বিদ্যায় সাফল্য ও হতাশা দুই-ই বর্তমান। নতুন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠবে। মামলা-মোকদ্দমার কোনও পরিবেশ তৈরি ... বিশদ
জেলার পুলিস সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ঘটনায় দশ ঘণ্টার মধ্যেই তৎপরতার সঙ্গে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বাকিরাও পুলিসের নজর এড়িয়ে বেশিক্ষণ গা ঢাকা দিয়ে থাকতে পারবে না।
এদিকে এদিন মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে লালনগরে যান তৃণমূলের দুই প্রতিনিধিদল। সকালে বাড়িতে গিয়ে মৃতের স্ত্রী তথা হুমাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের হাতে ব্যক্তিগতভাবে নগদ এক লক্ষ টাকা তুলে দিয়ে আসেন শ্রম দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী জাকির হোসেন। জাকির সাহেব বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ও শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশে আমি লালনগর গিয়েছিলাম। তৃণমূল কংগ্রেস পরিবারের যে কারও বিপদে আমাদের ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি দেওয়ার ঘোষণা করেছেন পরিবহণমন্ত্রী। পরে সেখানে যান জেলার দুই সংসদ সদস্য আবু তাহের খান ও খলিলুর রহমান। তাহের সাহেব বলেন, মৃত নেতার পরিবারের পাশে আমরা রয়েছি। একইসঙ্গে অপরাধীদের কঠোর শাস্তির পাশাপাশি এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছি পুলিসের কাছে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার দুপুরে বাড়ি থেকে বিডিও অফিসে যাওয়ার পথে গাড়ি থেকে নামিয়ে প্রকাশ্যে গুলি করে খুন করা হয় হুমাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী সফিউল হাসানকে। মাথায় ও বুকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করা হয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। শুক্রবারই পরিবারের পক্ষ থেকে আটজনের নামে হরিহরপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। মৃত সফিউল সাহেব হরিহরপাড়া ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকের পাশাপাশি হুমাইপুর অঞ্চল পর্যবেক্ষকেরও দায়িত্ব সামলাতেন। লালনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতিও ছিলেন তিনি। এলাকায় সংগঠনের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন বলে জেলা নেতৃত্ব জানিয়েছে। এলাকায় সমাজবিরোধী কার্যকলাপ রোখার পিছনেও সফিউল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। তাঁর দাপটে গ্রামের কুখ্যাত দুষ্কৃতী হিসেবে পরিচিত বেশ কয়েকজন দীর্ঘদিন গ্রামে ঢুকতে পারছিল না। গ্রামে ফেরার রাস্তা পরিষ্কার করতেই সফিউলকে সরানো হয়েছে বলেই প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।
এফআইআরে নাম থাকা সকলেই একসময় এলাকার ত্রাস হয়ে উঠেছিল। সকলেই গ্রামছাড়া ছিল। খুঁটি সরে যাওয়ায় লালনগর এলাকায় ফের সমাজবিরোধী কার্যকলাপ মাথাচাড়া দেবে বলেই স্থানীয়দের একাংশের আশঙ্কা। তাঁদের দাবি, এতদিন গ্রাম ও এলাকা দুষ্কৃতীদের হাত থেকে আগলে রেখেছিলেন পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী। তিনি খুন হয়ে যাওয়ায় আগামী দিনে কী হবে তা নিয়ে চিন্তায় থেকেই যাচ্ছে।
শুক্রবার দিনভর মৃত নেতার গাড়ির চালক টোটন শেখের খোঁজ না মেলায় সন্দেহ দানা বেঁধেছিল। এদিন গাড়ির চালকের হদিশ মেলায় তাঁকে সন্দেহের তালিকা থেকে আপাতত বাদ রেখেছে পুলিস। এদিকে শনিবার দুপুরে ওই গ্রামের এক প্রৌঢ়কে নিশ্চিন্তপুরের স্থানীয় মানুষজন ধরে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। পরে তাকে পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হয়। স্থানীয়দের দাবি, ওই প্রৌঢ় খুনের ব্যাপারে কিছু জানতে পারে। কারণ লুকিয়ে এলাকা ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছিল। হরিহরপাড়া থানার পুলিস প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে ছেড়ে দিয়েছে। তবে ঘটনার জেরে শনিবারও এলাকায় আতঙ্ক কাটেনি। রাগে ফুঁসছেন সফিউল অনুগামীরা।