কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ও মানসিক কষ্ট। দূর ভ্রমণের সুযোগ। অর্থ প্রাপ্তির যোগ। যে কোনও ... বিশদ
হিমাচল প্রদেশের সুন্দর শহর সাংলা। দিনে দিনে শহর হয়ে উঠেছে পর্যটনের উপর নির্ভর করে। কিন্নর জেলার এই পর্যটন স্থলের উচ্চতা ২ হাজার ৬২১ মিটার। বছরের ছ’মাস বরফের তলায় নিজেকে আত্মগোপন করে রাখে সাংলা। জেগে ওঠে বসন্তে— এপ্রিলে। বাপসা নদীর উপত্যকায় এই শহর। সাংলা ভ্যালি নামে পরিচিত হলেও স্থানীয়দের কাছে বাপসা ভ্যালি। নদী, পাহাড় ও পাইনের সংমিশ্রণে ফ্রেমে আঁটা ছবি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে আধুনিক সূযোগ সুবিধা সবই বিদ্যমান এখানে। করছাম, রকছাম, ছিটকুল এরকম গালভরা অনেক নাম জড়িয়ে আছে সাংলার সঙ্গে। শুধু নামে নয়, প্রতিটি জায়গাই স্ব সৌন্দর্যে স্বতন্ত্র। হিন্দুস্তান-তিব্বত রাজপথে এক ছোট্ট জায়গা করছাম। এখানে দাঁড়িয়ে উপভোগ করা যায় প্রকৃতির নিঃশব্দ সৌন্দর্যকে। বাতাসের শানদার গতি নাক, কান কেটে দিয়ে যায় যেন। তবুও ভালো লাগে। কালো রাস্তার পাশে গভীর খাদ নেমে গেছে শতদ্রু কাছে।
এখান থেকে সাংলার দূরত্ব ১৭ কিমি।
কিন্নর জেলা আপেলের জন্য বিখ্যাত। জেলার অন্যান্য জায়গার মতো সাংলায় আপেল বাগান আছে হেক্টরের পর হেক্টর। সাংলার আপেল স্বাদে গুণে ভরপুর। আপেলের দেখা মেলে আগস্টে।
এখন সাংলায় কী দেখবেন? এক কথায় প্রকৃতি। প্রকৃতিই এখানে এক এবং অদ্বিতীয়। পায়ে পায়ে ঘুরে নেওয়া যায় প্রাচীন ঐতিহাসিক কামরু গ্রাম। এ গ্রামের মুখ্য আকর্ষণ কাঠের তৈরি দুর্গ। ‘টাওয়ার’-এর মতো এই দুর্গ পাঁচতলা। বুশায়ার রাজত্ব কালে এই দুর্গ তৈরি হয় বলে মনে করা হয়। এই দুর্গে কোটি দেবতার স্থান। সর্বোচ্চ তলে রয়েছেন দেবী কামাখ্যা। সাংলা থেকে ২ কিমি দূরে এই দুর্গ ছাড়াও দেখবেন পঞ্চদশ শতাব্দীর বদ্রীনাথের মন্দির। দেখবেন বেরীনাগের মন্দির।
সাংলা থেকে ২৮ কিমি দূরে ভারত-চীন সীমান্তে শেষ গ্রাম ছিটকুল। অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সাজানো । চারপাশে পাহাড় দিয়ে ঘেরা ৩ হাজার ৪৫০ মিটার উচ্চতার ছিটকুল যেন এক ঘুমন্ত নগরী। পাহাড়ের কোল দিয়ে কুলকুল করে বহমান বাপসা নদী। নদীর দু’কুলে পাইনের ঘন সবুজ বিস্তার। নীল আকাশের গায়ে বরফ মাখা হিমালয় ছিটকুলকে অনন্য করে তোলে। হিম বাতাসের কামড়ে বেশিক্ষণ দাঁড়ানো দায়। সুন্দর প্রকৃতিকে ফ্রেমবন্দি করতে করতে মন চাইবে চায়ের উষ্ণতা। ছিটকুল থেকে ফেরার পথে একটু দাঁড়াতে পারেন আপেল বাগান ঘেরা রকছামে। সুন্দর লাগবেই। ঠান্ডায় জবুথবু হলেও স্মৃতিময় হয়ে থাকবে সাংলা।
পুনশ্চঃ শিমলা থেকে সাংলার বাস সার্ভিস আছে। সাংলা থেকে ছিটকুলেরও বাস চলে। তবে এ পথে সঙ্গে গাড়ি রাখা ভালো।
তাপস কাঁড়ার