কর্মোন্নতি ও কর্মের প্রসার। সামাজিক সুনাম বৃদ্ধি। শারীরিক সমস্যার আশঙ্কা। ধনাগম মন্দ নয়। দাম্পত্যে চাপ, ... বিশদ
এটি আগে রায় পরিবার বা জমিদার বাড়ির পুজো হিসেবে পরিচিত ছিল। সূচনা করেন তৎকালীন জমিদার রামতারণ রায়। ছিলেন নায়েব, খাজাঞ্চি, গোমস্তা সহ পাইক-পেয়াদার দল। তাঁরা প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা আদায় করতেন। সেসময় ১৫দিন আগেই বোধন থেকে দেবীর পুজোয় মাততেন প্রজারা। তখন গ্রামে আর কোনও পুজো হতো না। মাটির মন্দিরে পুজোর সূচনা হয়। আজও জমিদারদের নিজস্ব পুকুর থেকে ঘট ভরে পুজোর সূচনা হয়। প্রাচীন রীতি মেনে ঘট ভরার আগে পুকুরপাড়ে লালপাড় শাড়ি পরা এক সধবা মহিলাকে কাঁখে কলসি নিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। গ্রামের মহিলারা সামনে জলের ধারা দিয়ে তাঁকে মণ্ডপে আনেন। সেখানে পরিবারের মহিলারা তাঁকে বরণ করেন। সেই কলসি প্রতিষ্ঠা করে তৃতীয়া পর্যন্ত ঘট পুজো হয়। প্রাচীন রীতিতে এদিন ছাগ বলি হয়। ওইদিন গ্রামের মহিলারা উপবাস থাকেন। বলির রক্তমাখা খড়্গ নিয়ে গ্রাম প্রদক্ষিণ করা হয়। সেই খড়্গ দেখেই উপবাস ভাঙেন মহিলারা। মহালয়ায় মৃন্ময়ী মূর্তির চক্ষুদানের পর চতুর্থী থেকে দশমী পর্যন্ত চলে পুজো। বর্তমানে পুজোর জৌলুস কিছুটা পড়তির দিকে হলেও আজও নিষ্ঠার সঙ্গে তা চালাচ্ছেন পরিবারের উত্তর পুরুষরা।
তাঁরা জানান, বংশের পঞ্চম পুরুষ ক্ষীরোদ রায়ের পাঁচ মেয়ের মধ্যে মেজ সুধারানিকে পুজোর দায়িত্ব দিয়ে যান তিনি। সুধারানিদেবীর সঙ্গে বিশ্বনাথ ভট্টাচার্যের বিয়ে হওয়ার পর থেকে পুজোটি ভট্টাচার্য পরিবারের পুজো হিসাবে প্রসিদ্ধি পায়। বর্তমান বংশধর অরিন্দম ভট্টাচার্য বলেন, এটি পারিবারিক পুজো হলেও গোটা গ্রামের মানুষ অংশ নেন। পুজোর দিনগুলিতে গ্রামবাসীদের ঠিকানা হয়ে ওঠে এই দুর্গামন্দির।
নলহাটি লাগোয়া ভদ্রপুর গ্রামের সিংহ পরিবারের ২৬০বছরের প্রাচীন দুর্গাপুজোটি আজও চালাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। এই গ্রামে দেবী কন্যা রূপে পূজিতা হন। জনশ্রুতি, স্বপ্নাদেশ পেয়ে গ্রামের শশধর সিংহ মায়ের আরাধনা শুরু করেন। একদা গ্রামের ষষ্ঠী শাঁখারি শাঁখা পরাতে সীমলান্ধী যাচ্ছিলেন। পথে হরিসাগর পুকুর পাড়ে এক কিশোরী শাঁখা পরে শশধর সিংহকে বাবা পরিচয় দিয়ে তাঁর কাছ থেকে কড়ি নিতে বলে। শাঁখারির মুখে একথা শুনে বিস্মিত হন কন্যাহীন শশধর। তাঁর নাম করে শাঁখা পরল কে? তিনি পুকুর পাড়ে যেতেই শাঁখা সহ চার হাত তুলে দেখা দেন দেবী দুর্গা। ওই রাতেই শশধর স্বপ্নাদেশ পান, আমি কন্যা রূপে তোমার ঘরে যাব, তোমার পুজো নেব। সেই থেকেই পুজোর প্রচলন। প্রায় ৭১বছর আগে সিংহ পরিবারের অবলুপ্তি ঘটে। পুজো টিকিয়ে রাখতে এগিয়ে আসেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের আশঙ্কা, পুজো বন্ধ হলে গ্রামে বিপদ ঘটবে। তাঁরা বলেন, মায়ের নামে চার বিঘে জমি রয়েছে। তার আয় ও গ্রামবাসীদের চাঁদায় ফি-বছর পুজো হয়।