বিদ্যার্থীদের উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে মধ্যম ফল আশা করা যায়, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। ব্যবসাতে যুক্ত ... বিশদ
অল ইন্ডিয়া ডোমেস্টিক কাউন্সিল এবং অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট কাউন্সিল কারিগরদের জন্য দেড় হাজার টাকা করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। তবু সঙ্কট পুরোপুরি কাটবে না। বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক টগরচন্দ্র পোদ্দারের কথায়, সরকার ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের জন্য আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। কিন্তু কারিগরদের জন্য যাতে ওই খাত থেকেই সরাসরি আর্থিক সুরাহার ব্যবস্থা করা হয়, তার জন্য আমরা আবেদন জানিয়েছি।
কী পরিস্থিতি দেশজুড়ে? মুম্বইয়ে বেঙ্গল স্বর্ণশিল্পী কল্যাণ সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক কালীদাস সিংহরায়ের কথায়, লকডাউনে মূলত দু’টি সমস্যা। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং খাবার জোগাড় করা। নোটবন্দি পরবর্তী সময়ে এবং সোনায় এক্সাইজ ডিউটি বৃদ্ধিতে কারিগররা অনেকেই কাজ ছেড়ে চলে গিয়েছে। পাশাপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগে এবং সঙ্ঘের তরফে আমরা প্রায় ১ লক্ষ ২৭ হাজার প্লেট খাবারের ব্যবস্থা করেছি। ইতিমধ্যেই ২১ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। এই প্রচেষ্টা চলবে, হয়তো তা কোটি টাকায় পৌঁছবে। মুম্বইয়ের জুয়েলার সংস্থাগুলিও সাধ্যমতো সাহায্য করছে। কিন্তু, আসল সমস্যা এখানে নয়। যাঁরা কাজ করে মাসে দশ হাজার টাকা রোজগার করতেন, তাঁরা হয়তো নিজেদের জন্য হাজার তিনেক টাকা খাওয়া খরচ হিসেবে রেখে বাকি টাকা দেশের বাড়িতে পাঠাতেন সংসার চালানোর জন্য। এখন তো কাজ বন্ধ। সেই হাহাকার থেকে কারিগরদের পরিবারকে বাঁচাবে কে?
চেন্নাইয়ে যে কারিগররা রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে থেকে ১২৯ জন স্বর্ণ ব্যবসায়ীর অধীনে থাকা মোট ৬৭১ জন কারিগর তামিলনাড়ু সরকারের কাছে আবেদন করেছেন রেশন দেওয়ার জন্য। চেন্নাইয়ের বাঙালি গোল্ডস্মিথ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমজাদ আলি বলেন, আমরাও ব্যক্তিগত উদ্যোগে এবং সংগঠনের তরফে কারিগরদের জন্য রেশনের ব্যবস্থা করেছি। তবে এখন যাঁরা এখানে আছেন, তাঁরা হয়তো খাওয়ার কষ্ট পাচ্ছেন না। কিন্তু একজন কারিগরের মাসের রোজগারের দিকে তাকিয়ে থাকেন পরিবারপিছু অন্তত পাঁচজন সদস্য। তাঁদের সঙ্কট কাটবে কী করে? করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত সব ক্ষেত্রই। ফলে সোনার কারিগরদের পাশে অন্য কোনও সংস্থা দাঁড়াবে, এটা আশা করা অন্যায়। স্বর্ণ ব্যবসায়ী থেকে কারিগর পর্যন্ত যাঁরা শিল্পের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে জড়িয়ে আছেন, তাঁদের যেমন এগিয়ে আসতে হবে, তেমনই সরকারও যাতে আর্থিকভাবে এঁদের পাশে থাকে, এটাই আমাদের কাম্য।
এদিকে দিল্লিতে করোলবাগ এলাকায় বিটনপুরা, দেবনগরে হাজার হাজার কারিগর আটকে রয়েছেন। দিল্লি স্বর্ণকার সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক বিভাস মাইতি এবং সভাপতি রবীন্দ্রনাথ হাইত জানিয়েছেন, তাঁরা যেমন সংগঠনের তরফে রেশনের ব্যবস্থা করেছেন, তেমনই এলাকার ক্লাব ও অন্যান্য সংগঠনও তাঁদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। ডোমেস্টিক কাউন্সিল এবং এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিলের তরফে এখান থেকে ২ হাজার ৭০০ কারিগরের তালিকা পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, এরাজ্যে টগরবাবুরাও এলাকাভিত্তিক সংঠনগুলিকে কারিগরদের জন্য এগিয়ে আসতে আহ্বান জানিয়েছেন। টগরবাবু জানান, ইতিমধ্যেই কোচবিহার, দিনহাটা, বেলডাঙা, ভগবানগোলা, দুর্গাপুর, বাউড়িয়া, শান্তিপুর, হরিণঘাটা সহ বিভিন্ন জায়গায় কারিগরদের শুকনো রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে।