মৃৎশিল্পী, ব্যবসায়ী প্রমুখদের বিশেষ কর্মোন্নতি যোগ প্রবল। পেশাদারি কর্মে শুভ ফল প্রাপ্তি। মানসিক চাঞ্চল্য। ... বিশদ
এরপরও কি বুঝতে বাকি থাকে কেন এরাজ্যের বহু গরিব মানুষকে স্রেফ কাজের খোঁঁজে অন্য রাজ্যে যেতে হয় এবং নানারকম অবাঞ্ছিত পরিস্থিতির শিকার হন তাঁরা? এবার গোদের উপর বিষফোঁড়া ‘ম্যান-মেড’ বন্যা। তার ফলে অসংখ্য কাঁচাবাড়ি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যুরও ঘটেছে কয়েকটি। সরকারি প্রকল্প চালু থাকতেও কেন কিছু মানুষ মাটির অস্বাস্থ্যকর ঘরে বসবাস করবেন? কেন অকাল মৃত্যুর শিকার হবেন তাঁরা? এর দায় কেন্দ্র নেবে না কেন? এমন জোরালো প্রতিবাদ যখন ধ্বনিত হয়, তখনই কেন্দ্রের পাপকে আড়াল করতে আসরে অবতীর্ণ হন বঙ্গ বিজেপির কিছু নেতা। এমনকী কেউ কেউ তো দিল্লি গিয়েও দরবার করেন, যাতে বাংলার সঙ্গে বঞ্চনার কারবারটি আরও জোরদার হতে পারে। তাহলে নাকি বাংলার শাসক দল এবং বাংলার জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘টাইট’ হবেন! এরপরও কি বিশ্বাস করতে হবে, বিজেপি নেতারা মানুষের জন্য রাজনীতি করেন এবং পদ্মপার্টি বাংলার ভালো চায়?
যাই হোক, এবার হাজার ফন্দি ফিকির করেও শহুরে আবাস প্রকল্পের টাকাটা দিল্লির মাতব্বররা আটকাতে পারেননি। বাগড়া দেওয়ার মতো ‘মহান’ কর্মে বঙ্গ বিজেপির কেষ্টবিষ্টুরাও ডাহা ফেল করেছেন। শহুরে আবাস প্রকল্পের অধীনে নির্মিত বাড়ির গায়ে কেন্দ্রের ঠিক করে দেওয়া ‘লোগো’ বসানো-সহ একগুচ্ছ শর্ত ছিল। সেগুলি ঠিকমতো মানা হচ্ছে কি না, তা দেখতে বাংলায় পর্যবেক্ষক দলও পাঠিয়ে ছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তাঁরা পরিদর্শনে এসেও রাজ্যের পুর এলাকায় আবাস প্রকল্প নিয়ে কোনোরকম অনিয়ম খুঁজে পাননি। বাংলাকে ক্লিনচিট দিয়েই কেন্দ্রের কাছে তাঁরা রিপোর্ট জমা দেন। এর আগে ছ’মাস আটকে রাখার পর, গত মার্চ-এপ্রিলে শহুরে আবাস প্রকল্পে রাজ্যের প্রাপ্য ৫০০ কোটি টাকা ছাড়তে বাধ্য হয় মোদি সরকার। এবার আসছে পরবর্তী পর্যায়ের ১৯০ কোটি টাকা। ফলে এই ক্ষেত্রে রাজ্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার সমস্ত দরজা বিরোধীদের সামনে বন্ধই হয়ে গেল। বিজেপি সত্যিই যদি বাংলার রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক থাকতে চায়, তবে মোদি সরকারের উচিত, মনরেগা এবং গ্রামীণ আবাস-সহ কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলিতে নবান্নের প্রাপ্য যেন দ্রুত মিটিয়ে দেয় তারা। বন্যার ক্ষয়ক্ষতি পূরণেও তৎপর হতে হবে দিল্লিকে। নিম্ন দামোদর অববাহিকা এবং ঘাটাল-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার বন্যা সমস্যার স্থায়ী সমাধানেও আন্তরিক হতে হবে কেন্দ্রকে। কেন্দ্রীয় এজেন্সিরাজ এবং অজুহাতের রাজনীতির ধার ভোঁঁতা হয়ে গিয়েছে। এসব আঁকড়ে থাকলে ক্ষতিবৃদ্ধি হবে বিজেপিরই। আম জনতার তা না ভাবলেও চলবে যদিও, কিন্তু গেরুয়া শিবিরের এই ঘৃণ্য রাজনীতির যূপকাষ্ঠে যে বাংলার গরিব মানুষগুলি! তাই ভাবনাটি থেকে অন্যরাও কোনোভাবে পৃথক হতে পারছে না।