পারিবারিক ক্ষেত্রে কলহের আশঙ্কা। ঠান্ডা মাথায় চলুন। বিজ্ঞানী, ব্যবসায়ী, সাহিত্যিকদের শুভ সময়। ... বিশদ
টানা তিনদিন ধরে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে তদন্ত চালিয়েও রহস্য ভেদ করতে পারেনি রেল। এখন পর্যন্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনের চালক, তিনজন গেটম্যান, রাঙাপাননির স্টেশন ম্যানেজার সহ ১৬ জনের বয়ান নথিভুক্ত করেছে কমিশনার্স অব রেলওয়ে সেফটি (সিআরএস) জনককুমার গর্গ। রেল সূত্রের খবর, কখনও এককভাবে, আবার দু’জন কর্মীকে মুখোমুখি বসিয়ে বয়ান নেওয়া হয়। ডিআরএম বলেন, ট্রেন দুর্ঘটনার তদন্ত চলছে। দুর্ঘটনার জন্য কে দায়ী, তা এখনই নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। মালগাড়ির চালক সহ সকলকে অভিযুক্ত ধরে নিয়ে তদন্ত চলছে। উল্লেখ্য, ট্রেন দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই মালগাড়ির মৃত চালককে দায়ী করেছিল রেল কর্তৃপক্ষ। এখন তারা সেই অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসেছে।
এদিকে, ওই ঘটনার পর মালগাড়ির মৃত চালককে দেওয়া চালান নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। একইসঙ্গে রেলকর্মীদের প্রশিক্ষণের মান নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। লোকো পাইলট রানিং স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের এনজেপি শাখার সম্পাদক রামকিশোর শর্মা বলেন, একটি সিগন্যাল খারাপ থাকলে চালককে টিএ ৯১২ চালান দেওয়া হয়। একাধিক সিগন্যাল দীর্ঘক্ষণ ধরে খারাপ থাকলে টিডি ৯১২ চালান দেওয়ার নিয়ম। কিন্তু মালগাড়ির চালককে টিডি ৯১২ পরিবর্তে দেওয়া হয় টিএ ৯১২ চালান। কাজেই ওই দুর্ঘটনা নিয়ে শুধুমাত্র মালগাড়ির মৃত চালককে দায়ী করা ঠিক হচ্ছে না। তাছাড়া সিগন্যাল সিস্টেম নিয়ে কর্মীদের সেভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় না।
এদিন আলিপুরদুয়ার রেল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের অফিসার ও প্রশিক্ষকদের তলব করে তদন্ত কমিশন। ডিআরএম বলেন, তদন্তে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এজন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অফিসার ও প্রশিক্ষকদের ডাকা হয়েছে। চালানের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অন্যদিকে, ওই ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করেছে জিআরপি। ইতিমধ্যে তারা ঘটনার তদন্তের জন্য স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম গঠন করেছে। এদিন টিমের সদস্যরা নির্মলজোতে গিয়ে দুমড়েমুচড়ে যাওয়া কামরার ছবি, সিগন্যাল পিলারের নম্বর, লেভেল ক্রসিংয়ের নম্বর প্রভৃতি সংগ্রহ করে। তারা মালগাড়ির ইঞ্জিনও পরীক্ষা করবেন বলে খবর। শিলিগুড়ির সুপারিন্টেন্ডেন্ট অব রেল পুলিস এস সিলভা মুরগান বলেন, ওই ঘটনা নিয়ে একটি অভিযোগ হয়েছে। তা নিয়ে তদন্ত চলছে।
গত সোমবার রাঙাপানি স্টেশনের কাছে নির্মলজোতে কাঞ্চনঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনের পিছনে মালগাড়ির ধাক্কায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ওই ঘটনার পর থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকায় আপ ও ডাউন রেল লাইন মেরামতির কাজ চলছে। ইতিমধ্যে লাইনের দু’পাশে দেওয়া হয়েছে নেটের বেড়া। দুর্ঘটনাগ্রস্ত কামরাগুলিও নেট দিয়ে মোড়া। ক্যাম্প বানিয়ে সেগুলি পাহারা দিচ্ছে আরপিএফ। এজন্য সেখানে আরপিএফের একজন ইন্সপেক্টর, একজন সাব ইন্সপেক্টর, দু’জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে ১০ জন সশস্ত্র কনস্টেবল মোতায়েন রয়েছেন। সংশ্লিষ্ট এলাকার আপ ও ডাউন লাইন দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন ও মালগাড়ি ধীরগতিতে চলছে। তবে সাপের উপদ্রবে জেরবার রেলকর্মীরা।
সাংবাদিক বৈঠকে ডিআরএম। নিজস্ব চিত্র