধ করে জমিবাড়ি করাটা তাহলে বোধয় ভুল হল। জায়গাটা মোটেই খুব নিরাপদ নয়।’ স্কুল থেকে তো সন্ধের আগেই ফেরেন তিনি। ব্যস। তারপর এদিক ওদিক আর নট নড়নচড়ন। কলকাতার দিকে গেলে বিকেল বিকেল ফিরতে পারলে ফিরবেন, নয়তো পরদিন সকালে। মোদ্দা কথা, ওই শেয়ালের পাল্লায় পড়ে বেঘোরে মরা যাবে না।
সে তো গেল শেয়াল ও সর্পবৃত্তান্ত। কিন্তু এই রাসকেল জানোয়ারটার কথা তো কেউ বলেনি! আশ্চর্য!
আহা! তখন কী আনন্দই না হচ্ছিল। সর্বাঙ্গে আনন্দ একেবারে থই থই করছিল। খুশির ফোয়ারা ঝরছিল। আকাশে চচ্চড়ে রোদ ঝাঁ ঝাঁ করছিল। সূর্যের গনগনে আঁচ। জ্যৈষ্ঠের শেষ। আষাঢ় উঁকি দিচ্ছে। প্রচণ্ড গরম। অথচ নিমগাছের ঘন ছায়ায় হালকা হালকা হাওয়া। মনে হচ্ছিল বসন্তকাল। এই হল গ্রামে থাকার সুখ। কিন্তু হঠাৎ বেলা তিনটে নাগাদ নিরাপদর মাথায় কেন যে সেই ভূত চাপল!
নিরাপদর স্ত্রী নিরুপমা মেঝেতে শীতলপাটি পেতে ফ্যানের হাওয়ায় নাক ডাকিয়ে ভাতঘুম ঘুমোচ্ছেন। নিরুপমার একটুও ইচ্ছে ছিল না এই অজ গাঁয়ে এসে থাকার। নিরাপদ বলেন, ‘গ্রামে থাকার সবচেয়ে বড় অ্যাডভান্টেজটা হল, ফ্রেশ এয়ার আর টাটকা শাকসব্জি। পুকুরের জ্যান্ত মাছ। দামেও যেমন সস্তা, তেমনি তার স্বাদ।’ সে কথা অবশ্য অস্বীকার করেন না নিরুপমা। এখানে রেঁধে খেয়ে সুখ আছে। কিন্তু ঘরের মানুষ ছাড়া দু’দণ্ড কথা বলার মানুষ আর কই?
ঘুম থেকে উঠে নিরুপমা চায়ের জল চাপালেন। বললেন, ‘চা দিয়ে একটু মুড়িমাখা খাবে? মাখব?’ শুনে মুখে রা কাড়লেন না নিরাপদ। গুম মেরে বসে রইলেন। অপমানের জ্বালাটা কিছুতেই ভুলতে পারছিলেন না তিনি। মানুষ হয়, তাকে দু’-দশদিন বাদেও তার একটা মোক্ষম জবাব দেওয়া যায়। অপমানের শোধ তোলা যায়। কিন্তু এ কি মানুষ? এটা তো একটা আস্ত জানোয়ার। নিরাপদকে একেবারে বোবা করে দিয়ে চলে গেল। লোকে শুনলে লজ্জায় মরে যেতে হবে। সবাই ঠাট্টা-তামাশা করবে। আর বনবিহারীবাবু শুনলে তো এ-কান সে-কান পাঁচকান করে বেড়াবেন। লোকটার এমনিতেই খেয়ে কাজ নেই কোনও। নিরাপদকে খুব হিংসে করেন। নাকি হাঁপানিতে ঘুমতে পারেন না। তবু এতদূর ঠেঙিয়ে এসে একদিন একবেলা খেয়ে থেকে জমিবাড়ি ঘুরে দেখে গিয়েছেন। তবে না পেটের ভাত হজম হল তাঁর। উঠোনের ভরা নিমগাছটা দেখে মুখটাকে রোদে পোড়া আমসির মতো করে বললেন, ‘এমনিতে ঠিকই আছে। তবে নিমপাতা আর নিমফল যখন ঝরতে শুরু করবে, তখন উঠোনে ঝাঁট দিতে দিতে কোমরে স্লিপ ডিস্ক হয়ে যাবে দেখবেন।’ নিরাপদ বলেছেন, ‘সে যা-ই বলুন। দুধ দেওয়া গোরুর লাথিটাও ভালো।’
