অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ক্লান্তি, প্রিয়জনের বিপথগামিতায় অশান্তি ও মানহানির আশঙ্কা সাংসারিক ক্ষেত্রে মতানৈক্য এড়িয়ে চলা ... বিশদ
পৃথিবী এখনও অসুস্থ। তাই মানুষ গৃহবন্দি। দোকানপাট কিছু যা-ও বা খুলছে, তা-ও লোকে ভিড় করার সাহস পাচ্ছে না সেখানে। সর্বক্ষণ এক অজানা ত্রাস। তবু কালের নিয়মে ঋতু বদলাচ্ছে। এসেছে বাঙালির অন্যতম পার্বণ জামাইষষ্ঠী। কিন্তু এবছর শাশুড়িদের মনে সুখ নেই। বাজার দোকান খুলছে না ঠিকমতো। রেস্তরাঁয় গিয়ে মেয়ে-জামাইকে যে খাওয়াবেন, তারও উপায় নেই।
এমন পরিস্থিতিতে উৎসবের মেজাজ অটুট রাখতে আপনার দোরগোড়ায় হাজির ঘরোয়া কিচেন ক্যালকাটা কুকস। অভিনব উপায়ে জামাইষষ্ঠী পালন করার কথা ভেবেছেন এই কিচেনের কর্ণধার অনির্বাণ সেন। তিনি বললেন, ‘জামাইষষ্ঠীর মতো পার্বণ যাতে অতিমারীতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তাই বিশেষ এক থালি সাজিয়েছি আমরা। তাতে থাকবে মোরগ পোলাও, ভেটকি মাছের আম কাসুন্দি, কষা মাংস, চাটনি এবং পায়েস। দাম ৬০০ টাকা। থালি আমরা বাড়িতে পৌঁছে দেব। বেহালা বা নিউ আলিপুর অঞ্চলে হলে আলাদা ডেলিভারি চার্জ লাগবে না। তবে দূরে হলে দূরত্বের ওপর নির্ভর করবে সেই চার্জ।’
অর্ডারের কোনও সংখ্যা বা নির্দিষ্ট মূল্য ধার্য করা হয়নি, জানালেন অনির্বাণ। একটা অর্ডার করলেও তা পৌঁছে দেওয়া হবে। তাঁর কথায়, অনুষ্ঠানের আনন্দ যাতে মাটি না হয় তাই এই প্রয়াস। থালি না নিয়ে এর থেকে যে কোনও একটি পদও অর্ডার করতে পারেন। আবার কেউ যদি শুধু মিষ্টি অর্ডার দিতে চায়, তাও সম্ভব। জামাইষষ্ঠীর জন্য ওরা রসমালাই চিজকেক তৈরি করেছে। সেই কেক গোটা এবং স্লাইস দুভাবেই কেনা যাবে। ১ পাউন্ডের দাম ৫০০ টাকা। এক একটি স্লাইস ৬০ টাকা করে। অনির্বাণ এই বিশেষ থালি থেকে তিনটি রেসিপি দিলেন আপনাদের জন্য যা শিখে বাড়িতেও বানিয়ে ফেলতে পারেন।
ভেটকি আম কাসুন্দি
উপকরণ: ভেটকি মাছ ২ পিস (১৫০ গ্রাম ওজনের এক একটি), কাঁচা আম একটা (৪ টুকরো করে কাটা), সাদা সর্ষে ১ টেবিল চামচ, কাসুন্দি ২ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়ো ১ চা চামচ, রসুন ২ কুচি, ধনে পাতা সাজানোর জন্য, সর্ষের তেল ২ টেবিল চামচ, কাঁচা লঙ্কা ৪টে, নুন স্বাদ মতো, কলাপাতা বাঁধার জন্য।
পদ্ধতি: সাদা সর্ষের সঙ্গে ১ টুকরো কাঁচা আম, ২টো কাঁচা লঙ্কা, রসুন কুচি ও ১ চা চামচ সর্ষের তেল মিশিয়ে তা শীলে বেটে নিন। মাছে নুন ও হলুদ মাখিয়ে বেশ খানিকক্ষণ রেখে দিন। সর্ষের মিশ্রণের সঙ্গে ১ চামচ কাসুন্দি মিশিয়ে নিন। তাতে অল্প নুন ও হলুদ গুঁড়ো মেশান। এরপর নুন হলুদ মাখানো মাছে ১ চামচ তেল মেখে নিন। একটা কলাপাতায় প্রথমে সর্ষের মিশ্রণ খানিকটা দিন। তারপর মাছ রাখুন তার ওপর কাঁচা আমের একটা টুকরো ও একটা কাঁচা লঙ্কা দিন। তার ওপর একটু কাসুন্দি দিয়ে ওপর থেকে অল্প সর্ষের তেল ছড়িয়ে দিন। তারপর কলা পাতা মুড়িয়ে বেঁধে দিন। এবার তা ১৫ মিনিট ভাপিয়ে নিন। একইভাবে অন্য মাছটিও গড়ে ভাপিয়ে নিন। এরপর কলাপাতার মোড়ক খুলে ওপর থেকে ধনে পাতা কুচি দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
