উচ্চ শিক্ষা ও ব্যবসায় শুভ ফল প্রাপ্তির যোগ। ... বিশদ
ব্যবসায়ীর স্ত্রী পুনমদেবী জানিয়েছেন, ফ্ল্যাটের গ্রিল ও সিঁড়ি সাফাইয়ের কাজ করতেন এক ব্যক্তি। মাস দুয়েক আগে তিনি বাড়ি যাওয়ায় নতুন লোক খুঁজছিলেন পুনম। পরিচারিকা তখন সন্দীপ দাস নামে এক সাফাইওয়ালাকে নিয়ে আসেন। ওই পরিচারিকা ও সন্দীপ একই বাড়িতে কাজ করায় তাদের পরিচয় ছিল। ঝাড়খণ্ডের গিরিডির বাসিন্দা সন্দীপ দু’মাস ধরে ব্যবসায়ীর বাড়িতে কাজ করছিলেন। গৃহকর্ত্রী জানিয়েছেন, বুধবার সকাল ছ’টা নাগাদ সন্দীপ বাইরের দু’জনকে নিয়ে এসে ফ্ল্যাটে ঢুকেছিল বলে জানান অন্য এক ভাড়াটিয়া। তাকে ডেকে এনে এসবের কারণ জানতে চান। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছ’টা নগাদ সে ওই ফ্ল্যাটে হাজির হলে পুনমদেবী জানতে চান, কেন সে বাইরের লোক নিয়ে এসেছিল। তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি সে। তাকে ফ্ল্যাটের বাইরের গ্রিল ও সিঁড়ি সাফাই করতে বলা হয়। মিনিট পাঁচেকের মধ্যে দেবাশিসবাবুদের ফ্লোরে সশস্ত্র দুই যুবক এসে আচমকাই ওই ব্যবসায়ীর গলা টিপে ধরে। তিনি দরজার সামনে দাঁড়িয়ে গ্রিল পরিষ্কার করাচ্ছিলেন। স্বামীর চিৎকার শুনে স্ত্রী বেরিয়ে এসে দেখেন, দু’জন গলা চেপে ধরেছে দেবাশিসের। দুষ্কৃতীদের মোকাবিলা করতে ঘর থেকে কিছু একটা আনতে ঢোকেন মহিলা। তখন সন্দীপ জানায়, ওদের হাতে বন্দুক আছে। ফ্ল্যাটের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে দিতে যায়। তাকে ধাক্কা মেরে বাইরে চলে আসেন মহিলা। তখন পুনমদেবীর দিকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে দুষ্কৃতীরা। ভয় না পেয়ে তিনি চিৎকার শুরু করলে দেবাশিসকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় তারা। অল্পের জন্য রক্ষা পান তিনি। গুলি লাগে দেওয়ালে। পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। এতকাণ্ড ঘটলেও দুষ্কৃতীদের বাধা না দিয়ে গ্রিল সাফাইয়ের কাজ চালিয়ে যায় সন্দীপ। দুষ্কৃতীরা পালালে সে কাজ শেষ করে আড়াশো টাকা নিয়ে চলে যায়। পরে টালিগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ব্যবসায়ী।
তদন্তে নেমে পুলিস স্থানীয় সাফাইওয়ালাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে, সন্দীপ থাকে বেহালার বুড়ো শিবতলায়। তাকে আটক করে পুলিস। জিজ্ঞাসাবাদে ভেঙে পড়ে পুলিসকে জানায়, ফ্ল্যাটের মালিকের কাছে বিপুল টাকা আছে ভেবে লুটের পরিকল্পনা করেছিল সে। গিরিডি থেকে তার পরিচিত দু’জনকে তিনদিন আগে কলকাতা নিয়ে আসে। তাদের সল্টলেকে সাফাইয়ের কাজে ঢোকায়। বুধবার তিনজনে মিলে ফ্ল্যাটে রেকি করে। ঠিক হয় বৃহস্পতিবার অপারেশন করবে। সেইমতো দু’জন সল্টলেক থেকে চলে আসে রাসবিহারী ক্রশিংয়ে। সেখানে তাদের সঙ্গে দেখা করে সন্দীপ। তিনজন ওই পাড়ায় ঢোকে। সন্দীপ আগে ফ্ল্যাটে যায়। পাঁচ মিনিট পর ওই দুই দুষ্কৃতী আসে। এরপরই সল্টলেক থেকে বাকি দু’জনকে ধরা হয়।