নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: লক্ষ্যে সফল বোর্ড সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি। তিনি চেয়েছিলেন, টেস্ট ক্রিকেটে জনপ্রিয়তা ফেরাতে। তাঁর ইচ্ছাতেই আগামী ২২-২৬ নভেম্বর ইডেনে গোলাপি বলে ঐতিহাসিক দিন-রাতের টেস্টে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলবে বিরাট কোহলির ‘টিম ইন্ডিয়া’। দেশের মটিতে আগে কখনও দিন-রাতের টেস্ট হয়নি। ফলে ক্রিকেটপ্রেমীরা অনেকেই মাঠে বসে খেলা দেখতে চাইছেন। তাই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে টিকিটের চাহিদা। ইডেনে এখন ৬৭ হাজার দর্শক খেলা দেখতে পারবেন। সি.বি প্রথম ধাপে অন লাইনের কোটার টিকিট ছেড়েছিল। কিন্তু ম্যাচের প্রথম তিন দিনের টিকিট আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। যাঁরা অনলাইনে টিকিট কাটতে পারেননি, তাঁরা কাউন্টার সেলের অপেক্ষায় রয়েছেন। কিন্তু সিএবি’র পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হচ্ছে কাউন্টার সেলের ব্যাপারে। তা নিয়ে ক্ষোভ জমছে ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে। সেই ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটল শুক্রবার। বেশ কয়কশো দিন-রাতের টেস্ট ম্যাচের টিকিট প্রত্যাশী ইডেনের বাইরে বিক্ষোভও দেখালেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অনেকেই সকাল থেকে লাইন দিচ্ছেন মহমেডান স্পোর্টিং মাঠের সামনে। আইপিএলের সময় এখান থেকেই টিকিট বিক্রি হয়। টিকিট প্রত্যাশীদের বিক্ষোভের পর বিকেলে সিএবি কর্তারা ঠিক করেছিলেন, শনিবার সকাল থেকেই ইডেনের চার নম্বর গেটের সামনে থেকে কাউন্টার সেল শুরু করা হবে। কিন্তু প্রথম তিন দিনের টিকিট প্রায় নিঃশেষিত। তাই পুরো টিকিটের হিসাব না মিলিয়ে আপাতত কাউন্টার সেলের ঝুঁকি নিতে চাইছেন বঙ্গীয় ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থার কর্তারা। কবে থেকে কাউন্টার সেল শুরু হবে, তাও নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না তাঁরা। তবে কাউন্টার সেল শুরু হলেও, প্রথম তিন দিনের টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই শোনা যাচ্ছে। চতুর্থ ও পঞ্চম দিনের কিছু টিকিট হয়তো শেষ মুহূর্তে বিক্রি করা হতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে,ভারতের এই শক্তিশালী বোলিংয়ের সামনে গোলাপি বলে বাংলাদেশের লড়াই কি আদৌ তিন দিনের বেশি স্থায়ী হবে?
হাতে সময় কম। অনেক কাজও বাকি। তাই বোর্ড সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি শুক্রবার সিএবি’তে ঢুকে কর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকও করেন। দিন-রাতের টেস্টকে স্মরণীয় করে রাখতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে সিএবি। সংস্থার সচিব অভিষেক ডালিমায় জানিয়েছেন, ‘ম্যাচ শুরুর আগে দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানোর জন্য আর্মি ব্যান্ডের সঙ্গে কথা চলছে।’
চমক আরও থাকছে। দু’টি গোলাপি ম্যাচ বল নিয়ে আকাশ থেকে নেমে আসবে প্যারাট্রুপার্স। বল তুলে দেওয়া হবে দুই দলের অধিনায়কের হাতে। গোলাপি বেলুন উড়বে। মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে একটি টক শো’য়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ২০০১ সালে ইডেনে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধ ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ী দলের তারকাদের নিয়ে হবে সেই অনুষ্ঠান। শচীন তেন্ডুলকর, সৌরভ গাঙ্গুলি, রাহুল দ্রাবিড়, ভি ভি এস লক্ষ্মণ ও অনিল কুম্বলে প্যানেলে থাকবে বলে জানিয়েছেন সিএবি সচিব।
চা পানের বিরতিতে ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটারদের গলফ কার্টে করিয়ে মাঠ প্রদক্ষিণ করানো হবে। তখন ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজবে। আর থাকছে প্রথম দিনের খেলার শেষে ২০০০ সালে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে আয়োজিত প্রথম টেস্টে খেলা দুই দলের ক্রিকেটারদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে। যেখানে হাজির থাকবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।