কিগালি ও ব্রাসিলিয়া, ২২ মার্চ: ইবোলা, জিকার মতো ভাইরাসের সংক্রমণের সাক্ষী আফ্রিকা মহাদেশ। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েছেন নাগরিকরা। সচেতনতা থাকায় ইউরোপের মতো এখানে সংক্রমণ ছড়ায়নি। কিন্তু মহাদেশজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা হাজার পেরতেই বিপদের গন্ধ ছড়িয়েছে সেখানেও। লকডাউন শুরু হয়েছে বিভিন্ন দেশে। মহাদেশের ৫৪টি দেশের মধ্যে ৪১টি দেশে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। সংক্রমণ ছড়ানোর জন্য ইউরোপ থেকে আগত পর্যটকদেরই দায়ী করেছে আফ্রিকার দেশগুলির সরকার। শুক্রবার মহাদেশের ব্যস্ততম বিমানবন্দর, দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে বিদেশিদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইথিওপিয়ান ও দক্ষিণ আফ্রিকান এয়ারওয়েজ আন্তর্জাতিক উড়ান বাতিল করেছে। শনিবার নাইজেরিয়ার রাজধানীতে প্রথম আক্রান্তের খোঁজ মেলার পর আগামী একমাসের জন্য সব আন্তর্জাতিক বিমানের অবতরণ নিষিদ্ধ করেছে সেদেশের সরকার। রোয়ান্ডাতেও আগামী দু’সপ্তাহ অপ্রয়োজনে নাগরিকদের রাস্তায় বেরনোর উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়েছে। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ জন। তা সত্ত্বেও সরকারি-বেসরকারি সব কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিউনিশিয়াতেও লকডাউনের ঘোষণা করেছে সরকার। কার্গোকে বাদ রেখে সকলের জন্য সীমান্ত বন্ধ করেছে উগান্ডা। সোমবার থেকে ইথিওপিয়ায় আগত যাত্রীদের বাধ্যতামূলকভাবে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে। একই সতর্কতা নেওয়া হয়েছে সোমালিয়াতেও। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সচেতনতায় ইউরোপের থেকে অনেকটাই এগিয়ে আফ্রিকার দেশগুলি।
করোনায় প্রকোপ অনেকটা কম লাতিন আমেরিকাতেও। ব্রাজিলে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সেখানে এখনও পর্যন্ত ন’শোর বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। মারা গিয়েছেন অন্তত ১১ জন। কিন্তু আসন্ন শীতের কথা ভেবে আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা মহাদেশেই। নোভেল করোনা ভাইরাস সংক্রমণে ঋতু ও আবহাওয়ার প্রভাব এখনও বিশেষ কিছুই জানতে পারেননি বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু ব্রাজিলের ছ’জন সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ জানাচ্ছেন, অতীতে যে ক’বার দেশে মহামারী দেখা দিয়েছে, সেগুলি সবই শীতকালে। ২০০৯ সালের বিশ্বব্যাপী এইচওয়ানএনওয়ান সোয়াইন ফ্লু মহামারীও তার ব্যতিক্রম হয়নি। শীতে সংক্রমণ বেশি ছড়াতে পারে বলেই তাঁদের আশঙ্কা। ব্রাজিল মূলত নিরক্ষীয় অঞ্চলের দেশ হলেও জুন-জুলাই মাসে দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব ব্রাজিলের বেশ কিছু অংশে গড় তাপমাত্রা থাকে ৫-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এপ্রিল থেকেই তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। আর্জেন্তিনা এবং চিলিতে শীতকালে আবহাওয়া আরও অবনতি হয়। মেসি-মারাদোনার দেশে এখনও পর্যন্ত ১২৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। শুক্রবার থেকে সেখানে লকডাউন চলছে।