একাধিক সূত্রে অর্থপ্রাপ্তি ও ঋণশোধে মানসিক ভাব মুক্তি। নিজ বুদ্ধি ও দক্ষতায় কর্মোন্নতি ও সুনাম। ... বিশদ
তৌদি সাম্রাজ্যে পা রেখে নবাব-পুত্রের জন্য পোশাক বানানো কি মুখের কথা! সেই কাজটাই করে দেখিয়েছেন কলকাতার ডিজাইনার অভিষেক রায়। একটি সূত্রে যোগাযোগ তৈরি হওয়ায় অভিষেক জানতে পারেন, দীপাবলি উপলক্ষ্যে বাঙালি ছোঁয়া থাকবে এমন কুর্তা-পাজামা বানাতে চান বলিউড তারকা সইফ আলি খান। প্রস্তাব আসার পরে কেমন লেগেছিল? অভিষেক জানালেন, প্রথমে তাঁর নার্ভাস লেগেছিল ঠিকই। কিন্তু সইফের ব্যবহার এবং পোশাক দ্রুত পছন্দ হয়ে যাওয়ায় সেই বাধো বাধো ভাবটা একেবারে চলে গিয়েছিল।
গত বছর পুজোর মধ্যে সপ্তমীর দিন সইফের স্টাইলিস্ট যোগাযোগ করেন অভিষেকের সঙ্গে। তারপরে সরাসরি সইফের সঙ্গেই কথা হয় তাঁর। অভিষেকের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, এই যে বাঙালিঘেঁষা লুক চাইছিলেন, তাতে সইফের মা, অর্থাৎ শর্মিলা ঠাকুরের ভূমিকা কতটা ছিল? ডিজাইনার বললেন, ‘সরাসরি ওঁর সঙ্গে কথা হয়নি। তবে সইফ যে বাঙালি অভিজাত স্টাইল পছন্দ করেন, এতে তাঁর মায়ের ভূমিকা অবশ্যই রয়েছে। সইফ নিজেও বহুবার বলছেন মায়ের দিককার যে ‘এসথেটিক সেন্স’ রয়েছে, সেটা উনি নিজের মধ্যে আনতে চান। এমনিতেও খুব ক্লাসিক জিনিস পছন্দ করেন সইফ। খুব বেশি কাজ থাকবে পোশাকে, এমনটা চান না। সেটা মাথায় রেখেই আমাকে ডিজাইন করতে বলেছিলেন। চেয়েছিলেন, ফেলে আসা অতীতের ‘ক্লাসিক চার্ম’ যেন বজায় থাকে।’ সইফের নায়িকা স্ত্রী অর্থাৎ করিনার কোনও ভূমিকা ছিল এতে? জানা গেল, ‘না সইফ পুরোটাই নিজে বেছে নিয়েছেন।’
দুর্গাপুজোর পরে পোশাক তৈরি করে মুম্বইয়ে সইফের সঙ্গে দেখা করেন অভিষেক। প্রথম ট্রায়ালেই নবাবপুত্রের পোশাক পছন্দ হয়। ছোটখাট কয়েকটি পরিবর্তন সহ তাঁর তিনটি লুক ডিজাইন করেছিলেন অভিষেক। সইফের সেগুলো এতটাই পছন্দ হয়েছে যে পরবর্তীকালে রেগুলার ওয়্যারের জন্য কুর্তা পাজামাও ডিজাইন করাচ্ছেন অভিষেকের কাছ থেকে। শুধু সইফ নন, তাঁর দুই পুত্র তৈমুর এবং জাহাঙ্গীরের জন্যও টুইনিং সেট তৈরি করছেন ডিজাইনার।
শর্মিলা ঠাকুর এ শহরের অনেকটা কাছের। সইফ কতটা বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত? অভিষেক বললেন, ‘উনি পুরনো বাংলা সিনেমা দেখেন। কারণ আমাকে এমন বেশ কিছু পুরনো ছবির ক্লিপিং, স্ক্রিনশট মোবাইলে পাঠিয়েছেন। জানিয়েছেন, কোনও দৃশ্যে ব্যবহৃত পাঞ্জাবির সূক্ষ্ম কাজের কথা। সেভাবে ওঁর পাঞ্জাবিতে সাবুদানার সূক্ষ্ম কাজ করে দিয়েছি। নবাবি আদবকায়দার পাশাপাশি মায়ের স্টাইল, বাংলার সংস্কৃতি যে ওঁর পছন্দ এতে কোনও সন্দেহ নেই। আর উনি যে এত বড় তারকা, বা ওঁর বংশকৌলীন্য এসব মাথায় রেখে কথা বলছেন তা একবারও মনে হয়নি। বরং বোঝা গেল রাজরক্তের আভিজাত্য বিনয়েই। কাজ করা আরও সহজ হয়েছে কারণ উনি কী চান, সে ব্যাপারে ওঁর স্পষ্ট ধারণা রয়েছে।’