নয়াদিল্লি, ১৭ মে: করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে বিশ্বের প্রায় সমস্ত দেশে রাস্তাঘাটেও জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানিয়েছে, খোলা জায়গায় জীবাণুনাশক ছড়িয়ে কোনও লাভ নেই। এত করোনা ভাইরাস মরে না। পাশাপাশি, যেখানে-সেখানে জীবাণুনাশক ছড়ালে, তা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক হতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে হু জানিয়েছে, রাস্তাঘাট বা বাজারের মতো খোলা জায়গায় জীবাণুনাশক ছড়িয়ে করোনা ভাইরাস বা অন্য কোনও ক্ষতিকারণ জীবাণুকে খতম করা যায় না। কারণ, মাটিতে পড়ে থাকা ধুলোবালি, নোংরার সংস্পর্শে এসে জীবাণুনাশকের উপাদানগুলি নষ্ট হয়ে যায়। ফলে কোনও লাভ হয়না।
পাশাপাশি, কোনও ব্যক্তির উপর জীবাণুনাশক প্রয়োগ করা উচিত নয় বলে এদিন ফের সতর্কবার্তা দিয়েছে হু। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কোনও অবস্থাতেই কারও উপর জীবাণুনাশক স্প্রে করা যাবে না। এতে তাঁর মানসিক ও শারীরিক ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু, আক্রান্ত ব্যক্তির থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা বিন্দুমাত্র কমে না। বরং ক্লোরিন বা অন্যান্য টক্সিক রাসায়নিকের কারণে চোখ, ত্বকে ক্ষত সহ একাধিক সমস্যা হতে পারে।
এদিকে, রবিবার বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৭ লক্ষ ৪৬ হাজারে পৌঁছে গিয়েছে। পাশাপাশি, মারণ ভাইরাসের বলি হয়েছে প্রায় ৩ লক্ষ ১৪ হাজার মানুষ। এর মধ্যে শুধু আমেরিকাতেই মৃত্যু হয়েছে ৯০ হাজার ১২৪ জনের। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যাও ১৫ লক্ষ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার এক করোনা আক্রান্ত। মাদার্স ডে-তে চার্চে আয়োজিত এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে প্রায় ১৮০ জন অংশ নিয়েছিলেন। ওই আক্রান্ত ব্যক্তির থেকে বাকিদের মধ্যেও সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, মার্কিন নৌসেনার জাহাজ থিওজোর রুজভেল্টের আরও আট নাবিকের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট দ্বিতীয়বার পজিটিভ এসেছে। এই নিয়ে সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়াল ১৩। এর আগে জাহাজে সংক্রমণ ছড়ানোয় প্রত্যেকের শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছিল। তারপর আক্রান্তদের ১৪দিন আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও তাঁরা সুস্থ না হওয়ায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে সেনাকর্তাদের কপালে।
এদিকে, ইতালিকে শেষ ২৪ ঘণ্টায় ১৫৩ জন প্রাণ হারিয়েছে। বিগত কয়েক সপ্তাহের নিরিখে যা সর্বনিন্ম। এপর্যন্ত সেদেশে প্রাণঘাতী ভাইরাসের বলি হয়েছে ৩১ হাজার ৭৬৩ জন। তবে, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসায় ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে ইতালি। দেশ-বিদেশের পর্যটকদের জন্য রোম, মিলান, ভেনিসের হোটেলগুলি সেজে উঠতে শুরু করেছে। অন্যদিকে, পাকিস্তানে আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়ে গেল। পাশাপাশি, রবিবার চীনে আরও ১৭ জন আক্রান্ত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় বেজিং, সাংহাই সহ একাধিক শহরে স্কুল খুলেছে। সেই সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, বেজিংয়ের বাসিন্দাদের আর মাস্ক পড়তে হবে না। অপরদিকে, ব্রিটেনে কৃষ্ণাঙ্গ, এশিয়ান এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে সংক্রমণের প্রভাব নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানালেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের কাছে এই দাবি জানিয়েছেন তিনি।