এদিকে নিমতিতা, ওদিকে আমমিঠা। নিরাপদর জমির ওই ল্যাংড়া আমগাছে ফলন কাকে বলে দেখে যা। লোক ডেকে তিনি আম পাড়িয়ে বেচে দিয়েছেন। নিজের ভাগে যা রেখেছেন, সেই অত আম কে খায়? স্কুলে গরমের ছুটি। খেয়ে বসে নেই কাজ তো আম খাও। নিরাপদর সুগার নেই। তাই সকালে দুধচিঁড়ে আর ছাতুর সঙ্গে দু-দু’খানার ছাল ছাড়িয়ে কচলে আঁটি নিঙড়ে নিয়ে আঃ। বিকেলে দুধমুড়ির সঙ্গে— কাটো গিন্নি আরও দু’খানা। খাঁটি ল্যাংড়া বলে কথা। নিজের গাছের আম খেয়ে নিমগাছের হাওয়া খেয়ে তো দিব্যি দিন কাটছিল। কিন্তু, কেন যে তিনি প্রকাশ্যে ওই অপকম্মোটি করতে গেলেন! 
উঠোনে নিমগাছের নীচে একটা চারপেয়ে চৌকিতে মাদুর বিছানো আছে। দুপুরের খাওয়াদাওয়া সেরে নিমগাছের ছায়ায় প্রকৃতির হাওয়ায় শরীর গড়িয়ে দিলেন নিরাপদ। চোখ বুজে শুয়েছিলেন। থাকলে কী হবে? মন তখন পড়ে আছে আসল বস্তুটিতে। ভাবলেন, গিন্নি ঘুমোচ্ছে। এই তালে কম্মো সারা 
হয়ে যাক। 
পা টিপে টিপে ঘরে গিয়ে খাটের নীচ থেকে তিনি আসল বস্তুটাকে টেনে আনলেন। চারপেয়ের ওপর বড় একটা ছড়ানো গামলায় রাখলেন। গুছিয়ে বসলেন। দু’হাতে ভালো করে সর্ষের তেল মেখে নিলেন। তারপর রসে টইটম্বুর তুলতুলে কাঁঠালটায় সামান্য চাপ দিতেই ফালা ফালা হয়ে গেল সেটা। উঁকি দিল রসালো কোয়াগুলি। বীজ ছাড়িয়ে খান দু’-তিন কোয়া মুখে পুরে দিয়ে আবেশে চোখ বুজলেন তিনি। নিমতিতার ছায়ায় বসে এমন মিঠা ফল আহা! চোখ বুজেই তারিয়ে তারিয়ে খাচ্ছিলেন। মন আনন্দে গেয়ে উঠল, ‘কী মিষ্টি, দেখ মিষ্টি, কী মিষ্টি এ কাঁঠাল।’ কিন্তু চোখ খুলতেই সব আনন্দ কর্পূরের মতো উবে গেল। সামনেই এসে বসেছে এক মূর্তিমান শাখামৃগ। একটা পেল্লায় হনুমান। সে নিরাপদর চোখের দিকে তাকিয়ে বসে আছে। 
মুখপোড়ার চোখের ভাষা হল, ‘কী ব্যাপার? একা একাই খাচ্ছ? আমরা কি আঙুল চুষব?’ হনুমানের চোখের দিকে তাকিয়ে নিরাপদর এমনই মনে হল। তিনি ভয়ে স্ট্যাচু হয়ে গেলেন। আচমকা গালে একটা সপাটে চড় খেলেন তিনি। চড় মেরে হাত থেকে কাঁঠালটা কেড়ে নিয়েই হনুমানটা একলাফে পগারপার। হতভম্ব হয়ে নিরাপদ চারদিকে নজর ঘুরিয়ে দেখে নিলেন, নাহ্, কেউ দেখেনি। 
29th  December, 2024
অস্তরাগ
সঞ্জয় রায়

