ব্যবসাসূত্রে উপার্জন বৃদ্ধি। বিদ্যায় মানসিক চঞ্চলতা বাধার কারণ হতে পারে। গুরুজনদের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন থাকা ... বিশদ
আমাদের দেশে সব ব্যবসায়ীই যে সাধু এমনটা ভাবার কোনও অবকাশ নেই। বহু অসাধু ব্যবসায়ী আছেন। খাদ্যে ভেজাল বিশেষত শিশুখাদ্যে ভেজাল মারাত্মক অপরাধ জেনেও এই কুকর্মটি করতে তাঁদের অনেকেরই বাধে না। কখনও কখনও ভেজাল বেবি ফুড বা ভেজাল খাদ্য ধরাও পড়ে। পুরসভার তরফে ধরপাকড়ও হয়। ভেজাল দেওয়ার বিষয়টিকে বাদ দিলেও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় যে উদ্বেগজনক বিষয়টি ধরা পড়েছে তা হল, কিছু বেবি ফুড, হেল্থ ড্রিঙ্কস, চকোলেট প্রভৃতি যে কাঁচামাল দিয়ে তৈরি হচ্ছে সেখানেই রয়েছে এমন বিষ যা শিশুর স্বাস্থ্যের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর এবং যা ডেকে আনতে পারে ভয়ানক বিপদ। এর ফলে শিশুদের ক্ষেত্রে একাধিক রোগ বা অন্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেই সম্ভাবনাটিকে গবেষকরা উড়িয়ে দিতে পারছেন না। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের পরীক্ষার ফলটি সঠিক কি না তা যাচাইয়ের জন্য বিদেশের ল্যাবরেটারিতেও কিছু নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল এবং সেখান থেকে একই তথ্য মিলেছে। দেখা গেছে, নমুনার খাবারে মারাত্মক পরিমাণে অ্যাফলাটক্সিন এবং জীবাণু থেকে উৎপন্ন হওয়া বিষাক্ত উপাদান ডি-অক্সিনিভালেনল (ডন) রয়েছে যা শরীরে গেলে নানা ক্ষতি করতে পারে। গবেষকদের মতে, মাত্রাতিরিক্ত অ্যাফলাটক্সিন শরীরে ঢুকলে শিশুর হজমশক্তি, স্মৃতিশক্তি কমতে পারে। আশঙ্কা থাকছে ক্যান্সারেরও। এই অ্যাফলাটক্সিনের অনুমোদনযোগ্য মাত্রার নিয়ম অবশ্য একেক দেশে একেক রকম। সর্বত্র একটা অভিন্ন নিয়ম না থাকাতেই বিপত্তি। এছাড়াও তাপমাত্রার হেরফের এবং সংরক্ষণ প্রক্রিয়ায় গলদ থাকলে খাদ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়।
এভাবে অসতর্কতার সুযোগে শিশুর শরীরে যাতে কোনওভাবেই বিষ বা ক্ষতিকারক জীবাণু না ঢুকতে পারে তার জন্য সচেতন হওয়াটা সবচেয়ে জরুরি। তাই শিশুর স্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ঠেকাতে বিভিন্ন খাবার তৈরির নিয়ম ও বিধিতে আরও কড়াকড়ি করা প্রয়োজন। শুধু কড়াকড়ি করলেই হবে না নিয়মগুলি মানা হচ্ছে কি না সেদিকেও নজরদারি চালাতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিয়মে খাবারে অ্যাফলাটক্সিনের পরিমাণ বেঁধে দেওয়া থাকলেও ভারতে সেই নিয়ম প্রায় মানাই হয় না বলে অভিযোগ। এমনিতেই আমাদের দেশে বহু শিশু অপুষ্টিতে ভোগে। তার উপর বেবি ফুড বা অন্য খাদ্যের মাধ্যমে শিশু শরীরে বিষ ঢুকলে তার ফল মারাত্মক হতে বাধ্য। ভুললে চলবে না এই শিশুরাই আগামী দিনে দেশের ভবিষ্যত। তারা কমজোরি দুর্বল হয়ে পড়লে দেশ এগতে পারে না। তাই শিশুর পুষ্টি যাতে যথাযথ হয় সেদিকে নজর দিতে হবে। শিশুখাদ্যে ভেজাল বা বিষ রুখতে সরকারকেই সবার আগে উদ্যোগী হতে হবে। নিয়ম মেনে খাদ্য তৈরি হচ্ছে কি না তা দেখতে সরকারি তরফে কড়া নজরদারি ও উপযুক্ত ব্যবস্থাগ্রহণ প্রয়োজন।