সপরিবারে নিকট ভ্রমণের পরিকল্পনা। সহকর্মীরা কর্মক্ষেত্রে শত্রুতা করতে পারে। নতুন কোনও কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মক্ষেত্রে বদলির ... বিশদ
কয়েক মাস হল সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। কেমন লাগছে?
প্রচণ্ড পরিশ্রমের কাজ। কিন্তু নতুন ধরনের কাজ। আমি এনজয় করছি। প্রত্যেকটা কাজই নতুন অভিজ্ঞতার জন্ম দেয়। একেবারে যে কাজ জানতাম না, সেটাই এখন করছি, শিখছি। নতুন ধরনের মানুষ। নতুন জায়গা। আমি বলব, ‘লার্নিং এক্সপিরিয়েন্স’।
রাজনীতির দায়িত্ব পাওয়ার পর ‘দিদি নম্বর ওয়ান’-এর মঞ্চে কিছু বদল হল?
না। দিদি নম্বর ওয়ান-এর মঞ্চ একই আছে। কিছুই বদলায়নি। যে দিদিরা আসছেন, তাঁদের মধ্যেও কোনও পরিবর্তন নেই।
এত ব্যস্ততার মধ্যে নিজের যত্ন নিতে পারছেন?
(হাসি) চেষ্টা করছি! যতটুকু সম্ভব। সময় পেলে সকালের দিকে এক্সসারসাইজ করি বা হাঁটতে যাই। ঠিক সময়ে ঠিক খাবার খেয়ে নেওয়ার চেষ্টা করি। রূপচর্চা আগেও কোনওদিন সেভাবে করিনি। এখনও নতুন করে করার কিছু নেই। ভিতর থেকে নিজেকে সুন্দর রাখা দরকার। এটা আমি চিরকাল বিশ্বাস করেছি।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে রূপচর্চা করেন?
আসলে ঘরোয়া পদ্ধতিতে যত্ন নেওয়া সবসময় সম্ভব হয় না। আমার নিজস্ব ব্র্যান্ড রচনা’স কেয়ারের প্রোডাক্ট ব্যবহার করি। বাজারচলতি অন্যান্য প্রোডাক্টও ব্যবহার করি। ঘরোয়া জিনিস দিয়ে বাড়িতে প্যাক তৈরি করে মুখে লাগানোর সময় আমার নেই। বাইরে এখন ভালো প্রোডাক্ট পাওয়া যায়। চিরকাল মেকআপ তুলে তবে ঘুমতে গিয়েছি। সারাদিনের পর মুখ পরিষ্কার করতেই হবে। এটা বেসিক যত্ন। সকলেরই মেনটেন করা উচিত। সেটা না করলে ত্বক খারাপ হয়ে যাবে।
সুস্থ থাকতে খাবারও মেপে খান নিশ্চয়ই?
সবসময় বাড়ির খাবার খেতেই আমার ভালো লাগে। পরিস্থিতির কারণে বাইরের খাবার খেতে হয়। কিন্তু যতটা সম্ভব বাড়ির খাবারই খাওয়ার চেষ্টা করি। পরিমাণ মতো জল খাই, সবুজ শাকসব্জি, মরশুমি ফল— এগুলো খেলেই শরীর ভালো থাকবে।
আর মন ভালো রাখার উপায়?
মন ভালো রাখাও ভীষণ জরুরি। আমাকে আজ পর্যন্ত কোনও জিনিস এফেক্ট করেনি। আমি এতটাই হার্ডকোর মানুষ। কোনও কিছু আমার উপর প্রভাব ফেলতে পারে না। জীবনে যাই ঘটুক আমি মনে করি সেই পরিস্থিতির সম্মুখীন হব, বেরিয়ে চলে যাব। আমি কোনও জিনিস নিয়ে অত ভাবি না। জীবন যেভাবে আমার কাছে আসে, আমি সেটা সেভাবেই গ্রহণ করতে শিখেছি। পজিটিভিটি রাখতে হবে সবসময়। কে আমাকে কী বলল, আমার সম্বন্ধে কী লিখল, কে কী ভাবছে সেটা নিয়ে ভাবার সময়ই নেই আমার। এসব নিয়ে চিন্তা করা মানে অন্য মানুষকে প্রাধান্য দেওয়া। তাতে আমার কাজের ক্ষতি হবে। আমি জানি আমাকে ছুটতে হবে। কাজ করতে হবে। কে কী বলছে, সে নিয়ে বসে ভাবলে চলবে না।
এত ধরনের দায়িত্ব একসঙ্গে সামলান কীভাবে?