অস্তগামী সূর্যের রক্তিম আভা নদীর জলে গলে গলে যাচ্ছে। বসন্ত বাতাসে চরাচর জুড়ে গোধূলির অদ্ভুত বর্ণচ্ছটায় প্রকৃতি যেন মায়াময়। চিত্রপটে স্যিলুট হয়ে বসে আছে দু’টি নরনারী। জীবনের প্রান্তদেশে পৌঁছে দু’টি মন পরস্পর খুঁজে পেয়েছে তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের অদ্ভুত মিল। বিশদ

অতীতের আয়না: সাহেবি বড়দিন ও নিউ ইয়ার
অমিতাভ পুরকায়স্থ

কাজকর্ম শিকেয় তুলে পাঁচ দিন ধরে বাঙালির দুর্গোৎসব পালন যাঁরা বাঁকা চোখে দেখেন, তাঁদের আঠারো শতকের কলকাতা থেকে ঘুরিয়ে আনতে পারলে বেশ হতো। সে সময় শহরের সাহেব-মেমদের বড়দিন উপলক্ষ্যে খানা-পিনা-নাচ-গান ও কেনাকাটার হুল্লোড়ের মরশুম চলত দিন দশেক। বিশদ

গুপ্ত রাজধানী: ইন্ডিয়া গেট
সমৃদ্ধ দত্ত

গরিব ও মধ্যবিত্তদের কাছে সেই আর্থিক শক্তি কোথায়! রবিবার অথবা ছুটির দিন কিংবা ন্যাশনাল হলিডে হলেই কোনও বৃহৎ শপিং মল অথবা মাল্টিপ্লেক্সে যাবে! অনেকক্ষণ মেনুকার্ড দেখার পর শেষ পর্যন্ত বরাবরের মতোই ফ্রায়েড রাইস, চিলি চিকেন অর্ডার করার বিলাসিতাও যাদের থাকে না, তারা যাবে কোথায়? বিশদ

গুপ্ত রাজধানী: হোলি ট্রিনিটি চার্চ
সমৃদ্ধ দত্ত

দিল্লি মানেই ইতিহাসের গল্প। এর আনাচকানাচে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ঐতিহাসিক স্থাপত্য। এরমধ্যে বেশ কয়েকটির খোঁজ এখন আর রাখেন না পর্যটকরা। ইতিহাসের সাক্ষ্য হয়ে গোপনেই পড়ে রয়েছে সেইসব স্থাপত্য। তারই খোঁজে গুপ্ত রাজধানী। বিশদ

29th  December, 2024
আজও রহস্য: রেস কোর্সের অশরীরী
সমুদ্র বসু

ভূত মানুন আর না মানুন, ভূত-প্রেত নিয়ে আগ্রহ কিন্তু সবার। আমাদের আশপাশের গ্রাম, শহর, মফস্‌সল থেকে শুরু করে খোদ কলকাতা শহরে এমন অনেক জায়গা রয়েছে, যেখানে ব্যাখ্যার অতীত বিভিন্ন ঘটনা আজও ঘটে। সেই তালিকায় আছে কলকাতা রেস কোর্সেরও নাম। বিশদ

29th  December, 2024
চোর  মিনার

গম্বুজ। সমাধি। শহিদ স্তম্ভ। এসবই তো ইতিহাসের চিহ্ন হিসেবে সর্বত্রই  দেখা যায়।  কখনও মসৃণ বহিরঙ্গ। কখনও চিত্রাঙ্কন। আবার কোনও সময় ভাস্কর্যের নমুনা থাকে বহির্গাত্রে। কিন্তু এই মিনারের স্তম্ভগাত্রে এত গর্ত কেন? মাটি থেকে সোজা উঠে গিয়েছে আকাশের দিকে। বিশদ

