কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত উল্টোডাঙা ও সল্টলেকে দুটি বেআইনি কল সেন্টারে তল্লাশি চালায় ইডি। বাজেয়াপ্ত করা হয় একাধিক মোবাইল ফোন, নগদ এবং ব্যাঙ্ক লেনদেনের নথি। বেআইনি কল সেন্টারের বিরুদ্ধে ইডি রাজ্যে এই প্রথম অভিযান চালাল।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কাছে খবর আসে, কলকাতার একাধিক জায়গায় ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে কল সেন্টার। টেলিকম দপ্তর সহ ভারত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রকের অনুমতি ছাড়াই এগুলি চলছে। এখান থেকে ফোন যাচ্ছে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। বিদেশি নাগরিকদের বিভিন্ন সার্ভিস দেওয়ার নাম করে ঠকাচ্ছে তারা। ফলে ভারত সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে এবং দেশের নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। অথচ এই বেআইনি কল সেন্টার নিয়ে নীরব পুলিস। তাই বিষয়টি ইডিকে জানানো হয়। বিধাননগরের সেক্টর ফাইভ এবং উল্টোডাঙা, মানিকতলা, কড়েয়া, তিলজলা, যাদবপুর সহ কয়েকটি নির্দিষ্ট ঠিকানায় এই কল সেন্টারগুলি চলছে।
ইডি’র আধিকারিকরা উল্টোডাঙা লাগোয়া সিআইটি রোড এবং সেক্টর ফাইভের দুটি অফিসে চল্লাশি চালান। জানা গিয়েছে, এখান থেকে কল যাচ্ছে আমেরিকায়। সেখানকার নাগরিকদের ‘টেক সাপোর্ট’ দেওয়ার নাম করে ফোন করা হচ্ছে। কারও কাছে ফোন আসছে পুরস্কার জিতেছেন বলে, কেউ বা ফোন পাচ্ছেন কোনও প্রোডাক্টের অফার নিয়ে। তাদের ফাঁদে পা দিলেই পাঠানো হচ্ছে লিঙ্ক। আর তাতে ক্লিক করলেই ব্যাঙ্কের যাবতীয় তথ্য চলে যাচ্ছে প্রতারকদের কাছে। এরপর বিদেশি নাগরিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করে দেওয়া হচ্ছে।
এদিন দুপুরে দু’টি অফিসে হানা দেন ইডি’র অফিসাররা। কারণ ওই সময় সাধারণত আমেরিকা বা লন্ডনে কল করা হয়। সেখানে গিয়ে তাঁরা দেখেন, একাধিক যুবক-যুবতী সেখানে কাজ করছেন। রয়েছে অসংখ্য ফোন। বিভিন্ন নম্বর থেকে বিদেশে কল করা হচ্ছে। ইডি আধিকারিকরা সেখান থেকে বিভিন্ন কাগজপত্র ও অন্যান্য সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করেন। তা পরীক্ষার পর দেখা যাচ্ছে, বিদেশ থেকে তাদের একাধিক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে। ওই টাকা দ্রুত তুলেও নেওয়া হয়েছে। অ্যাকাউন্টের মালিকের খোঁজ করতে গিয়ে ইডি জেনেছে, এর মধ্যে বেশ কিছু অ্যাকাউন্ট ভাড়ায় নেওয়া হয়েছে। প্রতারণার টাকা দুবাই ও বাংলাদেশের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টেও গিয়েছে।
ইডি প্রাথমিকভাবে জেনেছে, এই বেআইনি কল সেন্টারগুলির মালিকদের একটা বড় অংশ জঙ্গি গোষ্ঠীর প্রতি সহানুভুতিশীল এবং হাওলা ব্যবসায়ী। তাদের মাধ্যমে টাকা জঙ্গিদের তহবিলে যাচ্ছে। এর নথি জোগাড়ের কাজ চলছে। অফিসারদের সন্দেহ, এই কল সেন্টারগুলিকে কাজে লাগিয়ে জঙ্গিরা নিজেদের মধ্যে তথ্য আদানপ্রদান করে। এর প্রমাণ জোগাড়ের কাজ শুরু হয়েছে। তাই পিএমএল অ্যাক্টে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে ইডি। অফিসাররা জেনেছেন, বেআইনি কল সেন্টারগুলির মালিকদের সঙ্গে কলকাতা ও বিধাননগরের পুলিস অফিসারদের একাংশের যোগাযোগ রয়েছে। তাঁরা মাসোহারার বিনিময়ে কল সেন্টারগুলি চালাতে সাহায্য করছেন বলে অভিযোগ।