পারিবারিক ক্ষেত্রে কলহের আশঙ্কা। ঠান্ডা মাথায় চলুন। বিজ্ঞানী, ব্যবসায়ী, সাহিত্যিকদের শুভ সময়। ... বিশদ
খয়রাশোল ব্লকের নাকরাকোন্দার ভাদুলিয়াতে বাড়ি বিশ্বজিতের। ছোট থেকেই হাঁটতে পারে না। হাত দু’টিও তেমন সচল নয়। কথা বললেও জড়িয়ে আসে। স্থানীয় একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। বাড়ির লোকজনের চাষবাস করে দিন চলে। অভাবী পরিবারের ছেলে হলেও তার মধ্যে রয়েছে নিখাদ আবেগ। আর সেই আবেগ মমতাকে ঘিরেই। তৃণমূলের নেতারা এলাকার যত না খবর রাখেন তার থেকে অনেক বেশি খবর রাখে বিশ্বজিৎ। সে সারাক্ষণ সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখ রেখে বসে থাকে। এলাকার সব খোঁজখবর রাখে। সঙ্গে মমতারও। মমতা অন্তপ্রাণ। মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে কোনও বিরূপ মন্তব্য, সমালোচনা সহ্য করে না বিশ্বজিৎ।
ভোটের সময় মমতা বীরভূমে বেশ কয়েকটি সভা করেছেন। সেগুলিতে যাওয়ার জন্য বায়না ধরেছিল বিশ্বজিৎ। এখনও এলাকায় শাসকদলের বড় নেতা এলে তার বায়না থাকে, মমতার সভায় নিয়ে যেতে হবে। বাড়ির লোকজন না বললে রক্ষে নেই! খাওয়া দাওয়া টোটালি বন্ধ। মনমরা হয়ে বসে থাকবে। বাড়ি থেকে বেরোলেই গলায় ঝুলবে তৃণমূলের উত্তরীয়। মাথায় সবুজ টুপি। তার আচরণ দেখে স্থানীয় তৃণমূল নেতারাও অবাক হয়ে যান। বিশ্বজিতের মা সুচিত্রা ঘোষ বলছিলেন, ‘ও তখন খুব ছোট। নানা পতাকা নিয়ে খেলা করত। মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেখে তখন বাবাকে বলত, এই রকম ছবি আরও এনে দিতে হবে। সেই থেকেই ওর দিদির প্রতি আবেগ জন্মায়। এখন তো একেবারে দলের নেতাদের মতো হয়ে গিয়েছে।’
বিশ্বজিতের বাড়িকে একঝলক দেখলে মনে হবে তৃণমূলের পার্টি অফিস। চারপাশের দেওয়ালে মুখ্যমন্ত্রী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সাঁটানো। সেগুলি সাঁটিয়েছে বিশ্বজিৎই। সুচিত্রাদেবী বলছিলেন, ‘আশপাশে মিটিং হচ্ছে শুনলেই বায়না ধরে নিয়ে যেতে হবে। নিজে হাঁটতে পারেনা। হুইল চেয়ারে করে দাদু ওকে সব জায়গায় নিয়ে যান। আর যদি নিয়ে যাবে না বলা হয়, সেদিন খাওয়া দাওয়া বন্ধ! সর্বক্ষণ ফোন ঘেঁটে ওই সবই করে। শুধু বলে আমি দিদির সৈনিক।’ বিশ্বজিতের সঙ্গে কথা বলতে যেতেই ভাঙা গলায় সম্বোধন—‘জয় বাংলা। দিদিকে ভালোবাসি।’ স্থানীয় তৃণমূল নেতা উজ্জ্বল কাদেরির কথায়, ‘ও সবার সঙ্গে ছবি তোলে। সোশ্যাল মিডিয়াতে তা নিয়ে নানা পোস্ট করে। শারীরিক প্রতিবদ্ধকতা থাকলেও ওর যে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি কতটা আবেগ, তা ভাষায় প্রকাশ কর যাবে না।’