নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে বহু ছোট ও মাঝারি শিল্প আছে, যারা অভিনবত্বের দাবিদার। তাদের স্থানীয় ও রপ্তানির বাজার যাতে বৃদ্ধি পায়, তার জন্য এবার এগিয়ে আসছে কেন্দ্রীয় ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প মন্ত্রক। আগামী ৪ মার্চ বুধবার শহরে শুরু হচ্ছে চার দিনের ন্যাশনাল মেগা ট্রেড ফেয়ার, যেখানে অংশগ্রহণ করবে রাজ্যের বহু ছোট শিল্প সংস্থা। তবে ওই মেলায় পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি হাজির থাকছে উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির সঙ্গে সিকিম, আন্দামান ও নিকোবরও। শুধু বাংলা নয়, দেশে এই প্রথম এমন ট্রেড ফেয়ারের আয়োজন করছে কেন্দ্রীয় সরকার, এমনটাই দাবি করেছেন এখানকার কর্তারা। রাসেল স্ট্রিটের মেঘালয় হাউসে ওই ট্রেড ফেয়ার অনুষ্ঠিত হবে।
রাজ্যের ক্ষুদ্র উদ্যোগপতিদের উৎসাহ দিতে গত বছর পুজোর আগে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে কেন্দ্রীয় সরকারের এমএসএমই ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট। তার নাম দেওয়া হয় ‘উদ্ভাবনী উদ্যোগ উৎকর্ষ উৎসব শারদ সম্মান’। সংক্ষেপে ফোর ইউ শারদ সম্মান। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘উদ্যোগ আধার মেমোরেন্ডাম’-এ যেসব উদ্যোগপতিরা নাম নথিভুক্ত করিয়ে রেখেছেন, তাঁরা ওই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। মোট চারটি বিভাগে প্রতিযোগিতা হয়। উপহার সামগ্রী, ডিজাইনার পোশাক, কস্টিউম জুয়েলারি বা ঝুটো গয়না এবং পরিবেশ বান্ধব ব্যাগ— এই চারটি পণ্যের উপর পুরস্কারের ব্যবস্থা করে মন্ত্রক। সফল প্রতিযোগীদের জন্য বিপণনে সাহায্য করা হবে, এমন প্রতিশ্রুতি দেয় মন্ত্রক। চলতি মাসে যে ট্রেড ফেয়ারের আয়োজন করা হচ্ছে, সেখানে তাঁরা সুযোগ পাবেন বলে জানা গিয়েছে।
এমএসএমই’র ডেপুটি ডিরেক্টর প্রদীপকুমার দাস বলেন, আমরা এখানে প্রদর্শনীর পাশাপাশি নানা আলোচনাসভার আয়োজন করেছি, যেখান থেকে উদ্যোগপতিরা উপকৃত হবেন। প্রায় ১৩০টি স্টল থাকছে, যার মধ্যে প্রায় ৬০টি স্টল থাকবে পশ্চিমবঙ্গ থেকে। এই মেলার আগে আমরা অংশগ্রহণকারী সবক’টি রাজ্যে হাজির হয়ে বৈঠক করেছি সেখানকার শিল্প সংস্থাগুলির সঙ্গে। তাদের চাহিদা কী, বাজারই বা কী, সেই বিষয়ে আরও দিশা দেখা঩নোই কেন্দ্রীয় সরকারের মূল লক্ষ্য। তাই ওই চার দিনের অনুষ্ঠানে আমরা বিভিন্ন ক্রেতা সংস্থা, এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিল, নামজাদা ম্যানেজমেন্ট ও টেকনিক্যাল সংস্থাকে হাজির করছি। এক্ষেত্রে যেমন রপ্তানির সুযোগ বাড়বে, তেমন রপ্তানিতে জোর দিতে কী কী প্রয়োজন, সেই বিষয়েও ধারণা পাবে সংস্থাগুলি। কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে মূল অনুষ্ঠানকে। এর মধ্যে আছে হ্যান্ডলুম ও হ্যান্ডিক্রাফ্ট বা হস্তশিল্প, স্বাস্থ্য পরিষেবা, পর্যটন ও হসপিট্যালিটি এবং অর্গানিক, হোমিওপ্যাথি বা আয়ুষের মতো ক্ষেত্রগুলিতে পরিষেবা। এই ক্ষেত্রগুলিতে ছোট ও মাঝারি শিল্প কী কাজে লাগতে পারে, সেই সম্পর্কে ধারণা পাবে সংস্থাগুলি। যেহেতু এটি সম্পূর্ণভাবে ব্যবসায়িক ট্রেড ফেয়ার, তাই এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলি মেলা থেকে উপকৃত হবে, দাবি প্রদীপবাবুর। তিনি বলেন, বহু সংস্থা আমাদের কাছে স্টল নেওয়ার জন্য আবেদন করেছিল। কিন্তু জায়গার অভাবে আমরা সবাইকে ঠাঁই দিতে পারিনি। প্রথমবার যে উদ্যোগ নেওয়া হল, তা শেষ পর্যন্ত সফল হবে বলেই আশা করছি।