বিদ্যায় সাফল্য ও হতাশা দুই-ই বর্তমান। নতুন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠবে। মামলা-মোকদ্দমার কোনও পরিবেশ তৈরি ... বিশদ
রত্না কলকাতার টালিগঞ্জের একটি বেসরকারি আইটিআইয়ের ছাত্রী ছিলেন। বিশ্বজিৎ বিশ্বাসের বাড়ি ওই থানার ভায়না গ্রামে। একসময় দু’জনেই বগুলা শ্রীকৃষ্ণ কলেজে পড়াশুনা করতেন। বর্তমানে বিশ্বজিৎও আইটিআইয়ের ছাত্র। সে রানাঘাটে পড়াশুনা করছে। যদিও মাঝেমধ্যে বাবার সঙ্গে রাজমিস্ত্রির কাজ করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানিয়েছে, কলেজে পড়ার সূত্র থেকে বছর চারেক আগে দু’জনের পরিচয় হয়। পরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দু’জনের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়। পুলিসের অনুমান, দু’জনের প্রেমের সম্পর্কের মধ্যে সম্ভবত তৃতীয় কেউ ঢুকে পড়েছিল। তা নিয়েই রত্না ও বিশ্বজিতের মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়। বিশ্বজিৎ তা কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না।
বিভিন্নভাবে প্রেমিকাকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও ফল হয়নি। পুলিসের অনুমান, প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার কারণেই প্রেমিকাকে খুনের ছক করেছিল বিশ্বজিৎ। তারপরই সে এরকম ঘটনা ঘটায়।
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার প্রতিবেশী এক বান্ধবীর বাড়িতে নিমন্ত্রণ ছিল রত্নার। বান্ধবীর বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। সেই খবর পেয়ে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে মিলননগরে পৌঁছে গিয়েছিল বিশ্বজিৎ। এরপর প্রেমিকাকে মিলননগরের একটি মাঠে ডাকে। প্রথমে যেতে রাজি হননি রত্না। পরে তাঁকে টানতে টানতে মিলননগরের মাঠে নিয়ে যায় বিশ্বজিৎ। মাঠে দু’জনের মধ্যে ব্যাপক বচসা হয়। সেইসময় বিশ্বজিৎ রত্নার পেটে ছুরি ঢুকিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। রত্নার চিৎকারে ছুটে আসেন আশেপাশের লোকজন। তাঁর বাড়ির লোকজনও ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। বিশ্বজিৎ সকলকে ছুরি হাতে ভয় দেখায়। সামনে আসলে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। এরপরই সেই ছুরি নিজের পেটেও ঢুকিয়ে দেয়। রক্তাক্ত অবস্থায় ওই দু’জন মাঠের মধ্যে পড়ে থাকে। রত্নাকে বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতিতে সেখান থেকে রত্নাকে কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। যদিও যাওয়ার পথে পরিস্থিতি সঙ্কটজনক হওয়ায় রত্নাকে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে জানান। এদিকে, ঘটনার পর মাঠেই পড়েছিল বিশ্বজিৎ। খবর পেয়ে পুলিস এসে তাকে উদ্ধার করে কৃষ্ণনগর শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। রত্নার ভাই চিন্ময় মল্লিক বলেন, যে ছেলেটা আমার দিদির পেটে ছুরি মেরেছে, তাকে আমি এর আগে কখনও দেখিনি। কী সম্পর্ক দু’জনের মধ্যে ছিল, তা আমি জানি না। ও কেন এমন করল, আমি জানি না। বিশ্বজিতের মা সারথী বিশ্বাস বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে ওই মেয়েটি প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে আবার সে অন্য একটি ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল। আমার ছেলে এখন বাঁচবে কিনা জানি না। ওই মেয়ের জন্য এর আগেও একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল বিশ্বজিৎ। পুলিস জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।