শরীর নিয়ে চিন্তায় থাকতে হবে। মাথা ও কোমরে সমস্যা হতে পারে। উপার্জন ভাগ্য শুভ নয়। ... বিশদ
ইংলিশবাজার শহরের বস্ত্র ব্যবসায়ী মন্টু সাহা বলেন, অন্যান্যবারের তুলনায় এবার ৭০ শতাংশ বিক্রি কম হয়েছে। দোকান খুললেও ক্রেতার দেখা সেভাবে মেলেনি। বাস, ট্রেন বন্ধ থাকায় গ্রামগঞ্জ থেকে ক্রেতারা শহরে আসতে পারেননি। মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, ঈদে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রায় সবাই নিজেদের সাধ্যমতো নতুন পোশাক এবং জুতো কেনেন। লকডাউনের জেরে মানুষের হাতে এখন টাকা নেই। তার উপর করোনা ভাইরাস এবং ঘূর্ণিঝড়ের জেরে ক্রেতারা বাজারমুখী হতে পারেননি। ফলে সর্বত্রই ৩০ শতাংশের বেশি বিক্রিবাটা হয়নি। চাঁচল ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক প্রাণগোপাল পোদ্দার বলেন, কাপড় ও জুতো ব্যবসার পাশাপাশি মহকুমার সিমাই ও আতর বিক্রেতারাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাঁদের ব্যবসা এবার ব্যাপক মার খেয়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুরের সিমাই বিক্রেতা মুনতাহা আলি বলেন, অন্যান্যবার ঈদের আগে ৫-৭ কুইন্টাল সিমাই বিক্রি করি। বিভিন্ন হাটে গিয়েও সিমাই বিক্রি করতাম। এবার লকডাউনের জেরে ব্যবসা লাটে উঠেছে। এবার এখনও পর্যন্ত এক কুইন্টাল সিমাইও বিক্রি হয়নি।
এদিকে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন উত্তর দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্তের ব্যবসায়ীরাও। রায়গঞ্জের বিভিন্ন প্রান্তে ছোট-বড় দোকান খুললেও ক্রেতার সংখ্যা ছিল অত্যন্ত কম। রায়গঞ্জের ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষে অতনুবন্ধু লাহিড়ী বলেন, চৈত্র সেল থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত বেচাকেনা ঠিকঠাক না হওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে ব্যবসায়ীদের। বিশেষ করে বিভিন্ন দোকানের কর্মচারীদের অবস্থাও অত্যন্ত সঙ্গীন। বেশিরভাগ দোকানদার প্রথম দিকে কর্মচারীদের মাসিক বেতনের ব্যবস্থা করলেও, লকডাউন দীর্ঘতর হওয়ায় তাঁদের অবস্থাও শোচনীয় হয়ে পড়েছে। আমরা চাই প্রশাসন ও সরকার ব্যবসায়ীদের সাহায্য করুক।
অন্যদিকে, ইসলামপুরের মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র দামোদর আগরওয়াল বলেন, এবছরটা ব্যবসায়ীদের জন্য অত্যন্ত খারাপ কাটছে। চৈত্র সেলের আগে সকলে প্রচুর পরিমাণ সামগ্রী স্টক করেছিলেন। তাঁরা এখন বিপাকে পড়েছেন। প্রতিটি স্তরের ব্যবসায়ীদের সরকারি সাহায্য না মিললে আগামীতে পুরোপুরি ভেঙে পড়বে গোটা ব্যবস্থাটা। প্রচুর মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বেন।
সমস্যা ও অসহায়তার একই ছবি দেখা গিয়েছে এবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাজুড়েও। প্রতিবছর ঈদের আগে বালুবঘাটের বাজারে কেনাকাটা করতে প্রচুর ভিড় দেখা যায়। কিন্তু এবছর লকডাউনের জেরে ভিড় তো দূরের কথা, ব্যবসায়ীরা কার্যত দোকানে বসে মাছি তাড়িয়েছেন। এবিষয়ে বালুরঘাট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক হরেরাম সাহা বলেন, এবছর লকডাউনের জেরে ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেল। পয়লা বৈশাখ, অক্ষয় তৃতীয়া সহ কোনও অনুষ্ঠানেই কিছুই ব্যবসা করা গেল না। ঈদের বিক্রিবাট্টাও কিছুই হল না। বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন ব্যবসায়ীরা। বালুরঘাটের তহবাজারের দীপেশ সাহা নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, প্রতিবছর দোকানে এই সময় ভিড় থাকে। কিন্তু এবার আমাদের বেচাকেনাই হয়নি।