22nd  December, 2024
কলকাতা এক পরীর দেশ

আসলে আমরা খেয়াল না করলেও আমাদের চারপাশের হাওয়ায় এখনও দিব্যি নিঃশ্বাস নেয় আঠেরো-উনিশ শতকের কলকাতা। আর সেই পুরনো কলকাতার স্মৃতিকে ধরে রাখার অন্যতম প্রতীক হল— পরী।
  বিশদ

15th  December, 2024
লাল মন্দির

সমৃদ্ধ দত্ত
মুখোমুখি দাঁড়িয়ে লালকেল্লা ও লাল মন্দির। একটি জগৎ বিখ্যাত। অন্যটি স্বল্প খ্যাত। লাল মন্দিরের উচ্চতা তো কম নয়। লালকেল্লার সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে চাঁদনি চকের দিকে তাকালেই চোখে পড়ার কথা। অথবা সেভাবে পর্যটকদের দৃষ্টিগোচরই হয় না।
বিশদ

15th  December, 2024
ডাক দিয়েছে কোন সকালে
বিজলি চক্রবর্তী

হরি হে তুমি আমার সকল হবে কবে...।’ গলা ছেড়ে গানটা গাইতে গাইতে বিশ্বরূপ রান্নাঘরের দরজায় এসে দাঁড়াল। হাতের কাজ বন্ধ করে নবনীতা বিশ্বরূপের মুখোমুখি হল। বিশ্বরূপ গান বন্ধ করল না। নবনীতার চোখের মুগ্ধতা তাকে উৎসাহিত করে। বিশ্বরূপের গানের ভক্ত নেহাত কম নয়। বিশদ

15th  December, 2024
আদরের পিউ
কৌশানী মিত্র

অনির্বাণের কাল নাইট ছিল। সারারাত দুর্দান্ত পরিশ্রম গিয়েছে। জুনিয়র রেসিডেন্ট হিসেবে এই অদ্ভুত একটা আধা গ্রাম-আধা শহর মতো জায়গাটায় এসে থাকতে শুরু করেছে ও। এখানে আসার পর থেকেই সকাল-দুপুর-রাত কেমন গুলিয়ে যায় অনির্বাণের। বিশদ

08th  December, 2024
প্রতিশোধ
সাবিনা ইয়াসমিন রিঙ্কু

মাত্র ছ’মাসেই যে ফল পেয়ে যাবে ভাবতে পারেনি জয়তী! প্রদীপ্ত কি নিজেও ভাবতে পেরেছিল বাষট্টি থেকে চুরানব্বই হবে! বেশ লম্বা বলে বাইরের লোকরা পার্থক্যটা অতটা ধরতে না পারলেও জয়তী জানে পুরনো প্যান্টগুলো আর কোমর পর্যন্ত উঠতে চাইছে না। বিশদ

01st  December, 2024
বনের মানুষ

—মাস্টার, আজ ডিম বাদ দে, হামাদিগের ছেলে-মেয়েগুলান কেউ খাবেকনি রে!
—কেন?
—হামার সঙতে আসে ওই শর্বরী টুডুটা আছে না? উয়ার ছেলেটোর গায়ে ‘মায়ের দয়া’ বের হইচে। উয়ার লিগে হামাদের পাড়ার সবার মাছ-মাংস-ডিম খাওয়াটো বারণ আছে।
বিশদ

17th  November, 2024
কিছু কিছু সত্য
অংশুমান কর

বড়মা যখন খবরটা দিল তখন সুকমল শেভ করছিল। সকালটা তার খুবই তাড়াহুড়োয় কাটে। তখন এক মিনিটও মহার্ঘ। এক মিনিটের জন্যও এক-দু’দিন ও ট্রেন মিস করেছে। বাসে করে স্কুলে পৌঁছে দেখেছে প্রেয়ার শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রার্থনা শুরু হওয়ার পরে স্কুলে পৌঁছতে ওর খুব লজ্জা লাগে।
বিশদ

