পারিবারিক ক্ষেত্রে কলহের আশঙ্কা। ঠান্ডা মাথায় চলুন। বিজ্ঞানী, ব্যবসায়ী, সাহিত্যিকদের শুভ সময়। ... বিশদ
গত ৫৭ বছর ধরে জলদাপাড়া জঙ্গলের ভিতরে নৈর্সগিক পরিবেশে থাকা এই বনবাংলোয় অগনিত ভিভিআইপি রাত কাটিয়ে গিয়েছেন। ‘বর্তমান’-এর প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত বরুণ সেনগুপ্ত, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় থেকে জ্যোতি বসু কত যে ভিভিআইপি প্রিয় হলং বনবাংলোয় রাত কাটিয়ে গিয়েছেন তার দীর্ঘ তালিকা গুনে শেষ করা যাবে না। প্রয়াত সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারেরও প্রিয় ছিল এই ঐতিহ্যবাহী বনবাংলোটি। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যও এখানে রাত কাটিয়ে গিয়েছেন।
কাঠের বাংলোটি পুড়ে যাওয়ার শোকে বুধবার মাদারিহাটে পর্যটন ব্যবসায়ীরা একটি শোক মিছিল করেন। তাঁরা কালো ব্যাজ পরেছিলেন। মোমবাতি মিছিলও হয়। জলদাপাড়া লজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ঐতিহ্যবাহী হলং বাংলো পর্যটক ও আমাদের কাছে সন্তানসম ছিল। দেশ-বিদেশের পর্যটকরা জলদাপাড়ায় হাতি ও কার সাফারি করতে এবং হলং বাংলোর থাকতে এখানে ছুটে আসেন। মঙ্গলবার রাতে সব শেষ হয়ে গেল।
পর্যটকদের কাছে হলং বাংলোর আকর্ষণ এমনই ছিল যে বছরের ন’মাস এখানে বুকিং পাওয়া কার্যত দুষ্কর ছিল বলা যায়। এই বাংলো প্রথম দিকে ফরেস্ট রেস্ট হাউস হিসেবে ব্যবহার হতো। তখন পর্যটকদের বাংলোয় থাকার কোনও অনুমতি ছিল না। ১৯৬৭ সালে কাঠের এই বনবাংলোয় বিজলি বাতি ছিল না। জ্বলত লণ্ঠনের টিম টিম আলো। এরপর নয়ের দশকের শুরুতে বাংলো সংস্কারের কাজ শুরু হয়। বনদপ্তর সূত্রে খবর, এই সংস্কারের পরেই হলংয়ে পর্যটকদের থাকার ছাড়পত্র মেলে। এরপর ২০১৪ সালে কাঠের হলং বনবাংলো শীততাপ নিয়ন্ত্রিত করা হয়। এই বাংলোর অদূরেই রয়েছে পোষা হাতিদের থাকার জন্য দেশের সবচেয়ে বড় পিলখানা। এই পিলখানার কুনকি হাতি দেখতে আসেন পর্যটকরা। এছাড়াও জিপসি ও এলিফ্যান্ট সাফারির টানে হলংয়ে পর্যটদের ভিড় বছরভর আছড়ে পড়ে। জঙ্গলে একশৃঙ্গ গণ্ডার, হরিণ, বাইসন, ময়ূর, বিভিন্ন ধরনের পাখি দেখা যায়। বন্যপ্রাণীদের নিয়ে একাধিক আন্তর্জাতিক সেমিনারও হয়েছে হলং বনবাংলোয়। এক রাতের বিধ্বংসী আগুনের লেলিহান শিখা কেড়ে নিল পর্যটকদের প্রিয় হলং বনবাংলোকে। নিজস্ব চিত্র