ব্যবসায়ে যুক্ত হলে এই মুহূর্তে খুব একটা ভালো যাবে না। প্রেম প্রণয়ে বাধা। কারও সাথে ... বিশদ
খুব দ্রুত হয়ত এ দেশে ‘কোভিড ১৯’ রোগীর স্রোত আছড়ে পড়বে। এমন পরিস্থিতির সামাল দিতে একটু নিয়মকানুন শিথিল করা দরকার। দরকার মেডিক্যাল এডুকেশনের ফাইনাল ইয়ারের পড়ুয়াদের ডাক্তারি করার শংসাপত্র দেওয়া।
অনেকেই জিজ্ঞাসা করেছেন, আমাদের দেশ এই পরিস্থিতি সামলাতে কতটা তৈরি? মনে রাখবেন, ব্রিটেন এবং আমেরিকার মতো দেশের জাতীয় স্বাস্থ্যব্যবস্থাও নোভেল করোনার মোকাবিলা করতে পারেনি। এদিকে আমাদের দেশের ভেন্টিলেটরের সংখ্যা সীমিত। স্বাস্থ্য পরিকাঠামোও বলার মতো নয়।
এই পরিস্থিতিতে দেশের শিক্ষিত সমাজ ইতিমধ্যেই হতাশ করেছে। নিজের স্বাস্থ্যসুরক্ষার জন্য ‘সামাজিক দূরত্ব’ বজায় রাখার সংজ্ঞা তাঁদেরকে বোঝাতে হবে কেন? আর ঠিক এ কারণেই সরকারকে লকডাউন ও কার্ফু’র মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। সত্যিই আর কোনও বিকল্প ছিল না। অনেক আগেই নিজেদের ঘরে আটকে রেখে এই পরিস্থিতি এড়ানো যেত!
মনে রাখতে হবে, ইবোলা এবং এইচ১এন১ ভাইরাসের থেকেও নোভেল করোনা অনেক বেশি সংক্রামক। ড্রপলেটের মাধ্যমে ছড়ায়। বায়ুবাহিত নয়। অথচ, এতটাই বেশি সংক্রামক যে সংক্রামিতের সঙ্গে সামান্য ঘনিষ্ঠতা থেকেও সুস্থ মানুষ রোগের কবলে পড়ে যেতে পারেন।
এমন পরিস্থিতিতে আমাদের এখনই দরকার, স্থানীয় সংস্থাকে দিয়ে প্রচুর পরিমাণে ভেন্টিলেটর ও পিপিই তৈরি করানো। ডিআরডিও মতো প্রতিষ্ঠানও এগিয়ে আসুক। নেমে পড়ুক কাজে। শীঘ্রই দরকার প্রচুর আইসিইউ বেড, সাকশন করার মেশিন। কারণ, এখন যে আক্রান্তের সংখ্যা দেখছেন, তা কিছুই নয়। কঠিন দিন আসছে। আগাম সব গুছিয়ে রাখা দরকার।
নোভেল নিয়ে ভয়ঙ্কর অবস্থার মধ্যে পড়া ইতালি অন্তত একটি বিষয়ে অন্তত আপ্রাণ চেষ্টা করেছিল। স্বাস্থ্য শিক্ষায় ওদের নিয়ম যথেষ্ট কড়া। তাও দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকের অভাব মেটাতে ওরা দেশের মেডিক্যাল কাউন্সিল বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে বলে, ফাইনাল ইয়ারের পড়ুয়াদের ৯ মাস আগেই প্র্যাকটিস করার সার্টিফিকেট দিন। এভাবে প্রায় ১০ হাজার বাড়তি ডাক্তার পেয়ে যায়, যাঁরা ইমার্জেন্সি সামাল দিতে পারবেন। আমাদেরও এখনই উচিত এই ব্যবস্থা নেওয়ার।
ভারতে বহু ডাক্তার, বিশেষজ্ঞ এবং পড়ুয়া আছেন। এছাড়া ২০ হাজার ছাত্র রয়েছেন, যাঁরা চীন এবং রাশিয়া থেকে মেডিসিনে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেছেন। বুঝতে হবে কোনও চিকিৎসকই ৬ ঘণ্টার বেশি কোভিড ইউনিটে কাজ করতে পারেন না। আমাদের এখন ডাক্তার চাই, আরও ডাক্তার চাই। আগে যে দরকারগুলি ছিল, এখনকার দরকার তার চেয়ে অনেক বেশি জরুরি। আর এই দরকারে সামান্য সমঝোতা করতেই হবে। মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া এগিয়ে আসুক। সিদ্ধান্ত নিক।
পাশাপাশি বিশ্বের বাকি দেশগুলির মতো এ দেশেও রোগীকে অনলাইনে চিকিৎসার পরামর্শ এবং ই-প্রেসক্রিপশন দেওয়া আইনসিদ্ধ করা প্রয়োজন। কারণ, অন্য শারীরিক সমস্যায় ভোগা রোগীকে এই সময় হাসপাতালে আসতে বলা মানে আরও বেশি মানুষকে সংক্রমণের আওতায় নিয়ে আসা। আর কোভিডের সময় অন্য সমস্যার রোগীরা কষ্ট পাবেন না, এটা ভাবা নেহাতই বোকামো।
একটি জাতীয় সংবাদসংস্থাকে দেওয়া ডাঃ শেঠির ইন্টারভিউ থেকে সংকলিত