সংবাদদাতা, কুমারগ্রাম: বর্ষা শুরু হতেই আলিপুরদুয়ার-২ ব্লকের কয়েকটি জায়গায় নদী পারাপারের জন্য থাকা বাঁশের সাঁকো ভেসে গিয়েছে। যার ফলে গ্রামবাসীরা এখন নদী পেরতে গিয়ে সমস্যার মধ্যে পড়ছেন। কোথাও কোথাও পারাপারের জন্য নৌকা নামানো হয়েছে। অনেক জায়গায় গ্রামবাসীরা ঘুরপথে যাতায়াত করছেন। গুরুত্বপূর্ণ ওই জায়গাগুলিতে কংক্রিটের সেতু তৈরির দাবি গ্রামবাসীরা বহুদিন থেকেই করে এসেছেন। কিন্তু, সেতু না হওয়ায় সাঁকোই তাঁদের ভরসা। নদীর জলস্ফীতিতে ওসব সাঁকো ভেসে যাওয়ায় এখন তাঁদের রোজ দুর্ভোগের মুখে পড়তে হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙ্গনও শুরু হয়েছে। অনেকের আবাদি জমি নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। ওসব জায়গায় বাঁধ তৈরির দাবি উঠেছে। যদিও সেচদপ্তর জানিয়েছে, কয়েক জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কারের কাজ চলছে। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষও ভাঙ্গন রোধে কাজ শুরু করেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের আলিপুরদুয়ার-২ ব্লক সভাপতি পরিতোষ বর্মন বলেন, গ্রামবাসীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে নদী ভাঙ্গনের জায়গাগুলি দেখে এসেছি। জলের স্রোতে কয়েক জায়গায় সাঁকো ভেসে গিয়েছে। ভাঙ্গন আটকানোর জন্য যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয় সেব্যাপারে দলের পক্ষ থেকে সেচদপ্তরের ইঞ্জিনিয়ারদের অনুরোধ জানিয়েছি। বাসিন্দাদের দুর্ভোগ থেকে রক্ষা করতে সাঁকোর জায়গায় যাতে পাকা ব্রিজ করা হয় সেই আর্জি নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হব। আলিপুরদুয়ার-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অনুপ দাস বলেন, নদীভাঙনের বিষয়টি সেচদপ্তরের নজরে এনেছি। কয়েক জায়গায় দপ্তরের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়েছে। সেচদপ্তরের কামাখ্যাগুড়ি মহকুমা আধিকারিক নির্মলকুমার লঙ্কেশ্বর বলেন, ভাঙ্গন আটকানোর জন্য বোল্ডার মজুত করা আছে। যেখানে ভাঙনের খবর মিলছে সেখানেই চটজলদি কাজ শুরু করা হচ্ছে।
আলিপুরদুয়ার-২ ব্লকের মাঝেরডাবরি ও ভালুকডাবরি গ্রামের মাঝ দিয়ে গিয়েছে চেকো নদী। জলস্ফীতিতে ওই নদীর উপরে থাকা সাঁকোটি গত সপ্তাহেই ভেসে যায়। এখান ওই দুই গ্রামের লোকজন নৌকা করে নদী পারাপার করছেন। বিকেলের পর নৌকা আর চলে না। তাই আলিপুরদুয়ার শহরে এলে দুপুরের মধ্যেই গ্রামে ফিরে যেতে হচ্ছে তাঁদের। পূর্ব চিকলিগুড়ি গ্রামে রয়েছে রায়ডাক-১ নদী। এর উপরেও একটি বাঁশের সাঁকো ছিল। সেটিও ভেসে গিয়েছে। ব্লকের কয়েকটি জায়গায় থাকা নড়বড়ে সাঁকো যেকোনও সময়ে ভেসে যেতে পারে, এমনই আশঙ্কা স্থানীয় গ্রামবাসীদের। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, কোথাও গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে কোথাও তাঁরা নিজেরা চাঁদা তুলে সাঁকো বানিয়েছিলেন। এদিকে ব্লকের ভাটিবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বোড়াগাড়ি গ্রামে গদাধর নদীর ভাঙ্গনে ১০০ মিটারের থেকেও বেশি জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টটপাড়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের যশোডাঙায় বামনী নদীর ভাঙনে প্রায় ৩০০ মিটার চাষের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভালুকডাবরিতে চেকো নদীর ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেখানে মাটির বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বহু আবাদি জমি সহ বাঁশ বাগান, কলা বাগান নদী গিলে নিয়েছে। ওই জায়গায় বোল্ডারের বাঁধের দাবি গ্রাবাসীরা করেছেন।