রসমালাই কেক
উপকরণ: সাদা তেল ৩/৪ কাপ, দই ১ কাপ, গুঁড়ো চিনি ১ কাপ, দুধ আধ কাপ, কেওড়া জল অল্প, হলুদ ফুড কালার ২ ফোঁটা, এলাচ গুঁড়ো আধ চা চামচ, জাফরান ২-৩ টে, ময়দা ২ কাপ, বেকিং পাউডার ২ চা চামচ, বেকিং সোডা সামান্য, হুইপিং ক্রিম ২ কাপ, রসমালাই ১ বাক্স।
পদ্ধতি: আভেন ১৮০ ডিগ্রিতে প্রিহিট করে নিন। দুধের সঙ্গে জাফরান আর এলাচ গুঁড়ো মিশিয়ে রেখে দিন। একটা পাত্রে দইয়ের সঙ্গে বেকিং সোডা মিশিয়ে রেখে দিন। দই ফুলে উঠবে। অন্য একটি পাত্রে চিনি গুঁড়োর সঙ্গে সাদা তেল মিশিয়ে ফেটিয়ে নিন। তাতে কেওড়া জল মেশান। এবার এই মিশ্রণের সঙ্গে দইয়ের মিশ্রণ মিশিয়ে নিন। এবং তাতে জাফরান গোলা দুধ মিশিয়ে দিন। ময়দার সঙ্গে বেকিং পাউডার মিশিয়ে তাতে অল্প অল্প করে ঢালুন ও গুলে নিন। এমন ভাবে গুলবেন যাতে কোন ড্যালা না থাকে। এই মিশ্রণ বেকিং বোলে ঢেলে ১৮০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ৩৫ মিনিট বেক করুন। কাঁটা চামচ গেঁথে দেখে নিন বেকিং সম্পূর্ণ হল কি না। হলে আভেন থেকে বার করে ঠান্ডা হতে দিন। ইতিমধ্যে হুইপিং ক্রিম ফেটিয়ে নিন। তার সঙ্গে রসমালাই মেশান। কেকের ওপর এই মিশ্রণ পুরু করে সাজান। ওপর থেকে পেস্তা কুচি ছড়িয়ে দিন। তারপর ফ্রিজে রেখে সেট করে নিন। বার করে ঠান্ডাই পরিবেশন করুন।
মোরগ পোলাও
উপকরণ: গোবিন্দভোগ চাল ৭৫০ গ্রাম, চিকেন ছোট টুকরো করে কাটা ৫০০ গ্রাম, দই ১৫০ গ্রাম, জায়ফল ১ চা চামচ, জয়িত্রী ১ চা চামচ, সর্ষের তেল আধ কাপ, টুকরো করে কাটা পেঁয়াজ ৩টে, আদা ও রসুন বাটা এক টেবিল চামচ করে, স্টার অ্যানিস, দারচিনি ও লবঙ্গ ২-৩ টে করে, ঘি ১ টেবিল চামচ, নুন স্বাদ মতো, চিনি ২ টেবিল চামচ, গোলমরিচ গুঁড়ো ২ টেবিল চামচ।
পদ্ধতি: চিকেনে নুন, গোলমরিচ, আদা রসুন বাটা, জায়ফল জয়িত্রী গুঁড়ো, অল্প চিনি ও সর্ষের তেল মাখিয়ে রাখুন। একটা পাত্রে তেল নিয়ে তা মাঝারি আঁচে বসিয়ে গরম করুন। তাতে কিছুটা পেঁয়াজ ভেজে নিন। তারপর দারচিনি, লবঙ্গ ও স্টার অ্যানিস দিন। সুগন্ধ বেরলে চিকেন দিয়ে দিন। ঢিমে আঁচে ভাজুন। খানিকক্ষণ ভাজার পর অল্প জল দিয়ে ঢাকা দিয়ে রান্না করুন। চিকেন সেদ্ধ হলে নামিয়ে নিন। একটা হাঁড়ি আঁচে বসিয়ে তাতে তেল গরম করুন। তাতে বাকি পেঁয়াজ ভাজুন। এরপর চাল দিয়ে আরও কিছুক্ষণ ভাজুন। এরপর বাকি সব মশলা দিয়ে চাল কষিয়ে নিন। নুন ও মিষ্টি দিন। তারপর পরিমাণ মতো জল দিয়ে রান্না করুন। চাল সেদ্ধ হলে চিকেন তাতে মিশিয়ে দিন। ওপর থেকে জায়ফলের গুঁড়ো ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।