হঠাৎ জেদ বা রাগের বশে কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়া শ্রেয়। প্রেম-প্রীতির যোগ বর্তমান। প্রীতির বন্ধন ... বিশদ
চাকরির আবেদন করার সময় এমডি পাশ না করেও তা লেখা, প্রতিবন্ধী না হওয়া সত্ত্বেও প্রতিবন্ধী সংরক্ষণ নিয়ে চূড়ান্ত মেধাতালিকায় নাম ওঠানো, আবেদনকারীরই চাকরির যোগ্যতামান স্থির করার প্রক্রিয়ায় থাকা সহ গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ উঠেছে এই নিয়োগ নিয়ে। জুলাই মাসে চূড়ান্ত মেধাতালিকা প্রকাশিতও হয়েছে। আর তা নিয়ে অভিযোগ গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ বিভিন্ন মহলে।
ডব্লুবিএইচআরবি’র সদ্য নিযুক্ত চেয়ারম্যান ডাঃ তাপস মণ্ডল মঙ্গলবার বলেন, কিছু অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত হয়েছে। এমডি পাশ সংক্রান্ত বিষয় খতিয়ে দেখেছি, আবেদনের সময় চাকুরিপ্রার্থী এমডি পাশ না হলেও, ইন্টারভিউ ও ভেরিফিকেশনের সময় সার্টিফিকেট দেখিয়েছেন। তবে প্রতিবন্ধী না হওয়া প্রার্থীর প্রতিবন্ধী সংরক্ষণের মাধ্যমে মেধাতালিকায় নাম ওঠার ঘটনা ঘটেছে। সেটি নেহাতই ‘ক্লারিক্যাল মিস্টেক’। শীঘ্রই চাকরিপ্রার্থীদের জয়েনিং প্যানেল প্রকাশিত হবে। প্রাক্তন চেয়ারম্যান ডাঃ রাজেন পাণ্ডে বলেন, আমার সময়কালে ইন্টারভিউ ও তথ্য যাচাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়। বাদবাকি গোটা প্রক্রিয়াটি নিয়ে আমি কী বলব! দপ্তর সূত্রের খবর, আয়ূশ শাখাও এই নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে গাদা গাদা অভিযোগ পেয়ে সেগুলি এইচআরবি’র কাছে তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। এ বিষয়ে অল বেঙ্গল বিএএমএস ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ডাঃ পার্থ সরকার বলেন, অবিলম্বে ওই বিতর্কিত মেধাতালিকা বাতিল না হলে আমরা আন্দোলনে নামব।
২০১৮ সালের ১০ ডিসেম্বর রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের জন্য ৯৮ জন সিনিয়র আয়ুর্বেদিক মেডিক্যাল অফিসারের সরাসরি নিয়োগের বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে এইচআরবি। আবশ্যিক যোগ্যতা ছিল ১. পাঁচ বছরের আয়ুর্বেদিক স্নাতক পাঠ্যক্রম। ২. বাংলায় লিখতে-বলতে পারার ক্ষমতা। কাঙ্খিত যোগ্যতায় ছিল ১. স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আয়ুর্বেদে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। ২. স্বীকৃত আয়ুর্বেদিক প্রতিষ্ঠান থেকে হাউসস্টাফ হিসেবে ছ’মাসের অভিজ্ঞতা বা নথিভুক্ত আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক হিসেবে পাঁচ বছর কাজের অভিজ্ঞতা। আবেদনকারীদের বয়সসীমা ৪০-এর মধ্যে হতে হবে।
নিয়োগের জন্য ধার্য ১০০ নম্বরে উচ্চ মাধ্যমিক বা সমতুল্য পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরে ২০, বিএএমএস বা পাঁচ বছরের আয়ুর্বেদিক স্নাতক পাঠ্যক্রমে ৫০, পিজি ডিগ্রি’র জন্য ১০, পেশাগত অভিজ্ঞতায় পাঁচ এবং ইন্টারভিউতে ১৫ নম্বর ছিল।
অভিযোগকারীদের বক্তব্য, জুলাই মাসে প্রকাশিত ৯৯ জনের মেধা তালিকায় এমন অন্তত দু’জনের নাম রয়েছে, যাঁরা চাকরির আবেদনের সময় এমডি পাশই করেননি। দুই, আবশ্যিক যোগ্যতার মধ্যে অন্যতম ছিল বাংলায় লিখতে ও বলতে পারা। ওবিসি সংরক্ষণের একাধিক প্রার্থী বাংলা লিখতে ও বলতে পারেন না বলে অভিযোগ। তাছাড়া এই যোগ্যতা যাচাইয়ের পরীক্ষাও হয়নি। তিন, ধার্য ১০০ নম্বরের মধ্যে এমডিতে ১০ নম্বর দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ ফল যেমন হবে, ধার্য নম্বরের মধ্যে প্রাপ্ত নম্বরও তেমন হবে। কিন্তু, সে নিয়ম না মেনে এমডি পাশ করলেই দশে দশ— এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের বৈঠকে চাকুরিপ্রার্থী এক মহিলা আবেদনকারীও ছিলেন। চার, প্রতিবন্ধী না হয়ে প্রতিবন্ধী সংরক্ষণের দাবিদার হয়ে ভেরিফিকেশন পর্ব উতরে চাকুরির মেধা তালিকায় নাম পর্যন্ত ওঠে যায় এক চাকুরিপ্রার্থীর। পাঁচ, ইন্টারভিউ পর্বে মুখ চেনাচেনির উপর নির্ভর করে ১৫ তে বেশি বা কম নম্বর দেওয়ার মতো অভিযোগ তো রয়েছেই।