10th  November, 2024
দোলনা
সুমন মহান্তি

সরকারি হাসপাতালের এমারজেন্সি ওয়ার্ডের সামনে অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়াতেই মহীন ক্ষীণগলায় বললেন, ‘অপারেশনটা যেন তাড়াতাড়ি করে। ডাক্তারকে তাড়া দিবি।’ বিশদ

03rd  November, 2024
একনজরে
শনিবার ব্রেইল পদ্ধতির আবিষ্কারক লুই ব্রেইলের ২১৫তম জন্মদিন। সারা বিশ্বে এই দিনটি আন্তর্জাতিক ব্রেইল দিবস হিসেবে পালন হয়। এদিন উলুবেড়িয়ার জগৎপুরের আনন্দ ভবন ডেফ এন্ড ব্লাইন্ড স্কুলে দিনটি পালন হয়। ...

বিষ্ণুপুর এবং সাতগাছিয়া বিধানসভার দু’টি ব্লকে ‘বাংলার বাড়ি’ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলল বিজেপি। তাদের দাবি, নিজস্ব পাকাবাড়ি থাকার পরও একাধিক ব্যক্তির নাম রয়েছে টাকা পাওয়ার ...

ঘাটাল শহরে কতগুলি টোটো চলে তার পরিসংখ্যান  জোগাড় করতে  শুরু করছে ঘাটাল পুরসভা। তারা ক্যাম্প করে টোটো চালকদের থেকে নথিও সংগ্রহ করতে শুরু করেছে। চেয়ারম্যান তুহিনকান্তি বেরা বলেন, ‘জেলাশাসকের নির্দেশেই আমরা পুর এলাকায় কতগুলি টোটো চলে তার পরিসংখ্যান জোগাড় করতে ...

ইসলামপুর পুলিস জেলায় ভিআইপিদের নিরাপত্তায় যাতে গাফিলতি না হয়, সেদিকে কড়া নজর দিয়েছে জেলা পুলিস। মালদহের তৃণমূল নেতা দুলাল সরকারের খুনের পর ইসলামপুরে নড়েচড়ে বসেছে পুলিস ও প্রশাসন। পুলিস যাদের নিরাপত্তারক্ষী দিয়েছে, তাদের সতর্ক করে মেসেজ পাঠানো হচ্ছে। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

কাজকর্মে উন্নতি। ব্যবসায় গতি বৃদ্ধি। ব্যবসা ক্ষেত্রে লগ্নিবৃদ্ধির প্রচেষ্টায় সাফল্য। সন্তান বিষয়ে কোনও সুখবর পেতে ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৫৯২: মুঘল সম্রাট শাহজাহানের জন্ম
১৬৯১: ইউরোপে সর্বপ্রথম কাগুজে মুদ্রা ছাপানো হয়
১৯১৯: জার্মান ওয়াকার্স পার্টি (পরে যা নাৎসি পার্টি নামে খ্যাত হয়)-র জন্ম
১৯৪০: এফ এম রেডিও-র প্রদর্শন হয় ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশনে
১৮৬৭: জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ীতে জোড়াসাঁকো থিয়েটার এর উদ্বোধন করা হয়
১৯০২ - গওহর জানের কণ্ঠের গান দিয়ে কলকাতায় প্রথম গ্রামোফোন কোম্পানি রেকর্ড করা শুরু করে
১৯২২: কাজী নজরুল ইসলাম-এর বিখ্যাত বিদ্রোহী কবিতা প্রকাশিত হয়
১৯২৮: প্রাক্তন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর জন্ম
১৯৩৪: কলকাতার ইডেন গার্ডেনে ভারত-ইংল্যান্ড প্রথম টেস্ট ক্রিকেট শুরু হয়
১৯৩৪: কলকাতায় ভয়াবহ হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা বাঁধে
১৯৪১: ক্রিকেটার মনসুর আলি খান পতৌদির জন্ম
১৯৫২: পতৌদির অষ্টম নবাব ও ভারতীয় ক্রিকেটার ইফতিখার আলি খান পতৌদির মৃত্যু
১৯৬৮: সাবেক চেকোশ্লোভাকিয়ায় ক্ষমতায় আসেন আলেকজান্ডার দুবচেক, ‘প্রাগ বসন্ত’র সূচনা হয়
১৯৭১: প্রথম ওয়ানডে ক্রিকেট ম্যাচ মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত। এতে অংশ গ্রহণ করে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড।
১৯৭৩: অভিনেতা উদয় চোপড়ার জন্ম
১৯৮৬: অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোনের জন্ম
২০১৩: বাংলা চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অভিনেতা হারাধন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যু 



