কাপড়ের ব্যবসায় অগ্রগতি। পেশাদার শিল্পীদের পক্ষে দিনটি শুভ। উচ্চ/উচ্চতর শিক্ষায় উন্নতি। ... বিশদ
পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দাদের দাবি, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই শহরে বাজি ফাটার আওয়াজ কানে আসছিল। মধ্যরাত হতেই তা মাত্রা ছাড়ায়। ভোরে আর কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিল না। মুহুর্মুহু বাজির আওয়াজে কান ঝালাপালা হয়ে যেতে থাকে। অস্থির হয়ে পড়ে শিশু থেকে বয়স্ক, সকলেই। সারারাত চোখের পাতা এক করতে পারেনি শহরের অধিকাংশ মানুষ। হাসপাতালের রোগীদের অবস্থা হয়ে যায় আরও করুণ। একই অভিযোগ ঝলদাতেও। বাসিন্দাদের একাংশের ক্ষোভ, এই আওয়াজ কী কানে পুলিস প্রশাসনের আধিকারিকদের কানে পৌঁছয় না? এরকম বিকট শব্দের শব্দবাজি যেখানে নিষিদ্ধ, সেখানে শহরে এসব বাজি পাওয়া যায় কী করে? তাঁদের অভিযোগ, পুলিস প্রশাসনের মদত না থাকলে একাজ কখনই সম্ভব নয়। যদিও পুলিসের এক আধিকারিকের দাবি, গত বছরের থেকে শব্দবাজি কম ফেটেছে।
পুরুলিয়া শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রণব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘বাড়িতে অসুস্থ স্ত্রী রয়েছে। বিকট আওয়াজে সারারাত ছটফট করেছে। কানে তুলো দিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু, বাজির দাপট এমন ছিল, সবই বিফলে গিয়েছে।’ তাঁর ক্ষোভ, ‘প্রতি বছর মহালয়ার মতো একটা পুণ্যলগ্ন আমাদের কাছে আতঙ্কের হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
সৌমী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘রাস্তার কুকুরগুলো যেন কুঁকড়ে গিয়েছিল। বাড়ির কুকুরটা অনবরত ছটফট করছিল। যাঁরা শব্দবাজি ফাটানোকে উত্সব বলে মনে করেন, তাঁরা কি একবারের জন্যও এগুলি ভাবেন না?’
প্রতিদিন সাহেববাঁধে প্রাতঃভ্রমণ করেন অনিমেষ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘মহালয়া শুনে প্রাতঃভ্রমণে বের হব ভেবেছিলাম। কিন্তু যেভাবে বাজি ফাটতে শুরু করল তাতে ভয়ে আর বেরতে পারলাম না।’ বাজির দাপটে সন্তানদের নিয়ে সারারাত ঘুমাতে পারেননি জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই আধিকারিকের ক্ষোভ, ‘কয়েক মাস হল পোস্টিং নিয়ে পুরুলিয়ায় এসেছি। কর্মসূত্রে আগে বহু জেলা ঘুরেছি, তবে মহালয়ায় এরকম বাজির অত্যাচার অন্য কোনও জেলায় দেখিনি।’
প্রসঙ্গত, গত বছর একের পর এক বাজি বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছে বাংলা। বিস্ফোরণে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে বহু মানুষের। বেআইনি বাজি কারখানা বন্ধের ব্যাপারে সক্রিয় হয় রাজ্য সরকার। সবুজ বাজি তৈরির ছাড়পত্র দেওয়া হয়। সরকারি উদ্যোগেই সবুজ বাজির বাজার তৈরি হয় জেলায় জেলায়। পুরুলিয়াতেও হয়েছে এবছর। তারমধ্যেই রমরমিয়ে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ শব্দ বাজি। শহরবাসীর একাংশের অভিযোগ, পুলিস প্রশাসন সবই জানে। কিন্তু, কোনও ব্যবস্থাই নেয় না। কোথাও বাজি বিস্ফোরণ হলে দু’একদিন এনআইএ ধরপাকড় চলে। তারপর সব চুপচাপ। এনিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টিও আকর্ষণ করেছে বাসিন্দাদের একাংশ।