কাপড়ের ব্যবসায় অগ্রগতি। পেশাদার শিল্পীদের পক্ষে দিনটি শুভ। উচ্চ/উচ্চতর শিক্ষায় উন্নতি। ... বিশদ
আর জি কর মামলায় বিক্ষোভরত চিকিৎসকদের উদ্দেশে ৯ সেপ্টেম্বর দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের স্পষ্ট নির্দেশ ছিল, ‘দায়িত্বে অবহেলা করে প্রতিবাদ হয় না। ১০ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার মধ্যে জুনিয়র ডাক্তাররা কাজে যোগ দিন।’ একইসঙ্গে তাঁর স্পষ্ট বার্তা, ‘নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজে ফিরলে রাজ্য সরকার তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেবে না। বাকিটার জন্য সিবিআই তদন্ত যথারীতি চলবে। ১৭ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানির দিনই নতুন স্টেটাস রিপোর্ট দেবে সিবিআই।’ আর জি কর কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টের স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় তৃতীয় শুনানি শেষে এটাই ছিল সিদ্ধান্ত। পরিষ্কার যে, অপরাধের তদন্তের পাশে কোর্ট সমান গুরুত্ব দিয়েছে চিকিৎসা সঙ্কটকেও। তাদের সেদিনের ভূমিকায় দেশের বিচার ব্যবস্থার মানবিক মুখটিই পরিস্ফুট হয়ে ওঠে। এর থেকেই বোঝা যায়, আদালতের উপরেই কেন মানুষ তার শেষ আস্থাটি স্থাপন করেছে। সেদিন নিরপেক্ষ অভিভাবকের মতো শীর্ষ আদালত সাবধানও করে দিয়েছিল, ‘এরপরও যদি জুনিয়র ডাক্তাররা কাজে না ফেরেন এবং তার প্রেক্ষিতে সরকার ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নিলে আমাদের কিছু বলার থাকবে না।’
রাজ্যে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতিসহ ধর্না কর্মসূচির শুরু ৯ আগস্ট। অর্থাৎ, শীর্ষ আদালতে ওই নির্দেশ ঘোষিত হয় আন্দোলনের একমাসের মাথায়। আমরা জানি, আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও জুনিয়র ডাক্তাররা যথাসময়ে কাজে যোগ দেননি। তবু তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি রাজ্য সরকার। উল্টে, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই বারবার অনুরোধ করেছেন তাঁদের কাজে ফেরার জন্য। তার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে আলোচনাও চেয়েছেন তিনি একাধিকবার। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তরুণী চিকিৎসকের উপর সংঘটিত অপরাধের শাস্তির ব্যাপারে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তিনিও সহমত পোষণ করেন। এমন অপরাধীর ফাঁসিই চান তিনি। সেই শাস্তি দ্রুত দিতে ইতিমধ্যেই তাঁর সরকার নতুন আইন তৈরিরও উদ্যোগ নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, গণতন্ত্রে জট খোলার শ্রেষ্ঠ উপায় হল আলোচনা। এই ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট অফিসারদেরও আন্তরিক ভূমিকা প্রশংসনীয়। কিন্তু আলোচনায় বসার চার চারটি সুযোগ নষ্ট করা হয়েছে আন্দোলনকারীদেরই তরফে। নেপথ্যে, লাশের উপর দিয়ে ক্ষমতা দখলের রাজনীতির কারবারিদের কালো ছায়া আর গোপন নেই। সব মিলিয়ে, আদালত কঠোর অবস্থান গ্রহণের পরও একসপ্তাহ অতিক্রান্ত। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের এটি ষষ্ঠ সপ্তাহ। সুপ্রিম কোর্টে আজ ফের শুনানি। আদালত নিশ্চয় এই প্রত্যাশায় আছে যে চিকিৎসা চালুর ব্যাপারে এদিন কোনও সুখবরই আসছে বাংলা থেকে। রাজ্যবাসীও জুনিয়র ডাক্তারদের বিবেক জাগ্রত হওয়ার প্রহর গুনছে।