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৪.৯৩ টাকা ৮৬.৬৭ টাকা
পাউন্ড ১০৪.৭২ টাকা ১০৮.৪৪ টাকা
ইউরো ৮৬.৮১ টাকা ৯০.১৭ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৭,৩০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৭,৭০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭৩,৮০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৮,২০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৮,৩০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

২১ পৌষ, ১৪৩১, রবিবার, ৫ জানুয়ারি ২০২৫। ষষ্ঠী ৩৪/৪৫ রাত্রি ৮/১৬। পূর্ব ভাদ্রপদ নক্ষত্র ৩৪/৫০ রাত্রি ৮/১৮। সূর্যোদয় ৬/২১/৫৮, সূর্যাস্ত ৫/২/২। অমৃতযোগ দিবা ৭/৪ গতে ৯/১২ মধ্যে পুনঃ ১২/৪ গতে ২/৫৫ মধ্যে। রাত্রি ৭/৪২ গতে ৯/২৯ মধ্যে পুনঃ ১২/৮ গতে ১/৫৫ মধ্যে পুনঃ ২/৪৮ গতে উদয়াবধি। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৩/৩৮ গতে ৪/২০ মধ্যে। বারবেলা ১০/২১ গতে ১/১ মধ্যে। কালরাত্রি ১/২১ গতে ৩/২ মধ্যে।
২০ পৌষ, ১৪৩১, রবিবার, ৫ জানুয়ারি ২০২৫। ষষ্ঠী রাত্রি ৮/৫৬। পূর্ব ভাদ্রপদ নক্ষত্র রাত্রি ৯/২৯। সূর্যোদয় ৬/২৪, সূর্যাস্ত ৫/২। অমৃতযোগ দিবা ৭/৫ গতে ৯/১৩ মধ্যে ও ১২/৩ গতে ২/৫৪ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৪২ গতে ৯/২৮ মধ্যে ও ১২/৯ গতে ১/৫৫ মধ্যে ও ২/৪৯ গতে ৬/২৪ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৩/৩৬ গতে ৪/১৯ মধ্যে। বারবেলা ১০/২৩ গতে ১/৩ মধ্যেো। কালরাত্রি ১/২৩ গতে ৩/৪ মধ্যে। 
৪ রজব।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আদিবাসী মেলার উদ্বোধন করলেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী চরণ মাঝি

11:05:01 PM

রবিবার রাতে ভারী তুষারপাতের সাক্ষী জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগর

10:15:00 PM

আইএসএল: পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে ০ – ১ গোলে জয়ী কেরল

09:38:00 PM

ইজরায়েলের বিমান হানায় গাজায় মৃত ৯

09:23:00 PM

আইএসএল: পাঞ্জাব ০ – কেরল ১ (৭৪ মিনিট)

09:06:00 PM

ডায়মন্ড হারবারে অভিষেকের ‘সেবাশ্রয়’-এর চতুর্থ দিন
ডায়মন্ড হারবারে শুরু হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সেবাশ্রয়’। আজ, রবিবার ছিল ...বিশদ

08:47:00 PM