জলপথ পরিবহণ কর্মে বিশেষ শুভ। হস্তশিল্পী, হিসাব-শাস্ত্রবিদ প্রমুখের কর্মে উন্নতি ও সুনাম। মানসিক অস্থিরতা থাকবে। ... বিশদ
ব্রাহ্মণ, সাধু যুবা, শাস্ত্রজ্ঞ, সুদৃঢ় শরীর, বলিষ্ঠ, ধনাদিপূর্ণ, সমস্ত পৃথিবীর অধীশ্বর মানবের যে আনন্দ তা মানুষের পক্ষে শ্রেষ্ঠতম আনন্দ, সেই আনন্দ শতগুণিত হ’লে মনুষ্য-গন্ধর্ব্বদিগের ও অকামহত শ্রোত্রিয়ের একটি আনন্দ হয়। শতগুণ মানুষ-গন্ধর্ব্ব আনন্দ দেবগন্ধর্ব্বদের এবং নিষ্কাম শ্রোত্রিয়ের একটি আনন্দ হয়। তাঁদের সে আনন্দ শতগুণ হ’লে চিরলোকবাসি পিতৃগণের ও কামনাশূন্য শ্রোত্রিয়ের একটি আনন্দ হয়। তাঁদের সে আনন্দ শতগুণ হ’লে আজানজ দেবগণের ও নিষ্কাম শ্রোত্রিয়রত একটি আনন্দ হয়। তাঁদের সে আনন্দ শতগুণ হ’লে কর্মদেবগণের ও নিষ্কাম শ্রোত্রিয়ের একটি আনন্দ হয়। তাঁদের সে আনন্দ শতগুণ হ’লে দেবগণের ও অকামহত শ্রোত্রিয়ের একটি আনন্দ হয়। তাঁর আনন্দ শতগুণিত হ’লে প্রজাপতি ও অকামহত শ্রোত্রিয়ের একটি আনন্দ হয়। ব্রহ্মের ও তাঁর উপাসকের আনন্দই সংসারমণ্ডলে সকল অপেক্ষা উৎকৃষ্ট। “সুতরাং ব্রহ্মের আনন্দ শ্রেষ্ঠ মনুষ্যের আনন্দের ১০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০ (১-এর পর ২০টি শূন্য) গুণ।”
সংখ্যা তো ফুরিয়ে গেল। এক, দশ, শত, সহস্র, অযুত, লক্ষ, নিযুত, কোটি, অর্ব্বুদ, বৃন্দ, খর্ব্ব, নিখর্ব্ব, শঙ্খ, পদ্ম, সাগর, অন্ত্য, মধ্য, পরার্দ্ধ, ১৮তে পরার্দ্ধে সংখ্যার শেষ হ’ল। তারপর—এরূপ বলার, একের পর কুড়িটা শূন্য দেবার উদ্দেশ্য আনন্দের পরিমাণ কর্বার জন্য নয়—ব্রহ্মের আনন্দ অসীম অপরিমিত—ইহা বোঝবার জন্য। বৃহদারণ্যক শ্রুতি এরপর বলেছেন “অথৈষ এব পরম আনন্দ এষঃ ব্রহ্মলোকঃ সম্রাড়িতি হোবাচ যাজ্ঞবল্ক্যঃ” অনন্তর এই পরম আনন্দ এই ব্রহ্মলোক।
এ আনন্দ কি মানুষ লাভ কর্তে পারে?
নিশ্চয়ই, শ্রীভগবানের যাঁরা নাম করেন তাঁরা এ আনন্দলাভে সমর্থ হন।
নাম তো করি—কৈ, এমন আনন্দের কণামাত্র তো কখনও পাই নাই?
অতিতাপিত কেহ গঙ্গায় স্নান কর্তে নেমেছে, পাদস্পর্শের সঙ্গে সঙ্গেই তার গঙ্গাপ্রাপ্তি হয়েছে; ক্রমে যত অগ্রসর হ’তে থাকে তত তার তাপ দূর ও শরীর শীতল হ’তে থাকে, তারপর কণ্ঠ পর্য্যন্ত জলে যাওয়ার পর শরীরটা একবারে শীতল হ’য়ে যায়, সব শেষে ডুব দেওয়ার পর যে কি হয় তা সে বল্তে পারে না, তা ব্যক্ত কর্বার ভাষা নাই। সেইরূপ যে ভক্ত যতটুকু অগ্রসর হবেন তিনি ততটুকু আনন্দ পাবেন এতে কোন সংশয় নাই। আনন্দ চাও, অগ্রসর হও, নাম কর। সেই আনন্দ কম্পরূপে রোমাঞ্চরূপে তোমার শরীর ক্রীড়া করবেন। যখন রোমাঞ্চ হ’তে হ’তে বায়ু লয় হ’য়ে যায় তখন ভক্ত যে অবস্থা লাভ করেন তা বল্তে পারেন না; শেষে যখন সব ভরে যায় তখন নয়নদ্বারে অশ্রু-প্লাবন উপস্থিত হয়। কলসী ভরে গেলে তাতে জল ঢাল্লে যেমন পড়ে তদ্রূপ যখন আনন্দে দেহঘট ভ’রে যায় তখন আনন্দাশ্রু উপচে পড়ে।