বিদ্যার্থীরা পড়াশোনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাবে। নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বাড়বে। অতিরিক্ত চিন্তার জন্য উচ্চ ... বিশদ
একবার এক মিটিংয়ে প্রফেসর বোর উপস্থিত আছেন, সঙ্গে আছেন তাঁর কয়েকজন ছাত্র। এমন সময় ঘোষণা করা হল, ‘এবার আপনাদের সামনে বক্তব্য পেশ করবেন নিকোলাস বেকার।’ এদিকে বোরের তো কোনও হুঁশ নেই। পাশ থেকে তখন তাঁর এক ছাত্র তাঁকে বলেন, ‘স্যার আপনাকেই বলা হচ্ছে।’ বোর তখন আঁতকে উঠে বললেন, ‘হু? মি? গুড হেভেন্স, আমার তো মনেই থাকে না!’
মার্কিন সরকার তখন প্রফেসর বোরের জন্য সর্বক্ষণের একজন দেহরক্ষী দিয়েছিল। একবার এক সরকারি মিটিংয়ে যাওয়ার সময় দেহরক্ষীটি লিফটে ওঠার আগে কানে কানে বলে দিল, ‘স্যার, মিটিংয়ের ভিতরে তো আমি যেতে পারব না, আপনি কিন্তু দয়া করে মনে রাখবেন যে আপনিই নিকোলাস বেকার।’ বোর বললেন আরে ঠিক আছে। আমি অতটাও ভুলো নই। যাই হোক লিফটে উঠে বোর দেখলেন যে এক মহিলা সহযাত্রী কাগজ পড়ছেন। বোরের হঠাৎ মনে হল এই মহিলাকে তিনি চেনেন। বোর মহিলাটিকে প্রশ্ন করলেন, ‘এক্স কিউস মি! আর ইউ মিসেস ফ্রাউফন হালবান?’
আসলে ওই মহিলা ছিলেন ডেনমার্কে বোরের এক সহকর্মী হালবানের স্ত্রী। কিন্তু বোর জানতেন না যে হালবানের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে এবং বর্তমানে এই মহিলা মিস্টার প্লাজেককে বিবাহ করেছেন। যথারীতি মহিলাটি উত্তরে বললেন ‘না, আমি মিসেস প্লাজেক।’ কিছুক্ষণ পর মহিলাটি বলে উঠলেন, ‘আরে! কী অদ্ভুত, আমি খেয়ালই করিনি, আপনি তো প্রফেসর নীলস বোর।’ বোর নির্বিকারভাবে বললেন, ‘না, আমি নিকোলাস বেকার।’
একবার প্রফেসর বোরের লস অ্যালামাসে একটা বক্তৃতা দেওয়ার কথা। কী মনে হওয়ায় আগের দিন রাতে তিনি ডেকে পাঠালেন আরেক তরুণ বিজ্ঞানী রিচার্ড ফাইনম্যানকে। এই ফাইনম্যান ছিলেন অসাধারণ প্রতিভাবান এক বিজ্ঞানী। যাই হোক দুই বিজ্ঞানী তো মগ্ন হয়ে গেলেন কঠিন সব সমীকরণের গাণিতিক বিশ্লেষণে। হঠাৎই ফাইনম্যান রেগে গিয়ে বোরকে বললেন, ‘দূর মশাই, কী লিখেছেন এসব পাগলের মতো!’ সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলেন নীলস বোরের ছেলে জিম। তিনি তো লজ্জায় লাল। তাঁর বয়সি এক তরুণ বিজ্ঞানী বোরকে পাগল বলছেন! যাই হোক, ভোর রাতে সমস্ত গাণিতিক বিশ্লেষণ শেষ করার পর বোরকে বিদায় জানিয়ে ফিরে চললেন ফাইনম্যান। এগিয়ে দিতে গেলেন জিম। এই সময় জিমকে ফাইনম্যান জিগ্যেস করলেন, ‘আচ্ছা, হান্স বেথে, এনরিকো ফের্মি, জিলার্ড, নজম্যানদের মতো সব বাঘা বাঘা বিজ্ঞানী থাকতে বোর হঠাৎ আমাকে কেন ডাকলেন?’ উত্তরে জিম জানালেন, অন্যান্য বিজ্ঞানীরা শ্রদ্ধা ও সৌজন্যবশত প্রফেসর বোরের ভুলটা তাঁর সামনে কেউই স্বীকার করবেন না। একমাত্র ফাইনম্যানই পারেন ভুলটাকে ধরিয়ে দিতে। যে সাহসে ভর করে তিনি বোরকে বলতে পারেন ‘পাগল’।
মৃণাল শীল