কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতির সূচনা। ব্যবসায়ীদের উন্নতির আশা রয়েছে। বিদ্যার্থীদের সাফল্যযোগ আছে। আত্মীয়দের সঙ্গে মনোমালিন্য দেখা দেবে। ... বিশদ
জানা গিয়েছে, বুধবার রাত থেকে বীরভূম জেলাজুড়ে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়। রাতে কিছু সময়ের জন্য থামলেও পরে ফের শুরু হয়। বৃহস্পতিবার সারাদিনই নিম্নচাপের ঝিরঝিরে বৃষ্টি হয়েছে। কখনও আবার ভারী বৃষ্টিপাতও হয়েছে। ফলে, সদর শহর সিউড়ির পাশাপাশি মহকুমা শহরগুলিতে জনজীবন ব্যাপকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে। এদিন সিউড়ি শহরে বহু দোকানপাট বন্ধ ছিল। রাস্তায় লোকজনও সেভাবে দেখা যায়নি। ফলে, বাসিন্দারা অনেকেই নানা কারণে বিপাকে পড়েছেন।
কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সিউড়ি মহকুমায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। রামপুরহাট মহকুমায় বৃষ্টি হয়েছে ১২.৮মিলিমিটার। বোলপুরে বৃষ্টি হয়েছে ২৬.৮মিলিমিটার। এছাড়া সিউড়ি মহকুমায় বৃষ্টি হয়েছে ৭৫.৪মিলিমিটার। যদিও সকালের পর থেকে এদিন তিন মহকুমাতেই তুমুল বৃষ্টি হয়েছে। তার পরিমাণ অবশ্য এদিন জানা যায়নি। কৃষি দপ্তরের আধিকারিকদের দাবি, এদিন পর্যন্ত যা বৃষ্টি হয়েছে তাতে চাষে সেভাবে ক্ষতি না হলেও পরে আরও বৃষ্টি হলে সমস্যা হতে পারে। সেক্ষেত্রে শীতকালীন ফসল বা ধান চাষেও ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
বৃষ্টির জেরে এদিন বীরভূমের বিভিন্ন পুজোমণ্ডপের সামনে জল দাঁড়িয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও জল নিকাশি করে বালি বা পাথরের গুঁড়ো দিয়েছে। কোথাও আবার পুজোমণ্ডপের সামনে কাদা হয়ে গিয়েছে। সেখানে চলাচল করা যাচ্ছে না। কোনও উদ্যোক্তা আবার মণ্ডপ বাঁচাতে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রেখেছেন।
সিউড়ির ত্রাণ সমিতি ক্লাবের পক্ষে তথাগত দাস বলেন, বৃষ্টির জেরে কাজ পুরো থমকে গিয়েছে। শ্রমিকরা এই পরিস্থিতিতে মণ্ডপ নির্মাণের কাজ করতে পারছেন না। সিউড়ির সুভাষপল্লি কালীমন্দির কমিটির সম্পাদক জয়ন্ত দাস বলেন, বৃষ্টির জেরে মণ্ডপের বাইরে কাজ থমকে গিয়েছে। ভিতরে কোনওভাবে চলছে। দুবারজপুরের জনকল্যাণ সমিতির পক্ষে রঞ্জন মিশ্র বলেন, আমরাও বৃষ্টির কারণে কাজ করতে পারছি না।
সিউড়ির এক মৃৎশিল্পী প্রকাশ মাল বলেন, বৃষ্টির জন্য কাজ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বাইরে প্রায় ১৫টি প্রতিমা অসম্পূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সেগুলি ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখতে হয়েছে। মাটি বৃষ্টির জলে গলতে বসেছে।
রামপুরহাটে একাধিক মণ্ডপের কাজ প্রায় শেষের মুখে। কিন্তু, বৃষ্টির জেরে সেইসব মণ্ডপে কাজ থমকে। জনজীবনও বিপর্যস্ত। ধনতেরাস উপলক্ষে ব্যবসাও মার খেয়েছে। বাসিন্দারা সেভাবে বাড়ি থেকে বেরতে পারেননি। মৃৎশিল্পীরাও বিপাকে পড়েছেন। তাঁরা আগুনের আঁচ দিয়ে মাটির প্রদীপ সেঁকার কাজ করছেন। রামপুরহাটের হাইস্কুল মাঠে মায়াপুর ইসকনের আদলে কালীপুজোর মণ্ডপ নির্মাণ করছে ডাকবাংলো পাড়া প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন। দুর্গাপুজোর অনেক আগে থেকেই তাঁরা মণ্ডপ নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। উদ্যোক্তা তথা রামপুরহাট পুরসভার ৪নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার আব্বাস হোসেন বলেন, আগামী রবিবার সন্ধ্যায় পুজোমণ্ডপের উদ্বোধন হবে। আমরা ভেবেছিলাম শনিবারের মধ্যেই আলোকসজ্জা, মণ্ডপ নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ করে ফেলব। কিন্তু, যেভাবে টানা বৃষ্টি শুরু হয়েছে তাতে তা সম্পূর্ণ হবে কি না তা নিয়ে চিন্তা হচ্ছে। এখন মণ্ডপের ভিতরে কাজ কোনওভাবে চালানো হচ্ছে। বোলপুরের নেতাজি ক্লাবের সম্পাদক সংলাপ বিশ্বাস বলেন, কালীপুজোর মণ্ডপে সাজসজ্জার কাজ বৃষ্টির কারণে পুরোপুরি ব্যাহত হয়েছে। বৃষ্টির ফলে শ্রমিকরাও কাজ করতে চাইছেন না। ডেকোরেশনের সামগ্রীগুলি বিভিন্নভাবে শেডে রেখে কাজ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কাজ শেষ করার লক্ষ্যে এবার মণ্ডপের একাংশ ত্রিপল দিয়ে ঢেকে কাজ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া বোলপুর মহকুমায় যেসব কম বাজেটের পুজোগুলি রয়েছে বৃষ্টির কারণে তারা বিপাকে পড়েছে। একাধিক কাজকর্ম থমকে গিয়েছে।