সকলের জীবন আলাদা। দায়িত্বও আলাদা। এক একজনের কাজের পরিস্থিতি এক একরকম। কেউ দশটা-পাঁচটা কাজ করে বাড়ি ফিরে আসতে পেরে খুশি। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কেউ সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত কাজ করে খুশি। কেউ আবার সংসার সামলাচ্ছেন পাশাপাশি চাকরিও করছেন, তাতেই খুশি। আমি তিন, চার রকম কাজের সঙ্গে যুক্ত। নিজের কাজ মন দিয়ে ভালোবেসে করতে হবে। পজিটিভিটি রাখতে হবে। তাহলেই সব ঠিক থাকবে। আমি প্রতিটা কাজ সমানভাবে এনজয় করছি। করতেই হবে, এমন ব্যাপার নয় কিন্তু। আমি যেটা করছি সেটা আমার কাছে এসেছে বলে করছি এবং ভালোবেসে করছি। যদি কাল মনে করি সব কিছু ছেড়ে ঘরে বসে থাকব, সেটাও কোনও ব্যাপার নয়। গত ৩০ বছর ধরে কাজ করছি। আই ডোন্ট নিড টু ওয়ার্ক এনি মোর। আমি ব্যস্ত থাকতে ভালোবাসি, কাজ করতে ভালোবাসি, তাই কাজ করছি।
ছেলের জন্য সময় কি কমে গিয়েছে?
ওই যে বললাম, ব্যালান্স। সব মায়ের কাছেই সন্তানকে সময় দেওয়া একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আমি আলাদা নই। হ্যাঁ, এতগুলো কাজের মধ্যে ওটাও ব্যালান্স করতে হচ্ছে। সেটা কঠিন। ওর এখন ক্লাস টুয়েলভ। পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। আমার কাজ নিয়ে ও খুব একটা মাথা ঘামায় না।
রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পর স্টাইল স্টেটমেন্ট বদলের কথা ভেবেছিলেন?
একেবারেই না। এত বছর ধরে মানুষ আমাকে যেভাবে দেখছেন, তার থেকে আলাদা কিছু করতে চাই না। শাড়ি পরে এত বছর ধরে ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ করেছি। শ্যুটিংয়েও শাড়ি পরেছি। আবার যখন শ্যুটিং করছি না বা পলিটিক্যাল ফিল্ডে নেই, তখন স্কার্ট পরেও ঘুরে বেড়াই।
শেষ কোথায় বেড়াতে গেলেন?
বেড়ানো আমার কাছে স্ট্রেস রিলিফ। তার জন্যও সময় বের করে নিতে হয়। কোনও কিছুর জন্য অন্য কিছু আপস করি না। আমি সবকিছুকেই প্রাধান্য দিয়ে অ্যাডজাস্ট করে নিই। একটা কিছু পাওয়ার জন্য অন্য আর একটা কিছু স্যাক্রিফাইস জীবনে করিনি। ব্যাঙ্কক আমার খুব পছন্দের জায়গা। মাঝেমধ্যেই যাই। গত মাসে ভিয়েতনাম ঘুরে এলাম।
সিনেমায় ফিরবেন?
সিনেমা করার প্রশ্নই নেই এখন। সময় নেই। অভিনয় অনেকদিন আগেই বন্ধ করে দিয়েছি। তা কিন্তু রাজনীতির জন্য নয়। ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ আমার প্রচুর সময় নিয়ে নেয়। সেজন্য সিনেমা করার ইচ্ছে অনেকদিন আগেই চলে গিয়েছিল। এখন তো আরওই সম্ভব নয়।
ব্যক্তি রচনার কিছু বদল হল?
মানুষ রচনা একই আছে। নিজেকে সমৃদ্ধ করছি। আমি বিশ্বাস করি, জীবনে যেটা আসছে সেটাই গ্রহণ করো। থিঙ্ক পজিটিভ। এটাই ভালো থাকার মূল কথা।