একাধিক সূত্র থেকে আয় ও সঞ্চয় বৃদ্ধির যোগ। কাজকর্মে উন্নতি হবে। মানসিক চঞ্চলতা ও ভুল ... বিশদ
টি রুম বা টি হাউস। চীন, জাপান বা মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে গল্প বা আড্ডার সেরা ঠিকানা হিসেবেই ধরা হয় এগুলোকে। তিব্বত গিয়ে সেই টি হাউস চাক্ষুষ করার সুযোগ ঘটেছিল একবার। বুঝেছিলাম, এগুলো আসলে সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান ও বৈঠকের ঠিকানা। শুধুই যে খাবার ও পানীয় পাবেন এখানে তা-ই নয়। বরং একটা অঞ্চলের লোকসংস্কৃতির খোঁজ নিতে চাইলে তাও মিলবে। তাই সাধারণ রেস্তরাঁর চেয়ে এগুলো বেশ আলাদা।
চরিত্রগতভাবেই টি হাউসের সঙ্গে রেস্তরাঁর অমিল। আকারে ছোট, নিরিবিলি অবস্থানে চা ও ‘টা’ সহযোগে আড্ডা দেওয়ার জন্যই এগুলো তৈরি। টি হাউসের মেনুতে চা-ই নায়ক। বাকি খাবার শুধুই তার সঙ্গত করার জন্য রাখা হয়। বিদেশি ধাঁচে গড়া এই টি হাউসগুলোতে অনেক ক্ষেত্রেই ইনডোর গেমস, বই ইত্যাদি রাখা হয়। খাবারের ধরনও সান্ধ্যভোজের উপযুক্ত।
চীনে প্রথম যখন চায়ের আমদানি হয়েছিল তখন তা ওষুধ হিসেবে খাওয়ার চল দেখা দেয়। গলা ব্যথা, সর্দি, কাশি ইত্যাদিতে গরম চা পান ওষুধের কাজ করত। তারপর বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা চা খেতেন মনঃসংযোগ বাড়ানোর জন্য। এরও অনেক পরে চায়ের সঙ্গে আড্ডার যোগাযোগ ঘটে ইউরোপীয় ও ইংরেজ মানুষজনের হাত ধরে। ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য বিস্তারকালেই চা পানের রমরমা শুরু হয় এদেশে বলে শোনা যায়। সেই সময় দেশের বিভিন্ন রাজ্যে গড়ে ওঠে গোরাদের আড্ডাখানা, পোশাকি নাম হয় টি হাউস। আড্ডাকে সরস করতে চায়ের সঙ্গে টা-এর বন্দোবস্ত রাখা হতো সেখানে।
এই ধাঁচেই দক্ষিণ কলকাতায় তৈরি হয়েছে দ্য টি প্লেস ১৮৬০ বাই নামরিং। ঠান্ডা ও গরম মিলিয়ে নানারকম চা পাবেন এখানে। সঙ্গে কিছু কন্টিনেন্টাল স্ন্যাক্সও রাখা হয়েছে। শীতের সন্ধ্যাকে উজ্জ্বল করে তুলতে, সেই অলস দুপুরগুলো আড্ডার মেজাজে ভরিয়ে তুলতে এই টি হাউসে সময় কাটাতেই পারেন। আর সেখানকার মেনু থেকে কয়েকরকম চা যদি বাড়িতেই বানাতে চান, তাও সম্ভব। রেসিপি অনুযায়ী উপকরণ আনিয়ে বানিয়ে ফেলুন হরেক রকম চা।
দার্জিলিং ফার্স্ট ফ্লাশ চা
উপকরণ: ফার্স্ট ফ্লাশ চায়ের পাতা ১ চা চামচ, ফুটন্ত গরম জল ২ কাপ, চিনি স্বাদ অনুযায়ী।
পদ্ধতি: ফুটন্ত গরম জলে ফার্স্ট ফ্লাশ চায়ের পাতা মিনিট সাতেক ভিজিয়ে রাখুন। দেখবেন পাতাগুলো ফুলে বড় হয়ে উপরের দিকে ভেসে উঠবে। চায়ের জলে হাল্কা সোনালি রং ধরবে। তখন তা ছেঁকে নিন। ইচ্ছে হলে চিনি মিশিয়ে নিন, অথবা চিনি ছাড়াই এই চা খেতে পারেন। ফার্স্ট ফ্লাশ চা স্বাদে একটু কষা হয় তাই বেশিক্ষণ ভেজাবেন না। চা পাতা উপরের দিকে ভেসে উঠতে শুরু করলেই তা ছেঁকে ফেলবেন।
দার্জিলিং অটম ফ্লাশ চা
উপকরণ: সেকেন্ড ফ্লাশ বা অটম ফ্লাশ চায়ের পাতা ১ চা চামচ, ফুটন্ত গরম জল ২ কাপ, চিনি স্বাদ অনুযায়ী।
পদ্ধতি: ফুটন্ত গরম জলে চায়ের পাতা ভিজিয়ে তা ঢাকা দিয়ে রেখে দিন দশ মিনিট। তার একটু বেশি রাখলেও ক্ষতি নেই। এরপর চায়ের পাতা জলের উপর দিকে ভেসে উঠবে। জলে একটু গাঢ় সোনালি রং ধরবে। এবার চা কাপে কাপে ছেঁকে নিন। ইচ্ছে অনুযায়ী চিনি মেশান। এই চা একেবারেই কষা স্বাদের নয়। লিকার চা যাঁরা ভালোবাসেন তাঁদের জন্য উপযুক্ত এই চা।
লেমন আইসড টি
উপকরণ: যে কোনও চায়ের পাতা ১ চা চামচ, ফুটন্ত জল ১ গ্লাস, চিনি ১ চা চামচ, মধু ১ চামচ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, বরফ কুচি কাপ।
পদ্ধতি: গরম জলে চা ভিজিয়ে রাখুন দশ মিনিট। তারপর তা ছেঁকে নিন। এবার চায়ের লিকার ঠান্ডা হতে দিন। তারপর তা ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করুন। এবার একটা গ্লাসে চিনি ও মধু একসঙ্গে গুলে নিন। তাতে ঠান্ডা করা চায়ের লিকার মেশান। এবার সবটা একসঙ্গে চামচ দিয়ে গুলে নিন। এরপর তাতে অল্প করে লেবুর রস মিশিয়ে গুলে নিন। একটু চেখে দেখে নিন। প্রয়োজনে আর একটু লেবুর রস মেশান। উপর থেকে বরফ কুচি দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।