কর্মে ও ব্যবসায় বাধা থাকলেও অগ্রগতি হবে। আর্থিক যোগ শুভ। ব্যয় বাড়বে। সম্পত্তি নিয়ে শরিকি ... বিশদ
বৃষ্টির কারণে কালিম্পং জেলা কার্যত শিলিগুড়ি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সবমিলিয়ে পাহাড়ে গৃহহীনের সংখ্যা প্রচুর। বহু পর্যটকও বিভিন্ন জায়গায় আটকে আছেন। শুধু পাহাড় নয়, অতি বৃষ্টির জেরে সমতলের অবস্থাও বেহাল হয়ে গিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দার্জিলিংয়ে ২৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। যা এবছরের রেকর্ড বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। পাশাপাশি র্শিলিগুড়িতে ২৪৫.২০ মিলিমিটার, গজলডবোয় ৩৪২ মিলিমিটার, সুখিয়াপোখরিতে ২৮২ মিলিমিটার, লাভায় ৩২৪ মিলিমিটার, কালিম্পংয়ে ২২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। মাত্র ২৪ ঘণ্টায় এত বেশি বৃষ্টির কারণে পাহাড়ের বহু জায়গায় ধস নামে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাস্তা ও সেতু। প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকা থেকে ধস সরানোর কাজ শুরু হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুসারে সোমবার রাত থেকে দার্জিলিংয়ে বৃষ্টি শুরু হয়। বুধবার দুপুর পর্যন্ত একনাগারে আবিশ্রান্ত বৃষ্টি চলে। এরমধ্যে মঙ্গলবারই বৃষ্টির দাপট ছিল সবচেয়ে বেশি। এর জেরেই দার্জিলিং পাহাড় কার্যত ধসে বিধ্বস্ত হয়ে যায়। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কের মহানদী, পোখরিয়াবং থেকে সুখিয়াপোখরি, ঘুম থেকে বিজনবাড়ি রাস্তায় নতুন করে ধস নামে। দু’দিন ধরে লাগাতার বৃষ্টি ও ধসের জেরে দার্জিলিং পাহাড়ে প্রায় ৩৬টি রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করা হয়। সেই রাস্তাগুলির মধ্যে লোধমা থানা থেকে লোধমা বাজার, দার্জিলিংয় থেকে চংটং রোড, ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কের মহানদী, লোধমা ও মানেভঞ্জন রোড, লেবং কার্ট রোড, ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের ২৯ মেইল, সুখিয়াপোখরি থেকে দুধিয়া, জোড়বাংলো থেকে বিজনবাড়ি, রিম্বিক থেকে শ্রীখোলা প্রভৃতি উল্লেখ্যোগ্য।
দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক এস পন্নমবালম বলেন, সংশ্লিষ্ট রাস্তাগুলি থেকে ধস সরানোর কাজ চলছে। তবে পর্যটক ও সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে বিকল্প কিছু রাস্তা খোলা রাখা হয়েছে। সেগুলির মধ্যে লেবং থেকে বাদামতা রোড, শিলিগুড়ি থেকে রোহিনী ও পাঙ্খাবাড়ি রোড, সুখিয়াপোখরি থেকে দুধিয়া আয়রন ব্রিজ, কিনজালিয়া থেকে বিজনবাড়ি, লেবং কার্ট প্রভৃতি রাস্তা উল্লেখ্যোগ্য। এর বাইরে দার্জিলিং পাহাড়ে গৃহহীন হয়ে পড়েছেন প্রচুর মানুষ। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সংখ্যা ১১৭০টি। যার মধ্যে আংশিকভাবে ১০৫৩টি এবং সম্পূর্ণভাবে ১১৭টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিন ধস বিধ্বস্ত এলাকা থেকে ৯৬ জনকে উদ্ধার করে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়। পাহাড়ের ছ’টি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন ৩৬৪ জন। কালিম্পং পাহাড়ের অবস্থা আরও খারাপ। শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পংগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের ২৯ মাইল ধসে বিপর্যস্ত রয়েছে। এর বাইরে এই সড়কের শ্বেতীঝোড়া সহ আরও পাচ জায়গায় পাহাড়ের মাটি, পাথর, গাছ ধসে পড়েছে। এদিকে গোরুবাথান থেকে কালিম্পং যাওয়ার রাস্তার আলগারাতেও ধস নেমেছে। যার ফলে এদিন বিকেল পর্যন্ত শিলিগুড়ি থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন ছিল কালিম্পং। লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে পর্যটকদের গাড়ি। প্রতিবেশী রাজ্য সিকিমের সঙ্গেও সড়ক যোগাযোগ বন্ধ ছিল। এছাড়া কালিম্পং শহরের ৪, ১৫, ১৮, ২১ প্রভৃতি ওয়ার্ডে ধসে কিছু বাড়ি, রাস্তা, ফুটপাত ও গার্ডওয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কালিম্পংয়ের জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ধস সরানোর কাজ জোরকদমে চলছে। প্রবল বৃষ্টির কারণে উত্তরবঙ্গের প্রধান শহর শিলিগুড়িও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।