সমৃদ্ধ দত্ত, নয়াদিল্লি, ১৭ আগস্ট: জম্মুতে আগেই শুরু হয়েছিল। এবার কাশ্মীর উপত্যকাতেও জনজীবন স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেওয়া শুরু হয়েছে। গতকালই সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় সরকার সর্বোচ্চ আদালতকে জানিয়েছিল কাশ্মীরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে এবং সম্পূর্ণ স্বাভাবিকতা ফিরে আসতে একটু সময় লাগবে। আর আজ প্রায় ৫০ হাজার ল্যান্ডলাইন ফোন আবার সচল হয়েছে। উত্তর কাশ্মীর, দক্ষিণ কাশ্মীর এবং মধ্য কাশ্মীরের সিংহভাগ জেলায় ফিরছে টেলিকম ব্যবস্থা। যদিও এখনও বহু এলাকার টেলি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। মোট ৯৬টি টেলিফোন এক্সচেঞ্জের মধ্যে ১৭টি আজ পুরোদমে কাজ করতে শুরু করেছে। আগামী কয়েকদিনে বাকি এক্সচেঞ্জগুলিও চালু হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আজ সরকারি পরিবহণ ব্যবস্থাও চালু করা হয়েছে জোর কদমে। সরকারি অফিসে যাতে কর্মীরা যোগ দেন সেই নির্দেশিকা ছিল। তাই রাস্তায় তুলনামূলকভাবে গাড়ির সংখ্যাও বেড়েছে। তবে এখনও সর্বত্র দোকানপাট, বাজার, মার্কেট কমপ্লেক্স, সিনেমা হল এবং হোটেল রেস্তরাঁ বন্ধ। সিভিল লাইনস ও ডালগেট এলাকা ছাড়া অন্যত্র খুব বেশি গাড়ি চলতে দেখা যায়নি। সাধারণ মানুষও এখনও রাস্তায় বেরোচ্ছেন না। কারণ ব্যারিকেড এবং নিরাপত্তা বাহিনী এখনও মুড়ে রেখেছে গোটা উপত্যকাকে। পরিচয়পত্র এবং প্রয়োজন না প্রমাণিত হলে কাউকেই এগোতে দেওয়া হচ্ছে না। এই ব্যবস্থাও ধীরে ধীরে প্রত্যাহার করা হবে বলে জানিয়েছে কাশ্মীর প্রশাসন। কাল, সোমবার থেকে স্কুল কলেজ অফিস এবং বেসরকারি সংস্থার দপ্তরও খুলবে বলে আজ জানানো হয়েছে।
১৩ দিন কাশ্মীরে একপ্রকার সর্বাত্মক বন্ধ থাকার পর এবার ধীরে ধীরে সরকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার দিকে জোর দিচ্ছে। কারণ একটাই। স্বাধীনতা দিবস যে সম্পূর্ণ নির্বিঘ্নে এবং ঘটনাবিহীনভাবে কেটে যাওয়াকে বিশেষ সাফল্য হিসেবে দেখছে কেন্দ্র। জম্মুর ১০টি জেলায় হাই স্পিড ইন্টারনেট ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। তবে কাশ্মীর উপত্যকায় সেই সুবিধা এখনও নেই। আপাতত আজ টুজি ইন্টারনেট সংযোগ কয়েকটি জেলায় এসেছে। শুধুমাত্র সরকারি কর্মীদের অফিসে নিয়ে যাওয়া এবং আবার ফিরিয়ে আনার জন্য বিশেষ সরকারি বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। সরকারি অফিস চালু করা হলে কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ যে ৩৭০ পরবর্তী অধ্যায়কে মেনে নিয়ে আবার বিনা প্রতিবাদে কাজে যোগ দিয়েছেন, সেই বার্তা দেওয়া যাবে বলে মনে করছে কেন্দ্র।
এদিকে জম্মুর রাজৌরি সেক্টরে পাকিস্তানের সীমান্তরক্ষী বাহিনী গতকাল মধ্যরাত থেকে নতুন করে সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গুলিবর্ষণ শুরু করেছে। একজন ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে পাক গোলাগুলিতে। ভারতও পালটা জবাব দিয়েছে।