নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কর্মীর অভাবে ধুঁকছে দেশের প্রথম মেট্রো রুট। এর ফলে কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বর মেট্রো পথে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের মানও ক্রমশ তলানিতে ঠেকেছে। সংশ্লিষ্ট করিডরের প্রতিটি স্টেশনেই কর্মীর অভাব টের পাচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা। কর্মীসঙ্কট নিয়ে মেট্রো রেলের কর্মচারী ইউনিয়নই কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে। সব মিলিয়ে চরম ডামাডোল চলছে রেলমন্ত্রকের আওতাধীন দেশের প্রথম মেট্রো পরিষেবায়। স্টেশনগুলিতে কর্মীর অভাব এতটাই প্রকট যে অধিকাংশ সময় বেশিরভাগ টিকিট কাউন্টারে ঝুলছে ‘ক্লোজড’ লেখা বোর্ড। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে টিকিট কাটার জন্য। এ ধরনের সমস্যার কথা ভেবে ‘টিকিট ভেন্ডিং মেশিন’ বসানো হয়েছিল। কিন্তু সেই যন্ত্রের গায়ে বিজ্ঞাপন দিয়ে মেট্রোর আয় হলেও অধিকাংশ সময় তা বিকল হয়ে পড়ে থাকছে বলে অভিযোগ। ভুক্তভোগী এক যাত্রী আরও জানালেন, মেশিনগুলিতে ১৫ টাকার ভাড়া কাটা যায় না। কারণ, কেবলমাত্র নোটেই ওই মেশিন কাজ করে। কয়েন দিলে টোকেন বের হয় না। এখন বাজারে পাঁচ টাকার নোট দেখা যায় না বললেই চলে। তাই ওই মেশিনের সার্বিক গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এমনকী, দশ টাকা বা একশো টাকার পুরনো নোট এই মেশিনে গৃহীত হয় না। ফলে টোকেন কাটতে গিয়ে বা স্মার্ট কার্ড রিচার্জ করতে গিয়ে খালি হাতে ফিরতে হয় বহু যাত্রীকে। তাঁদের ফের নতুন করে টিকিট কাউন্টারের লাইনে দাঁড়াতে হয়।
স্মার্ট গেট পেরিয়ে প্ল্যাটফর্মে ঢুকেও সমস্যায় পড়তে হয় অনেককে। দাবদাহের এই মরশুমে কলকাতা মেট্রোর অধিকাংশ স্টেশনে পানীয় জলের মেশিন খারাপ হয়ে রয়েছে। বহু স্টেশনে তা সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। বহু বৈদ্যুতিন পাখা অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। মেট্রো রেল ইউনিয়নের নেতৃত্বের দাবি, এক শ্রেণির কর্তা সংস্থার সুনাম ও গরিমাকে দায়িত্ব নিয়ে ডোবাচ্ছেন। পরিষেবার মান ক্রমশ কমছে। এক ইউনিয়ন-নেতা বলেন, ‘রেকগুলিতে তারস্বরে বিজ্ঞাপন বাজে। বিষয়টি যাত্রীদের বিরক্তির কারণ হয়ে উঠছে। পাশাপাশি, হাতে গোনা কয়েকটি রেকে সারাদিনে একই কার্টুন চালানো হয়। বাচ্চারা খুশি থাকার বদলে বিরক্ত হয়ে পড়ে এতে।’ সব মিলিয়ে কর্মীসঙ্কটে ছন্নছাড়া ভাবটা স্পষ্ট বিভিন্ন স্টেশনে। তবে টিকিট বুকিং কাউন্টারগুলিতে পর্যাপ্ত সংখ্যায় কর্মী রয়েছেন বলেই দাবি কলকাতা মেট্রোর জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্রের। অন্যান্য সমস্যাগুলির বিষয়ে তাঁর কাছে এখনও কোনও অভিযোগ না এলেও তিনি খোঁজখবর নেবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।